চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার
চট্টগ্রাম [বাংলাদেশ] বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত কাপ্তাই উপজেলার ৩ নম্বর চিৎপুরম ইউনিয়নে অবস্থিত বৌদ্ধ বিহার বিশেষ। বিহারটি চট্টগ্রাম সদর থেকে হতে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্যোগে চিৎপুরম  একটি ছোটো বৌদ্ধমন্দির স্থাপিত হয়েছিল। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য উমং চৌধুরীর পিতামহ চন্দ্র চৌধুরী প্রথম বৌদ্ধ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করেন।তখন বিহারটি ছোট আকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে উ: পরাক্খম মহাথের এর নেতৃত্বে এতদঞ্চলের আর্থিক সাহায্য ও কায়িক পরিশ্রমে ২২ একরের দুটি অনুচ্চ টিলার উপর প্রধান দুটি মন্দির বিশিষ্ট এ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমান বিহারাধ্যক্ষের বিবরণীতে জানা যায়, কক্সবাজার জেলাধীন মাসখালিস্থ ছোয়াইং বা মিস্ত্রীর নেতৃত্বে বর্মী বিহারগুলির অনুকরণে মূল্যবান কাঠ দিয়ে  ৬৮ ফুট উচু ৪৫x৪৫ ফুট বর্গাকৃতির স্থানজুড়ে এ বিহারটি নির্মিত হয়েছিল।

১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বর্মী নাগরিক চিৎমরম এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি নিজ অর্থ ব্যয় করে র্বামা থেকে কাঠ-সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ও নির্মাণ শিল্পী এনে নানা বিহারটিকে অলঙ্কৃত করেন। এরপর দীর্ঘদিন বিহারটি একই রকম থেকে যায়। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে এই বিহারের দায়ক-দায়িকারা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে একটু দক্ষিণে নতুনভাবে শৈল্পিক ও নান্দনিক কারুকার্যমন্ডিত ইটের গাথুনি দিয়ে নতুন বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করে। এই সময় পুরনো বৌদ্ধ বিহারটিতে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাতা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন স্বর্গীয় ভিক্ষু উ পারাক্ষামা মহাথের। 

ভিক্ষু উ পারাক্ষামা মহাথের মৃত্যুর পর ১৯৪০ থেকে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিহারের প্রধান দায়িত্ব পালন করেন উ পাণ্ডিত্য মহাথের। তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন উ পান্ডিত্য মহাথেরর প্রধান শিষ্য উ পামোখা মহাথের।

প্রতি বছর প্রবারনা পুর্ণিমা ও বাংলা বর্ষ বিদায় এবং নববর্ষের আগমন উপলক্ষে এই বিহারে তিনদিন ব্যাপী 'সাংগ্রাই উৎসব' পালিত হয়। উৎসব চলাকালীন এখানে মেলা, যাত্রা, নাটক সহ নানা অনুষ্ঠান হয়।
 

তথ্যসূত্রঃ
http://kaptai.rangamati.gov.bd
http://thebuddhisttimes.com
https://www.eibela.com