রুদ্রবেশে কেমন খেলা, কালো মেঘের ভ্রূকুটি!
সন্ধ্যাকাশের বক্ষ যে ওই বজ্রবাণে যায় টুটি॥
সুন্দর হে, তোমায় চেয়ে ফুল ছিল সব শাখা ছেয়ে,
ঝড়ের বেগে আঘাত লেগে ধুলায় তারা যায় লুটি॥
মিলনদিনে হঠাৎ কেন লুকাও তোমার মাধুরী!
ভীরুকে ভয় দেখাতে চাও, একি দারুণ চাতুরী!
যদি তোমার কঠিন ঘায়ে বাঁধন দিতে চাও ঘুচায়ে,
কঠোর বলে টেনে নিয়ে বক্ষে তোমার দাও ছুটি॥
'১৩৩১ সালে দোলপূর্ণিমায়
শান্তিনিকেতনে বরাবরকার মতো উৎসব করবার কথা ছিল; গুরুদেব এই উপলক্ষে প্রায়
দশ-এগারটি নতুন গান রচনা করেছিলেন এবং 'সুন্দর' নাম দিয়ে নৃত্যাভিনয় সম্পন্ন হবে এই
রকম ঠিক ছিল। সেদিন বিকেলে যখন আয়োজন প্রায় সব শেষ, তখন এল তুমুল ঝড়-বৃষ্টি,
শ্রীযুক্ত নন্দলাল বসু ও শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ কর মহাশয় কর্তৃক বিচিত্র সাজে
সজ্জিত আম্রকুঞ্জ একেবারে ওলটপালট হয়ে গেল। সেই ঝড়ের সময় লিখলেন 'রুদ্রবেশে কেমন
খেলা, কালো মেঘের ভ্রূকুটি' গানটি। অনেক রাত্রে বর্তমান পুস্তকাগারের উপরতলার লম্বা
ঘরে গানের মজলিস হল বৃষ্টির পরে। সেখানে গুরুদেব এই নতুন গানটি একলা গেয়েছিলেন।'
[রবীন্দ্রসংগীত। শান্তিদেব ঘোষ। বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৪১৫। পৃষ্ঠা: ২০৩]