বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম:
নীরব রজনী দেখো
মগ্ন জোছনায়
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী,
কার্তিক ১৪১২)-এর
পাঠ:
নাট্যগীতি (ভগ্নহৃদয়) পর্যায়:
২।
নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়।
ধীরে ধীরে, অতি ধীরে, অতি ধীরে গাও গো
॥
ঘুমঘোরময় গান বিভাবরী গায়-
রজনীর কণ্ঠ-সাথে সুকণ্ঠ মিলাও গো॥
নিশার কুহকবলে নীরবতাসিন্ধুতলে
মগ্ন হয়ে ঘুমাইছে বিশ্বচরাচর-
প্রশান্ত সাগরে হেন তরঙ্গ না তুলে যেন
অধীর উচ্ছ্বাসময় সঙ্গীতের স্বর।
তটিনী কি শান্ত আছে-ঘুমাইয়া পড়িয়াছে
বাতাসের মৃদুহস্ত-পরশে এমনি
ভুলে যদি ঘুমে ঘুমে তটের চরণ চুমে
সে চুম্বনধ্বনি শুনে চমকে আপনি।
তাই
বলি, অতি ধীরে অতি ধীরে গাও গো-
রজনীর কণ্ঠ-সাথে সুকণ্ঠ মিলাও গো॥
-
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় নি।
-
পাঠভেদ
- ভাবসন্ধান:
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক. রচনাকাল ও স্থান:
১২৮৫ বঙ্গাব্দ। আহমেদাবাদ।
রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ১৭ বৎসর।
উল্লেখ্য,
রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ
ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথকে বিলাতে নিয়ে যাওয়া উদ্যোগ নিলে- দেবেন্দ্রনাথ তাতে
সম্মতি দেন। রবীন্দ্রনাথ বিলেতযাত্রার পূর্বে সত্যেন্দ্রনাথের সাথে
আহমেদাবাদে আসেন ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসের দিকে। উল্লেখ্য ১৮৭৮
খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুলাই তারিখে বেঙ্গল সরকারের সচিবের কাছে, রবীন্দ্রনাথ
আইসিএস পরীক্ষার জন্য বয়সের প্রমাণপত্র পাওয়ার আবেদন করেছিলেন। ২০ জুলাই
তারিখে বেঙ্গল সরকার তাঁর সার্টিফিকেট (certificate of
my age) মঞ্জুর করে। প্রশান্তকুমার পালের
রবিজীবনী দ্বিতীয় খণ্ডের ৩ পৃষ্ঠা (মে ২০০৬) থেকে জানা যায় রবীন্দ্রনাথের
আহমেবাদের উদ্দেশ্য যাত্রা করেছিলেন ১ জ্যৈষ্ঠ [মঙ্গলবার ১৪ মে] তারিখে।
উল্লেখ্য সত্যেন্দ্রনাথ
অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ২৭ এপ্রিল ১৮৬৫
খ্রিষ্টাব্দে (১২৭২ বঙ্গাব্দ) আহমেদাবাদে। কর্মজীবনের সূত্রে তিনি
বিভিন্নস্থানে বদলি হয়ে ১৯ এপ্রিল ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে (৮ বৈশাখ ১২৮৩
বঙ্গাব্দ) আবার আহমেদাবাদে আসেন। ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশনস্ জজ (অস্থায়ী)
হিসাবে ইনি বেশ কিছুদিন এখানে কাটান। তাঁর সরকারী বাসস্থান ছিল শাহিবাগ
নামক রাজপ্রাসাদে। রবীন্দ্রনাথ যখন আহমেদাবাদে আসেন তখন তাঁর বৌঠাকরুন
জ্ঞানদানন্দিনী তাঁর সন্তানদের (সুরেন্দ্রনাথ, ইন্দিরাদেবী ও কবীন্দ্রকে)
ইংল্যাণ্ডে ছিলেন। এই সময়ে তিনি কয়েকটি গান রচনা করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে
রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতি গ্রন্থে লিখেছেন- 'এ শাহিবাগ-প্রাসাদের
