কেন পান্থ, এ চঞ্চলতা।
কোন শূন্য হতে এল কার বারতা॥
নয়ন কিসের প্রতীক্ষা-রত বিদায়বিষাদে উদাসমত-
ঘনকুন্তলভার ললাটে নত, ক্লান্ত তড়িতবধূ তন্দ্রাগতা॥
কেশরকীর্ণ কদম্ববনে মর্মরমুখরিত মৃদুপবনে
বর্ষণহর্ষ-ভরা ধরণীর বিরহবিশঙ্কিত করুণ কথা।
ধৈর্য মানো ওগো, ধৈর্য মানো! বরমাল্য গলে তব হয় নি ম্লান’
আজও হয় নি ম্লান’-
ফুলগন্ধনিবেদনবেদনসুন্দর মালতী তব চরণে প্রণতা॥
শূন্য গগনে পাও কার বারতা?
নয়ন অতন্দ্র প্রতীক্ষারত
কেন উদ্ভ্রান্ত অশান্ত-মতো,
কুন্তলপুঞ্জ অযত্নে নত
ক্লান্ত তড়িৎ-বধূ তন্দ্রাগতা।
ধৈর্য ধরো, সখা, ধৈর্য ধরো,
দুঃখে মাধুরী হোক মধুরতর;
হেরো গন্ধ নিবেদন বেদন সুন্দর
মল্লিকা চরণতলে প্রণতা।নটরাজ গ্রন্থে এই গানটির সাথে 'যাত্রাবেলায় রুদ্ররবে' গানটি মিশে আছে। এ সম্পর্কে স্বরবিতান প্রথম খণ্ডে (পুনর্মুদ্রণ ফাল্গুন ১৪১৩) এ সম্পর্কে বলা হয়েছে- 'তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ভাদ্র ১৩৬১ সালে। এই সংস্করণে; কেন পান্থ এ চঞ্চলতা' গানের পরিপূরক 'যাত্রাবেলায় রুদ্র রবে' গানটির দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি স্বরবিতান পঞ্চম খণ্ড (জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৯) হইতে সংকলিত হয়।'
নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা রচিত হয়
১৯৩৩ বঙ্গাব্দে। এই গ্রন্থটি
বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়- আষাঢ় ১৩৩৪
বঙ্গাব্দ সংখ্যায়। এই সময় এই গানটিও 'নটরাজ
ঋতুরঙ্গশালা'র সাথে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর
'নটরাজ
ঋতুরঙ্গশালা'-কে রবীন্দ্রনাথ কিছু পরিবর্তন করেন। পরিবর্তিত এই সংস্করণটির নামকরণ
করেন- 'ঋতুরঙ্গ'। 'বসুমতী' পত্রিকার পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ সংখ্যায় 'ঋতুরঙ্গ' প্রকাশিত
হয়। এই গ্রন্থের সাথে- এই গানটিও প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানে
রবীন্দ্ররচনাবলী
১৮তম (অষ্টাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী)।
পৃষ্ঠা ২১১-১২।)
খণ্ডে এই গানটি 'নটরাজ'-এর সাথে পাওয়া যায়।
রাগ: কাফি। তাল: কাহারবা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬। পৃষ্ঠা: ৪৬]