ধুপপানি ঝর্না
চট্টগ্রাম [বাংলাদেশ]
বিভাগের
রাঙ্গামাটি
জেলার অন্তর্গত বিলাইছড়ি
উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত একটি ঝর্না।
স্থানীয় তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় ধুপ অর্থ সাদা এবং পানি অর্থ জল। এই ঝর্নার পানি
অত্যন্ত সাদা দেখায়, এই কারণে একে ধুপপানি ঝর্না বলা হয়ে থাকে। এর সরলার্থ সাদা
পানির ঝরনা। মূলত বেশ প্রায় ১৫০ মিটার উঁচু থেকে স্বচ্ছ পানি আছড়ে পড়ার কারণে জলের
রঙ সাদা দেখায়। এই অর্থে একে ঝরনা না বলে ক্ষুদ্র জলপ্রপাত বলা যেতে পারে। ঝর্ণা
থেকে পানি আছড়ে পড়ার শব্দ প্রায় ২ কিলোমিটার দুর থেকে শোনা যায়।
দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই ঝর্নার কথা খুব বেশি মানুষ জানতো না। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে
এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ধ্যানের জন্য নির্জন দুপপানি ঝর্ণা এলাকা বেছে নিয়েছিলেন। তিনি
মূলত ঝর্নাধারা নিচে বসে ধ্যান শুরু করেছিলেন। স্থানীয় লোকজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে
খাবার-সহ সেবা করার জন্য ওই স্থানে গেলে, ধুপপানি ঝর্নার কথা জানতে পারেন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ঝর্নার উপরে বৌদ্ধ ধর্মযাজক (ভান্তে) ছয় দিন ধ্যান করেন এবং
শুধু রোববারে খাবার খাওয়ার জন্য নিচে নেমে আসেন। তাই এই ঝরনা দেখার জন্য
শুধু রোববারই অনুমোদিত দিন।
এই এলাকায় প্রবেশের জন্য, জাতীয় পরিচয়পত্র, কিংবা পাসপোর্টের ফটোকপি, কিংবা যে
কোন পরিচয়পত্র সাথে থাকতে হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে এ সকল পরিচয়
পত্র প্রদর্শন করার পর ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
এই ঝর্না দেখার জন্য প্রথমে কাপ্তাই থেকে নৌযানে বাঙ্গালকাটা বিলাইছড়ি
যেতে হয়ে। এরপর বিলাইছড়ি
হাসপাতাল ঘাট থেকে নৌযানে যেতে হয় উলুছড়ি পর্যন্ত। উলুছড়ি থেকে নৌকায় পাহাড়ি ঢালের
পানি পার হয়ে ধুপপানি পাড়ায় যেতে হয়। বাকি পথ পায়ে হেঁটে ধুপপানি ঝর্নায় পৌঁছাতে
হয়।