চূড়ার উপরকার একটি ছোটো ঘরে আমার আশ্রয় ছিল। কেবল একটি চাকভরা বোলতার দল
আমার এই ঘরের অংশী। রাত্রে আমি সেই নির্জন ঘরে শুইতাম- এক-একদিন অন্ধকারে
দুই-একটা বোলতা চাক হইতে আমার বিছানায় উপর আসিয়া পড়িত— যখন পাশ ফিরিতাম তখন
তাহারাও প্রীত হইত না এবং আমার পক্ষেও তাহা তীক্ষ্মভাবে অপ্রীতিকর হইত।
শুক্লপক্ষের গভীর রাত্রে সেই নদীর দিকের প্রকাণ্ড ছাদটাতে একলা ঘুরিয়া
ঘুরিয়া বেড়ানো আমার আর-একটা উপসর্গ ছিল। এই ছাদের উপর নিশাচর্য করিবার সময়ই
আমার নিজের সুর দেওয়া সর্বপ্রথম গানগুলি রচনা করিয়াছিলাম। তাহার মধ্যে 'বলি
ও আমার গোলাপবালা' গানটি এখনো আমার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে আসন রাখিয়াছে। '
রবীন্দ্ররচনাবলী সপ্তদশ খণ্ডে
(বিশ্বভারতী, ভাদ্র ১৩১৯৩) গৃহীত জীবনস্মৃতি গ্রন্থে ৩৫৮ পৃষ্ঠার
পাদটীকা থেকে জানা যায়- সর্বপ্রথম গান: 'নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়'।
- খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
- গ্রন্থ:
-
কাব্যগ্রন্থাবলী
[আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রেস, ১৩০৩।
গান।
মিশ্র -আড়াঠেকা।
পৃষ্ঠা ৪৩৮][নমুনা]
-
গানের বহি ও বাল্মীকি প্রতিভা
(আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র,
১৩০০)।
মিশ্র -আড়াঠেকা।
পৃষ্ঠা: ১৩৫-১৩৬। [নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
গীতবিতান
- অখণ্ড
সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। নাট্যগীতি
(ভগ্নহৃদয়) পর্যায়ের ২ সংখ্যক গান।
-
রবিচ্ছায়া
[সাধারণ
ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, ১২৯২ বঙ্গাব্দ। বিবিধ ১। মিশ্র-আড়াঠেকা। পৃষ্ঠা:
১] [নমুনা]
-
রবীন্দ্রগ্রন্থাবলী (হিতবাদী ১৩১১)। মিশ্র-আড়াঠেকা। গান ১৩১। পৃষ্ঠা: ৯৯৬
[নমুনা
- স্বরলিপি-গীতি-মালা, তৃতীয় খণ্ড [তৃতীয় সংস্করণ, ডোয়ার্কিন এন্ড সন্ লিঃ, ১৩৪৮]
-
স্বরবিতান বিংশ (২০) খণ্ডের পরিশিষ্ট এর প্রথম গান। পৃষ্ঠা ৯-১১।
[নমুনা:
মূল স্বরলিপি,
সুরান্তর]
-
পত্রিকা:
- ভারতী (১২৮৭ ফাল্গুন)।ভগ্নহৃদয়, ষষ্ঠ সর্গ। কবি'র গান। পৃষ্ঠা: ৫০৮।
[নমুনা]
- গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
-
সুরকার:
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- স্বরলিপিকার:
-
মূল স্বরলিপি:
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[জ্যোতিরিন্দ্রনাথ
ঠাকুর –কর্তৃক
সঙ্কলিত-
স্বরলিপি-গীতি-মালা
থেকে
স্বরবিতান-এ
গৃহীত হয়েছে]
- সুরান্তর:
ইন্দিরাদেবী চৌধুরানী
- সুর ও
তাল:
- রাগ:
মিশ্র
- তাল:
মধ্যমান ।
-
রাগ:
ভৈরবী। তাল: কাহারবা।
[রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস,
ডিসেম্বর, ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৬৩]
- তাল: মধ্যমান।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার
চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমী, জুলাই ২০০১। পৃষ্ঠা: ১১০]
- গ্রহস্বর:
গ্রহস্বর –
সা।