NOAA কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি

এরিয়ে হ্রদ
ফরাসি : Lac Érié>ইংরেজি : lake Erie

উত্তর আমেরিকা মহাদেশ অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক হ্রদ। আয়তনের বিচারে উত্তর আমেরিকার চতুর্থ বৃহত্তম হ্রদ এবং সমগ্র পৃথিবীর বিচারে দশম বৃহত্তম হ্রদ। এর ভৌগোলিক অবস্থান ৪২.২০° উত্তর ৮১.২° পশ্চিম। এর উত্তরে কানাডার ওন্টারিও, দক্ষিণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও, পেনসিলভানিয়া এবং নিউইয়র্ক এবং পশ্চিমে মিশিগান।

আমেরিকার আদিবাসী এরিয়ে (Erie)-এর নামানুসারে এই হ্রদের নামকরণ করা হয়েছে। এই প্রাকৃতিক হ্রদটি সৃষ্টি হয়েছিল পৃথিবীর শেষ বরফযুগে (প্লেইস্টোসিনে বরফযুগ)। তবে বর্তমান রূপ লাভ করেছে, খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দের দিকে। উল্লেখ্য এরিয়ে (Erie) অধিবাসীরা এই হ্রদের দক্ষিণ তীরে বসবাস করতো। ১৬ শতাব্দীর দিকে এদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০০। এরা মূলত অন্যান্য ইন্ডিয়ানদের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। এই জন্য এদেরকে নিরপেক্ষ আদিবাসী বলা হতো। ইউরোপীয়রা এই হ্রদসংলগ্ন অঞ্চলে আসে ১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। পরে এই অঞ্চল ধীরে ধীরে দখল করে নেয়।

এই হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭৪ মিটার (৫৭১ ফুট) উপরে অবস্থিত। এর উপরিতলের আয়তন ২৫,৭৪৫ বর্গকিলোমিটার (৯,৯৪০ বর্গমাইল)। এর দৈর্ঘ্য ৩৮৮ কিলোমিটার (২৪১ মাইল) এবং প্রস্থ ৯২ কিলোমিটার (৫৭ মাইল)। এর গড় গভীরতা ১৯ মিটার (৬৩ ফুট)। এই হ্রদের সবচেয়ে গভীরতম অংশের গভীরতা হলো ৬৪ মিটার (২১০ ফুট)। এর পশ্চিমাঞ্চলের অগভীর অংশের গড় গভীরতা ৯.১ মিটার (৩০ ফুট)। ফলে সামান্য বাতাসেই এই অংশে বেশ বড় বড় ঢেউ উৎপন্ন হয়।

এরিয়ে হ্রদের পানির উৎস : এই হ্রদে ৭টি নদী পতিত হয়েছে। আর এই সব নদীর পানিতে স্ফীত এই হ্রদের পানি নায়েগ্রা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নিচে এর উৎস-নদীগুলোর তালিকা তুলে ধরা হলো।

এই হ্রদের পশ্চিমাঞ্চলে ৩১টি দ্বীপ আছে। এর ভিতরে ১৩টি দ্বীপ কানাডার এবং বাকি ১৮টি দ্বীপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন। এর ভিতরে সবচেয়ে বড় দ্বীপটির নাম Pelee Island। এছাড়া উল্লেখযোগ্য দ্বীপগুলো হলো -South Bass Island, Kelleys Island

হ্রদের জলজ প্রাণী
এই হ্রদে এক সময় প্রচুর সাপ ছিল। বর্তমানে সাপে সংখ্যা অনেক কম। পরে এদের রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের হিসাব মতে ১২০০০ জলচর সাপ ছিল। হ্রদের আদি মাছের অধিকাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে চাষের মাছ এই হ্রদে পাওয়া যায়। এর ভিতরে এশিয়ান কাপ, টাকি জাতীয় প্রচুর মাছ দেখা যায়।


সূত্র :
http://en.wikipedia.org
http://www.noaanews.noaa.gov/stories2005/s2427.htm