প্রস্তর-খোদিত ঘুমন্ত এন্টিলোপ |
১২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে এই অঞ্চলের মাটি উর্বতা লাভ করেছিল। এই সূত্রে এই অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছিল বৃহৎ অরণ্য। ফলে এই অঞ্চল তৃণভোজী প্রাণীর বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এদের ভিতরে উল্লেখযোগ্য প্রাণী ছিল এন্টিলোপ ও গবাদি পশু। আবার তৃণভোজীদের সূত্রে এই অঞ্চলের জলভূমিগুলো কুমিরে ভরে গিয়েছিল। সেই সাথে ডাঙ্গায় ছিল সিংহ, হায়না জাতীয় মাংশাসী প্রাণীকূল।
১০,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এই অঞ্চল মনুষ্য ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছিল। এদের হাতে সৃষ্টি হয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তর-শিল্পকর্ম।
নৃত্যরত মানুষ |
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তাসিলি ন'আজের পার্বত্য এলাকা থেকে প্রায় ১৫০০ শিল্পকর্মের নমুনা পাওয়া গেছে।
এর ভিতরে রয়েছে
প্রস্তর-খোদিত চিত্র
এবং পাথরে উপরে অঙ্কিত চিত্র। এছাড়া পাথরের তৈরি যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে এই অঞ্চলে।
প্রস্তর চিত্রে পাওয়া যায়, এন্টিলোপ, জিরাফ, উট, কুকুর, গবাদি পশু, নানা ধরনের
মনুষ্য চিত্র, শিকারের দৃশ্য, পৌরাণিক প্রাণীর ছবি ইত্যাদি। মনুষ্য ছবিগুলোতে দেখা
যায় নৃত্যরত মানুষ। অর্থাৎ এই সময় সঙ্গীতের উদ্ভব হয়েছিল। এছাড়া কিছু ছবিতে দেখা
যায় পোশাক পরিহিত মানুষ। নারীরা অলঙ্কার পরতো এবং নারী-পুরুষ উভয়ই সাজসজ্জায়
অভ্যস্থ ছিল। কিছু কিছু চিত্র থেকে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, এরা পশু পালন করতো এবং
ঘোড়ায় চড়া শিখেছিল।
খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ অব্দের দিকে ধীরে ধীরে সাহারা অঞ্চল শুষ্ক হয়ে উঠতে থাকে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দের দিকে পৃথিবীর অক্ষের সামান্য বিচ্যুতি ঘটে। এর ফলে সাহারা
বনাঞ্চল দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে এই অঞ্চলটি মরুভূমিতে পরিণত হয়। এই
সময় থেকে মানুষ অন্যান্য জীবজন্তু ধীরে ধীরে এই অঞ্চল ত্যাগ করে।
সূত্র: