বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম: যাত্রাবেলায় রুদ্র রবে বন্ধনডোর ছিন্ন হবে।
পাঠ ও পাঠভেদ:

• গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ: পূজা : ৬১৬

যাত্রাবেলায় রুদ্র রবে বন্ধনডোর ছিন্ন হবে।
ছিন্ন হবে, ছিন্ন হবে॥
   মুক্ত আমি, রুদ্ধ দ্বারে বন্দী করে কে আমারে !
যাই চলে যাই অন্ধকারে ঘণ্টা বাজায় সন্ধ্যা যবে॥

• পাণ্ডুলিপির পাঠ:
• পাঠভেদ: নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা'র 'শেষ মিনতি' কবিতাটির একটি অংশ- 'কেন, পান্থ, এ চঞ্চলতা' গীতবিতানে 'প্রকৃতি' পর্যায়ের আর অপর অংশ- 'যাত্রাবেলায় রুদ্র রবে' 'পূজা' পর্যায়'-এর নিচে রবীন্দ্ররচনাবলী অষ্টাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী) থেকে 'শেষ মিনতি’র প্রয়োজনীয় অংশ তুলে ধরা হলো।
   
              গান
  কেন পান্থ এ চঞ্চলতা ?
  কোন্‌ শূন্য হতে এল কার বারতা।
            যাত্রাবেলায় রুদ্ররবে
  বন্ধন-ডোর ছিন্ন হবে,
  ছিন্ন হবে, ছিন্ন হবে।
            নয়ন কিসের প্রতীক্ষা-রত
          বিদায়বিষাদে উদাসমতো,
          ঘন-কুন্তলভার ললাটে নত
          ক্লান্ত তড়িৎবধূ তন্দ্রগতা।
   
  মুক্ত আমি, রুদ্ধ দ্বারে
  বন্দী করে কে আমারে।
  যাই চলে যাই অন্ধকারে
  ঘণ্টা বাজায় সন্ধ্যা যবে।
   
  কেশরকীর্ণ কদম্ববনে
  মর্মর মুখরিল মৃদু পবনে,
  বর্ষণহর্ষ-ভরা ধরণীর
  বিরহবিশঙ্কিত করুণ কথা।
   
  ধৈর্য মানো ওগো ধৈর্য মানো,
  বরমাল্য গলে তব হয় নি ম্লান,
  আজো হয় নি ম্লান,
  ফুল-গন্ধ-নিবেদন-বেদন-সু্দর
  মালতী তব চরণে প্রণতা।
   
• তথ্যানুসন্ধান
  • ক. রচনাকাল ও স্থান: রবীন্দ্রনাথ 'নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের বসন্তকালে রচনা করেন। এই নাটকটি এই বৎসরেই শান্তিনিকেতনে প্রথম অভিনীত হয়। এই সময়ে এই গানটি রচিত হয়েছিল। বিশ্বভারতী কর্তৃক প্রকাশিত রবীন্দ্ররচনাবলীর অষ্টাদশখণ্ডের ৪৭৯ পৃষ্ঠায় এই গানটির রচনাকাল সম্পর্কে বলা হয়েছে-
    শেষ মিনতি : কেন, পান্থ, এ চঞ্চলতা। মূলগান ১৪ ফাল্গুন ১৩৩৩
    
    এই বিচারে গানটি 'কেন, পান্থ, এ চঞ্চলতা' গানের পূরক গান হিসাবে একই সময়ে রচিত বলে ধারণ করা যায় এই বিচারে ধারণা করা যায়- গানটি রবীন্দ্রনাথের ৬৪ বৎসর ১১ মাস বয়সের রচনা। দেখুন : কেন পান্থ এ চঞ্চলতা [প্রকৃতি-৯৩] [তথ্য]
    
