রামু
ইংরেজি :
Ramu


বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
 

ভৌগোলিক অবস্থান ২১.১৭° থেকে ২১.৩৬°উত্তর দ্রাঘিমাংশ এবং ৯০° থেকে ৯২.১০০০° পূর্ব অক্ষাংশ পর্যন্ত।

 

এর মোট আয়তন ৩৯১.৭১ বর্গকিলোমিটার। এর উত্তরে চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলা, দক্ষিণে উখিয়া উপজেলা এবং পূর্বে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি।

 

এটি আগে কক্সবাজার মহকুমার অন্তর্গত একটি থানা ছিল। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে একে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।

 

রামু উপজেলা ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই ইউনিয়ন গুলো হলো চাকমারকুল, ফতেখাঁরকুল, গর্জনিয়া, ঈদগড়, জোয়ারিয়া নালা, কচ্ছপিয়া, খুনিয়াপলং, কাউয়ারখোপ, রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও রশীদ নগর।

 

আরাকান রাম রাজবংশের নামে এই এলাকার নামকরণ করা হয়েছিল রামু। এই অঞ্চলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন যে, হিন্দু পৌরাণিক গ্রন্থ রামায়ণের রাম-রাবণের যুদ্ধের সাথে এই অঞ্চল জড়িত। তাঁরা মনে করেন যে, রামচন্দ্রের নাম থেকে রামু নামের উৎপত্তি।

কথিত আছে রামকোটে অপহৃতা সীতার সাথে  মিলন ঘটেছিল। স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, রামু উপজেলার বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ পাড়ে রামকুট বা রামকোট অরণ্য ছিল। আরকান সড়কের পূর্বদিকে রামায়ণের বর্ণিত পঞ্চবটীবন ছিল, এবং সেই বনের ভিতরে ছিল রামের কুটির। বর্তমানে এখানে রয়েছে

 

শিব মন্দির, রামসীতা মন্দির, দূর্গামন্দির, নারায়ণ মন্দির, কীত্তনীয় প্যান্ডেল। শাস্ত্রমতে সকল তীর্থ ভ্রমণের পর শ্রীশ্রীরামকুট তীর্থধামে স্থিত শিব দর্শনের সকল পূণ্যের পূর্ণতা লাভ হয়। রাম-সীতা মন্দিরের রতি নামক একটি পাথর সীতার মরিচ বাটার পাথর নামে পরিচিত ছিল।

পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্থ পর্যন্ত রামু হরিকেলের অংশ হিসেবে বঙ্গীয় শাসনাধীন ছিল। ১৪৩৭ খ্রিষ্টাব্দ রাকান রাজ্য মারায়ুক-উ রাজা মিন খায়ই রামু দখল করে নেন। এবং
চট্টগ্রাম-এর বিস্তীর্ণ অঞ্চল রাকান রাজ্য-এর  শাসনাধীনে চলে গিয়েছিল।
 

 

ছবি : সৈয়দা সনজীদা বীথিকা

বৌদ্ধ বিহার সমূহ

পুরো রামু উপজেলাকে বলা যায় বৌদ্ধ বিহার অধ্যুষ্যিত উপজেলা। সরু গলির মতো পথের ধারে ধারে বৌদ্ধপল্লীর ভিতরে রয়েছে ১২টি বিহার। প্রতিটি বিহারেই আছে ঐতিহাসিক বৌদ্ধমূর্তি।

 

১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে রামুতে প্রায় ১৩ ফুট শায়িত বৌদ্ধ মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। সীমা বিহারের শায়িত ভঙ্গীর সেই মূর্তি দেখার জন্য রামুতে বহুলোক ভিড় করে থাকে।


চৌমুহনী স্টেশন ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে, রাজারকুল এলাকার পাহাড়চুড়ায় একটি বৌদ্ধ মন্দির অবস্থিত। কথিত আছে খ্রিষ্ট-পূর্ব ৩০৮ অব্দে সম্রাট অশোক এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
 

ছবি : সৈয়দা সনজীদা বীথিকা

এর অভ্যন্তরে ২টি বড় বুদ্ধ মুর্তি আছে।

কথিত আছে একটি মূর্তির ভিতর গৌতম বুদ্ধ-এর বক্ষাস্থি স্থাপিত হয়েছে।

 

এছাড়া আছে এখানাকরা লালচিং মন্দিরে রয়েছে অপূর্ব একটি বৌদ্ধ মূর্তি, লালচিং বৌদ্ধ মূর্তি, শ্রী মৎউ গুণমণ্ডু মহাস্থাবির, মৈত্রী বিহার।
 


সূত্র :
http://en.wikipedia.org/wiki/
http://www.banglapedia.org/