বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা:
শিরোনাম:
তোমার বীণা আমার মনোমাঝে
পাঠ ও পাঠভেদ:
তোমার বীণা আমার মনোমাঝে
কখনো শুনি, কখনো ভুলি, কখনো শুনি না যে॥
আকাশ যবে শিহরি উঠে গানে
গোপন কথা কহিতে থাকে ধরার কানে কানে—
তাহার মাঝে সহসা মাতে বিষম কোলাহলে
আমার মনে বাঁধনহারা স্বপন দলে দলে।
হে বীণাপাণি, তোমার সভাতলে
আকুল হিয়া উন্মাদিয়া বেসুর হয়ে বাজে॥
চলিতেছিনু তব কমলবনে,
পথের মাঝে ভুলালো পথ উতলা সমীরণে।
তোমার সুর ফাগুনরাতে জাগে,
তোমার সুর অশোকশাখে অরুণরেণুরাগে।
সে সুর বাহি চলিতে চাহি আপন-ভোলা মনে
গুঞ্জরিত-ত্বরিত-পাখা মধুকরের সনে।
কুহেলী কেন জড়ায় আবরণে—
আঁধারে আলো আবিল করে, আঁখি যে মরে লাজে॥
পাণ্ডুলিপির পাঠ:
RBVBMS 298 [পাণ্ডুলিপি:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
পাঠভেদ:
তোমার বীণা আমার
মনোমাঝে
কখনো শুনি, কখনো ভুলি, কখনো শুনি না যে॥
: পাণ্ডুলিপি:
শেষাংশ।
RBVBMS 298।
গীতবিতান (কার্তিক ১৪১২)
স্বরবিতান তৃতীয় খণ্ডে (মাঘ ১৪১২)
তোমার বীণা আমার
মনোমাঝে
কখনো শুনি কখনো ভুলি কখনো শুনি না যে॥
: রবীন্দ্ররচনাবলী চতুর্থ খণ্ডে
(পশ্চিমবঙ্গ সরকার, আষাঢ় ১৩৯৪)
সে সুর বাহি চলিতে চাহি আপন
ভোলা মনে
গুঞ্জরিত ত্বরিত-পাখা মধুকরের সনে।
:পাণ্ডুলিপি:
শেষাংশ।
RBVBMS 298
সে সুর বাহি চলিতে চাহি আপন-ভোলা মনে
গুঞ্জরিত-ত্বরিত-পাখা মধুকরের সনে।
: গীতবিতান (কার্তিক
১৪১২)
আঁধারে আলো আবিল করে, আঁখি যে মরে লাজে॥
তোমার বীণা আমার
মনোমাঝে
কখনো শুনি কখনো ভুলি
কখনো শুনি না যে॥ : পাণ্ডুলিপি:
শেষাংশ।
RBVBMS 298
আঁধারে আলো আবিল করে, আঁখি যে মরে লাজে॥
:
গীতবিতান (কার্তিক
১৪১২)
“...মনে পড়ে ১৩৩২ সালে চৈত্রমাসে আলিপুরে আমাদের বাড়িতে একদিন একটি ছেলে সকালে কবির সঙ্গে দেখা করতে এল। কী একটা লেখা নিয়ে তখন উনি খুব ব্যস্ত, কিন্তু কাজ থামিয়ে রেখে তাকে ডেকে পাঠালেন। প্রায় ঘণ্টা দুই পরে আমি গিয়েছি স্নানের জন্য তাগিদ দিতে, দেখি মুখখানা অত্যন্ত বিষণ্ন। আমাকে বললেন, "জানো, সেই ছেলেটিকে তাড়াতাড়ি বিদায় করবো ভেবেছিলুম, কিন্তু সে এত হতভাগ্য যে কিছুতেই বলতে পারলুম না আমার কাজ আছে। এক কবিতার খাতা নিয়ে এসেছিল, দেড়ঘণ্টা ধরে পড়ে শোনালে, আর আমি বসে বসে ভাবলুম বিধাতার এ কী নিষ্ঠুর খেলা।" আমার চোখে প্রশ্নের চাহনি দেখে বললেন, "ছেলেটা পাগল। অথচ সত্যিই কবিত্বশক্তি আছে। পাঁচ ছয় লাইন হয়তো খুব ভালো লিখতে লিখতে হঠাৎ হারিয়ে যায়, আর যা তা লিখে ফেলে। বুঝতে পারে হচ্ছে না, কিন্তু কেন হচ্ছে না তা বোঝে না, অর্থাৎ জানে না যে ও পাগল। বেচারা এসেছিলো আমার কাছে, যদি আমি এ বিষয়কে ওকে সাহায্য করতে পারি।"
সমস্তদিন এই পাগলের জন্য অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে রইলেন। ভুলতে পারছিলেন না যে, মাথা ঠিক থাকলে ছেলেটি সত্যিই একজন ভালো কবি হতে পারতো। এই পাগল রবীন্দ্রনাথের মনকে এতটা নাড়া দিয়েছিল যে, খানিকক্ষণ পরে চমৎকার একটি গান লিখলেন—
তোমার বীণা আমার মনোমাঝে...।”
গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
স্বরবিতান তৃতীয় (৩) খণ্ডে (মাঘ ১৪১২) গৃহীত স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিটি ৩। ২ মাত্রা ছন্দে 'ঝম্পক ' তালে নিবদ্ধ।
রাগ: আশাবরী- ভৈরবী। তাল: ঝম্পক [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।] পৃষ্ঠা: ৫৭।
রাগ: আশাবরী,
ভৈরব, ভৈরবী।
তাল-ঝম্পক।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১],
পৃষ্ঠা: ৯৯।
সুরাঙ্গ: রবীন্দ্রনাথের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য
গ্রহস্বর: সা।
লয়: মধ্য।