    এই 'শেষ মিনতি'র দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্তবক নিয়ে পৃথকভাবে এই গানটি স্বীকৃতি লাভ করেছিল। রবীন্দ্ররচনাবলী অষ্টাদশ খণ্ডের (বিশ্বভারতী) ৫৭৯ পৃষ্ঠায় গানটির রচনাকাল লিখিত হয়েছে- মূলগান ১৪ ফাল্গুন ১৩৩৩। সে হিসাবে আলোচ্য গনিটির রচনাকালও ওই সময়ই হওয়া উচিৎ বলে মনে করা যেতে পারে। তবে রবীন্দ্রনাথ, মূল গানটি থেকে এ গানটি পৃথক করার কাজটি ৪ চৈত্র ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ. সম্পন্ন করেছিলেন কিনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট জানা যায় না।
    
    নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা রচিত হয় ১৯৩৩ বঙ্গাব্দে। এই গ্রন্থটি বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়- আষাঢ় ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ সংখ্যায়। এই সময় এই গানটিও 'নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা'র সাথে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর 'নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা'-কে রবীন্দ্রনাথ কিছু পরিবর্তন করেন। পরিবর্তিত এই সংস্করণটির নামকরণ করেন- 'ঋতুরঙ্গ'। 'বসুমতী' পত্রিকার পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ সংখ্যায় 'ঋতুরঙ্গ' প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের সাথে- এই গানটিও প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানে রবীন্দ্ররচনাবলী ১৮তম (অষ্টাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী)। পৃষ্ঠা ২১১-১২।) খণ্ডে এই গানটি 'নটরাজ'-এর সাথে পাওয়া যায়।
     
  • খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
    • গ্রন্থ
      • গীতবিতান
        • অখণ্ড সংস্করণ, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দ)। পূজা (উপ-বিভাগ : শেষ ৩৩) পর্যায়ের ৬১৬ সংখ্যক গান।
      • নটরাজ (১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। শেষ মিনতি। গান। রবীন্দ্ররচনাবলী অষ্টাদশ খণ্ড (বিশ্বভারতী)। পৃষ্ঠা ২১৫।
      • স্বরবিতান প্রথম খণ্ডের (সংস্করণ ভাদ্র ১৪১৩) ১৪ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪২।
      • স্বরবিতান পঞ্চম খণ্ডের ()  সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ।
    • পত্রিকা:
      • বিচিত্রা (আষাঢ় ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ)। শেষ মিনতি। নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালার সাথে প্রকাশিত হয়। আশ্বিন ১৩৩৪ সংখ্যায় গানটি দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়।
      • বসুমতী (পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ)।  ঋতুরঙ্গ -এর সাথে গানটি প্রকাশিত হয়েছিল।

    • রেকর্ডসূত্র: নাই।

    • প্রকাশের কালানুক্রম:
       

  • গ. সঙ্গীতবিষয়ক তথ্যাবলী:
    • স্বরলিপি: 
      • স্বরলিপি, স্বরবিতান প্রথম খণ্ডের (সংস্করণ ভাদ্র ১৪১৩)।
      • স্বরলিপি, স্বরবিতান পঞ্চম খণ্ডের (সংস্করণ )।

    • স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
      [দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]

    • সুর ও তাল:

      • স্বরবিতান প্রথম খণ্ডে (সংস্করণ ভাদ্র ১৪১৩) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৪।৪ ছন্দে কাহারবা তালে নিবদ্ধ।
                  [কাহারবা তালে নিবদ্ধ গানের তালিকা]

      • রাগ : হাম্বীর'র ছায়া। তাল: কাহারবা। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা, সুধীর চন্দ, প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬], পৃষ্ঠা ৭৫।

      • রাগ : নাই। তাল: কাহারবা। [রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি, জুলাই ২০০১], পৃষ্ঠা ১৩০।

    • বিষয়াঙ্গ:

    • সুরাঙ্গ:

    • গ্রহস্বর: সা।

    • লয়: দ্রুত।