বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
বসিয়া বিজনে কেন একা মনে
রাগ: ইমন মিশ্র, তাল: কাহার্বা
বসিয়া বিজনে
কেন একা মনে
পানিয়া ভরণে
চলো লো গোরী।
চলো জলে চলো কাঁদে বনতল
ডাকে ছলছল
জল-লহরি॥
দিবা চ'লে যায়
বলাকা-পাখায়
বিহগের বুকে
বিহগী লুকায়।
কেঁদে চখা-চখি
মাগিছে বিদায়
বারোয়াঁর সুরে
ঝুরে বাঁশরি॥
ওগো বে-দরদি ও
রাঙা পায়ে
মালা হয়ে কে গো গেল জড়ায়ে।
তব সাথে কবি
পড়িল দায়ে
পায়ে রাখি তারে না গলে
পরি॥
- ভাবার্থ: কোনো এক বিপ্রলব্ধার (অভিসারে ব্যর্থ নায়িকা) অভিমান বা
বেদনার সমব্যথী কবির আত্মকথা। পারশ্য গজলে দেখা যায়, কবি দর্শক হিসেবে কোনো একটি
বিষয়কে উপস্থাপন করেন। বিষয়ের সঙ্কটকালে যখন কবি নিজেই কাহিনিতে ঢুকে পড়েন এবং
সমস্যা সমাধনের পথ অন্বেষণ করেন।
এই গানের স্থায়ীতে উপস্থাপন করা হয়েছে- জল নিতে আসা কোনো এক গোরীকে (সুন্দরী
অর্থে)। এই গোরী জল নিতে এসে নির্জনে একা বসে ভাবছে। তা দেখে যেন উপদেশের সুরে
বলছেন- হে সুন্দরী (গোরী) এই নির্জন কেন বসে আছ? তাড়াতড়ি কলসীতে পানি ভরে ঘরে
ফিরে যাও। তোমাকে না দেখার বেদনায় ব্যথায় বনতল কাঁদছে, ঝরনার জললহরীও তোমাকে
ডাকছে। দিনের শেষে, ঘরে ফেরা উড়ন্ত বলাকার পাখা থেকে দিনের শেষ আলো মুছে যাচ্ছে,
ঘরে ফেরা পক্ষী-দন্পতিরা রাত্রিযাপনের উদ্যোগে ব্যাপ্ত। দিবা-রাত্রি সন্ধিক্ষণে
এসে চখাচখী দিনকে যেন বাঁরোয়া রাগের করুণ সুরে বিদায় জানাচ্ছে।
ওপো নিষ্ঠুর, কোন প্রেমিক সুন্দরীর পায়ে প্রেমের মালা হয়ে জড়ায়ে গেল। যার
প্রত্যাশায় গোরী বসে আছে এই নির্জনে। এসব দেখে কবিও কাতর। এখন কবি কি করবেন- সে
বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্থ। তিনি কি এই সুন্দরীর প্রেমের মালাকে অবহলায় পায়ে ঠেলে
দেবেন, না কি পরমানন্দে সুন্দরীর প্রেমমালাকে গলায় পড়বেন!?
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় (ফেব্রুয়ারি, ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ) গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৭ বৎসর ৯ মাস।
- পত্রিকা:
কল্লোল। ফাল্গুন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ (ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ)
- গ্রন্থ
-
বুলবুল
- প্রথম সংস্করণ।
নভেম্বর ১৯২৮। কার্তিক ১৩৩৫।
গান-৩। ইমন-মিশ্র-গজল-কাহারবা।
- নজরুল-রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ফাল্গুন ১৪১৩। ফেব্রুয়ারি ২০০৭। বুলবুল।
গান ৩। ইমন-মিশ্র-গজল-কাহারবা। পৃষ্ঠা: ১৫২-১৫৩]
-
নজরুল-গীতিকা
- প্রথম সংস্করণ। সেপ্টেম্বর ১৯৩০। ভাদ্র ১৩৩৭।
ইমন মিশ্র-কাহারবা। গজল। ১২। পৃষ্ঠা: ৬৮।
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা
ফাল্গুন ১৪১৩/মার্চ ২০০৭।] নজরুল গীতিকা। ৫৭। গজল। ইমন-মিশ্র-গজল-কাহারবা। পৃষ্ঠা:
২০৯-২১০]
- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। তৃতীয়
সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান সংখ্যা ৯৭২। পৃষ্ঠা:
২৯৮-২৯৯]
- রেকরড:
এইচএমভি। অক্টোবর ১৯২৯ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৩৫)। পি- ১১৬৩৮। শিল্পী: কে
মল্লিক।
সুরকার: নজরুল ইসলাম
এর জুড়ি গান ছিল-পরদেশী বঁধুয়া, এলে কি এতদিনে [তথ্য]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
-
আহসান মুর্শেদ [নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি,
তেত্রিশতম খণ্ড, (নজরুল ইন্সটিটিউট, আষাঢ় ১৪১৭। জুন ২০১০)। ২৫ সংখ্যক
গান। রেকর্ডে কে মল্লিকের-এর গাওয়া সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে। পৃষ্ঠা:
৮৬-৮৮]
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রেম
- সুরাঙ্গ: গজলাঙ্গ
- রাগ:
ইমন
মিশ্র
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: সরা