বিষয়:
রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম:
আমি ভয়
করব না ভয় করব না।
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক
১৪১২)-এর পাঠ: স্বদেশ পর্যায় ৭।
আমি ভয় করব না ভয় করব না।
দু
বেলা মরার আগে মরব না,
ভাই,
মরব না॥
তরীখানা
বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে—
তাই ব’লে
হাল ছেড়ে দিয়ে ধরব না,
কান্নাকাটি ধরব না॥
শক্ত যা
তাই সাধতে হবে,
মাথা তুলে রইব ভবে—
সহজ পথে
চলব ভেবে পড়ব না,
পাঁকের ’পরে পড়ব না॥
ধর্ম আমার
মাথায় রেখে চলব সিধে রাস্ত দেখে—
বিপদ যদি
এসে পড়ে সরব না,
ঘরের কোণে সরব না॥
MS_110।
[নমুনা]
পাঠভেদ:
ভাবসন্ধান:
অভীষ্ট লক্ষ্য পৌঁছার জন্য ভয়কে জয় করতে হবে। ভীরু যে সে প্রকৃত মৃত্যুর আগে ভয়ে
মরে বহুবার। এই ভয় সাহসী
বীরের জন্য নয়। সংগ্রামের পথ নিষ্কণ্টক নয়, বিপদ দেখে হাল ছেড়ে দিয়ে সংগ্রামের পথ
থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে কান্নাকাটি করাটাও শোভন নয়। যা কিছু কঠিন বলে মনে হবে,
সাধনার দ্বারা তা জয় করতে হবে। তাহলে জগৎসংসারে নিজের জয়পতাকা তুলে ধরা সম্ভব।
জীবনের পথ সহজ নয়। চলার পথ সবসময় সাবলীল হবে, কখনো বিপদের পঙ্কিলতা স্পর্শ করবে না
এমনটা ভাবার কারণ নেই। সত্যসুন্দরের পথ ধরে নির্ভয়ে চলার ভিতরে যদি বিপদ আসে, তাহলে
সত্যের পথ থেকে সরে দাঁড়াবো না, বা নিজেকে গুটিয়ে ঘরকুনো হয়ে কাটাবো না- এমন
প্রতিজ্ঞাই হবে সংগ্রামী ও সাহসী যোদ্ধার পথ।
তথ্যানুসন্ধান
- ক. রচনাকাল ও স্থান:
২৬ ভাদ্র, ১৩১২ বঙ্গাব্দ। গিরিড।
গানটি রবীন্দ্রনাথের ৪৪ বৎসর ৩-৪ মাস বয়সের রচনা।
উল্লেখ্য, ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর [শুক্রবার ১৬ ভাদ্র ১৩১২ বঙ্গাব্দ] তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের শীতকালীন রাজধানী সিমলা থেকে
বঙ্গভঙ্গের নির্দেশ জারি করা হয়। এই নির্দেশ বলা হয়- ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই অক্টোবর (৩০ আশ্বিন ১৩১২ বঙ্গাব্দ)থেকে বঙ্গভঙ্গ কার্যকরী হবে। এই ঘোষণার
সাথে সাথে বঙ্গবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিশেষ করে, তৎকালীন বঙ্গের রাজধানী
কলকাতায় বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ওঠে।
২৬ ভাদ্র রবীন্দ্রনাথ গিরিডিতে ছিলেন। তিনি বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিলের জন্য প্রতিবাদে ২৩টি স্বদেশী গান রচনা করেন।
এই গানগুলোর এই গানটি ছিল
- খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
- গ্রন্থ:
-
গান
-
গীতবিতান
-
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৪৮)
-
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী ১৩৮০)। স্বদেশ পর্যায়ের
৭ সংখ্যক গান।
-
গীতিচর্চ্চা
[বিশ্বভারতী ১৩৩২
বঙ্গাব্দ)] গান
সংখ্যা ১৫৫। পৃষ্ঠা: ১২০
[নমুনা]
-
বাউল [মজুমদার লাইব্রেরি ১৩১২ বঙ্গাব্দ)। শিরোনাম: শিরোনাম অভয়।
ভূপালি-একতালা। পৃষ্ঠা: ১৪-১৫। [নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
স্বরবিতান
ষট্চত্বারিংশ (৪৬) খণ্ডের (মাঘ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ) দশম গান হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
পৃষ্ঠা ৩৭-৩৯।
[নমুনা]
- পত্রিকা:
- বঙ্গদর্শন (কার্তিক ১৩১২)।
শিরোনাম অভয়। [নমুনা]
- সঙ্গীত প্রকাশিকা (কার্তিক ১৩১২ বঙ্গাব্দ) মিশ্র ভূপালী-একতালা।
ইন্দিরাদেবী-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
পৃষ্ঠা ৩৩-৩৪।
- গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
- স্বরলিপি:
[নমুনা]
-
স্বরলিপিকার:
ইন্দিরাদেবী।
- সুর ও
তাল:
-
স্বরবিতান
ষট্চত্বারিংশ খণ্ডে (মাঘ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ) গৃহীত স্বরলিপির সাথে রাগ তালের
উল্লেখ নেই। গানটি ৩।৩ মাত্রা ছন্দে দাদরা তালে নিবদ্ধ।
- রাগ-ভূপালী।
তাল-একতালা।
বঙ্গর্শন
- রাগ-মিশ্র ভূপালী।
তাল-একতালা।
(সঙ্গীত প্রকাশিকা, কার্তিক ১৩১২ বঙ্গাব্দ)
-
রাগ : বিভাস। অঙ্গ: বাউল। তাল: দাদরা।
[রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬। পৃষ্ঠা: ৩৩]
-
অঙ্গ: বাউল।
তাল: দাদরা ।
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই
২০০১। পৃষ্ঠা:
৬২]
- বিষয়াঙ্গ: স্বদেশ।
- সুরাঙ্গ:
বাউলাঙ্গ
- গ্রহস্বর: গা।
- লয়: দ্রুত।