বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম :
(মা) ওমা তুই আমারে ছেড়ে আছিস আমি তাই হয়েছি লক্ষ্মীছাড়া
(মা) ওমা তুই আমারে ছেড়ে আছিস আমি তাই হয়েছি লক্ষ্মীছাড়া
ও তোর কৃপা বিনা শক্তিময়ী শুকিয়ে গেল
ভক্তিচারা॥
ওমা তুই আশ্রয় দিলি না তাই, আমি যা পাই
তা পথে হারাই
তোর রসময় ভুবন আমার শ্মশান হল ওমা তারা॥
আজ আনন্দ যমুনা ফেলে এসেছি তাই যমের
দ্বারে
ওমা জীবনে যা পেলাম না তা মরণ যদি দিতে
পারে।
মাগো ওমা তত বাড়ে বুকের জ্বালা, পাই যত
যশ খ্যাতির মালা
রাজপ্রসাদে শুয়ে মাগো শান্তি কি পায়
মাতৃহারা॥
- ভাবসন্ধান: মা তারার (কালীর অপর নাম) অভিমানী সন্তানের আকুতি
এই গানে মাতা-সন্তানের বাৎসল্য রসে উপস্থাপিত হয়েছে। শিশু যেমন সব ভুলে গিয়ে
শুধু মায়ের সান্নিধ্যকে কামনা করে। তেমনি এই গানের ভক্তের কাছে পার্থিব যাওয়া
পাওয়ার চেয়ে মাতৃ-সান্নিধ্যলাভের আকাঙক্ষাই প্রধান হয়ে উঠেছে।
অভিমানী সন্তান মনে করেন, মাতৃরূপিণী তারা তাঁকে ছেড়ে আছেন বলেই তিনি
লক্ষ্মীছাড়া (দুর্ভাগা) হয়ে গেছেন। কারণ মায়ের কৃপা ছাড়া শক্তিময়ীর ভক্তির
বৃক্ষশিশু (দেবী-ভক্তির নবীন দশা) শুকিয়ে গেছে। দেবী আশ্রয় দেন নি বলেই- এই
ভক্ত দিশাহীন হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছেন। দেবীর এই রসময় ভুবনে তাঁকে কাছে না
পেয়ে, ভক্তের জগৎ হয়ে গেছে প্রাণহীন শ্মশানের মতো।
জগতের আনন্দযজ্ঞে প্লাবিত দেবীর রসময় জগৎ। দেবীর আশ্রয় না পেয়ে অভিমানী ভক্ত সে
জগৎ ছেড়ে যাপিত জীবনের সকল দুর্ভোগ শেষে এই সান্ত্বনা এবং আশা নিয়ে মৃত্যর
দ্বারে এসেছেন- যদি পরকালে তিনি মায়ের করুণা লাভ করতে পারেন। পার্থিব জীবনের
যশ-খ্যাতির মালা, রাজভবনের সুখদায়ক শয্যা থেকেও মাতৃহারার সন্তানের বেদনা
প্রশমিত হয় না। এই বেদনা প্রশমনের একমাত্র নিরাময়ক মাতৃরূপিণী তারার সান্নিধ্য।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা
যায় না। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৮) মাসে এইচএমভি রেকর্ড
কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এ সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১
বৎসর ৩ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান
সংখ্যা ৭৯২
- রেকর্ড:
এইচএমভি। সেপ্টেম্বর ১৯৪১ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৮)। এন ২৭১৮২।
শিল্পী: মৃণালকান্তি ঘোষ।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নিখিলরঞ্জন নাথ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, তেইশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক ১৪০৯
নভেম্বর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ] দ্বিতীয় গান।
[নমুনা]
- সুরকার:
কমল দাশগুপ্ত
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনতান হিন্দুধর্ম, শাক্ত, তারা (কালী)।
অভিমান
- সুরাঙ্গ: ভজনাঙ্গ
- তাল:
দাদরা
- গ্রহস্বর: পদা