কুসুম্বা মসজিদ
অন্য নাম: কালা
পাহাড়।
বাংলাদেশের
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন
মসজিদ। নওগাঁ
সদর থেকে এই
মসজিদ-এর দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। আর মান্দা
উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।
মসজিদটির
প্রবেশদ্বারের ফলক অনুসারে জানা যায়, এর নির্মাণকাল হিজরি ৯৬৬ সাল (১৫৫৮-১৫৫৯
খ্রিষ্টাব্দ)। উল্লেখ্য শেরশাহ শুরির শাসনামলের শেষ দিকে সুলতান গিয়াসউদ্দীন
বাহাদুর শাহর রাজত্বকালে জনৈক সুলায়মান নামক একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মসজিদটি
নির্মাণ করেছিলেন।
মসজিদ-এর উত্তর-দক্ষিণ দিকে রয়েছে ৭৭ বিঘা জমির উপর একটি বিশাল দিঘি। দিঘিটি লম্বায়
প্রায় ১২০০ ফুট ও চওড়ায় প্রায় ৯০০ ফুট।
মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাব |
মসজিদটির গায়ের রঙ ধূসর।
এর মূল গাঁথুনি ইটের। এর দৈর্ঘ্য ৫৮ফুট এবং প্রস্থ ৪২ফুট। দুই সারিতে ৬টি গোলাকার
গম্বুজ রয়েছে। এর দ্বিতীয় সারির গম্বুজগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট।
মসজিদ-এর গায়ে রয়েছে
লতাপাতার নকশা। এর চারদিকের দেয়াল ৬ ফুট পুরু এবং এর বাইরের অংশ পাথর দিয়ে
ঢাকা।
মসজিদ-এর সম্মুখ ভাগে রয়েছে ৩টি দরজা। আকারে দুটি বড়, অন্যটি অপেক্ষাকৃত ছোট।
এর দরজাগুলো খিলানযুক্ত মেহরাব আকৃতির। এর চার কোণায় রয়েছে ৪টি আটকোণা বুরুজ।
এই বুরুজের শিরোভাগের সাথে যুক্ত রয়েছে সামান্য বাঁকা কার্ণিশ।
মসজিদের ভিতরে ২টি পাথরের স্তম্ভ আছে। এর উত্তর দিকের মেহরাবের সামনে পাথরের
স্তম্ভের ওপর তৈরি করা হয়েছিল একটি দোতলা ঘর। এই ঘরটি ছিলা মহিলাদের নামাজের ঘর।
মসজিদের ভেতরে পশ্চিমের দেয়ালে রয়েছে ৩টি চমৎকার মেহরাবের ওপর ঝুলন্ত শিকল, ফুল ও
লতা পাতার কারুকার্য। এর দক্ষিণ দিকের মেহরাব ২টি আকারে বড়। উত্তর দিকের মেহরাবটি
ছোট। মসজিদটির উত্তর-দক্ষিণ দিকে দুটি করে দরজা ছিল। মসজিদের স্তম্ভ, ভিত্তি মঞ্চ,
মেঝে ও দেয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের।
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ভূমিকম্পে এই মসজিদটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
বর্তমানে এই মসজিদটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত।
সূত্র :
http://www.ishwardi.com/alokito-uttarbango/history-and-culture/