অ (ব্যাকরণ)
অ : অব্যয়,
অ: উপসর্গ,
অ-প্রত্যয়,
অ : বিভক্তি
-
অ (অব্যয়)
১. আহ্বান অর্থে– অ বাদল, এদিকে আয়।
২. বিষাদ অর্থে– অ প্রাণধারণ না জাএ/শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।
৩. অনুকম্পা অর্থে– অ তোর দুঃখ দেখি পরাণ যায়/লোকসঙ্গীত।
৪. নিন্দা অর্থে– অ শেষে এই কাজ করলি।
৫. ক্ষেদসূচক অর্থে– অ কপাল
৬. না বোধক অর্থে–
না অর্থে, নঞ্> অ, অন্। নঞ্ তৎপুরুষ সমাসে এই নঞ্-এর দুটি রূপ দেখা যায়। যেমন–
ক. যদি কোন শব্দের প্রথমে ব্যঞ্জনবর্ণ থাকে, এবং এর পূর্বে নঞ্ থাকে তবে উক্ত নঞ্ অ-তে রূপান্তরিত হয়। যেমন–
নঞ্ + ভাব = অভাব।
খ. যদি কোনো পদের প্রথমে স্বরবর্ণ থাকে, এর পূর্বে নঞ্ বসে তবে উক্ত নঞ্ বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়ে অন্ হয়। তবে স্বরবর্ণের স্বরূপ অনুসারে অ, আ, ই, ইত্যাদি বসে। যেমন–
অ (নঞ্) + অর্থ |
অনর্থ |
অ + অ = অন |
অ (নঞ্) + দেশ |
অনাদেশ |
অ + অ = অনা |
অ (নঞ্) + ইচ্ছা |
অনিচ্ছা |
অ + ই = অনি |
অ (নঞ্) + ঈপ্সিতা |
অনীপ্সিতা |
অ + ঈ = অনী |
অ (নঞ্) + উদ্ধত |
অনুদ্ধত |
অ + উ = অনু |
অ (নঞ্) + ঊঢ় |
অনূঢ় |
অ + ঊ = অনূ |
অ (নঞ্) + ঋণ |
অনৃণ |
অ + ঋ = অনৃ |
অ (নঞ্) + এক |
অনেক |
অ + এ = অনে |
অ (নঞ্) + ঐক্য |
অনৈক্য |
অ + ঐ = অনৈ |
অ (নঞ্) + ঔদার্য |
অনৌদার্য |
অ + ঔ = অনৌ |
ইংরেজি: dis (disapproval
অননুমোদন),
il (illimitable
অসীম),
im (immovable
অচল),
in (incomplete
অসম্পূর্ণ),
ir (irregular
অনিয়মিত),
non (non-stop
অবিরাম),
mis (mistrust
অবিশ্বাস),
un (unholy
অপবিত্র)।
জার্মান :
a, an,
লাতিন in,
জার্মান গথিক un।
-
অ (উপসর্গ)
বাংলাতে অ উপসর্গ হিসাবে না-বোধক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন–
অ (নয়) =অমুসলিম
-
অ (প্রত্যয়)
বাংলা শব্দে শব্দমূল ও ক্রিয়ামূলের সাথে অ প্রত্যয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সংস্কৃত ও বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে এই সকল প্রত্যয়ের ব্যাবহারিক বিধি এক প্রকার নয়। বিস্তারিত দেখুন : অ (প্রত্যয়)
-
অ (বিভক্তি)
কারক বিভক্তি চিহ্ন হিসাবে প্রাচীন বাংলায় একসময়ে অধিকরণ কারকে সপ্তমী বিভক্তি (য়>অ) হিসাবে ব্যবহৃত হতো। যেমন- আড়াঅ বাঘর ভঅ জলত কুম্ভীর/শূণ্যপুরাণ। আধুনিক বাংলায় এর চল নেই।ক। কর্তৃবাচ্যে বর্তমানকালে উত্তম পুরুষের ক্রিয়ার বিভক্তি। এই বিভক্তিটি সংস্কৃত ভাষা থেকে রূপান্তরিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে। যেমন–
সংস্কৃত মি>প্রাকৃত উং, ওম>বাংলা ওঁ, ওম>বাংলা অঁ> বাংলা অ। যেমন- ঋষি বন্দ। (ঋষি বন্দনা করি।)খ। বর্তমানকালে নাম পুরুষের ক্রিয়ার বিভক্তি। সংস্কৃত তে>প্রাকৃত এ>বাংলা অ (য়ে>য়)। যেমন-–
অ (য়ে) = ডমরুলি বাজঅ (বাজয়ে), অ (য়) = রাজা কঅ (রাজা কয়)।গ। বর্তমানকালে মধ্যম পুরুষের ক্রিয়ার সম্ভ্রমসূচক বিভক্তি। সংস্কৃত লট্>সংস্কৃত থ>প্রাকৃত হ>বাংলা অ। যেমন–
হঅ গরুর রাখোআল, বোল আকাশ পাতাল/শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।ঘ। ১. সংস্কৃত (লোট্) ত, (বৈদিক) থ>প্রাকৃত হ (তু পণমহ)>বাংলা অ৷ যেমন–
হসত>হসহ>হাস(সম্ভ্রমে)।
২. সংস্কৃত হস্ (লোট-হি)>প্রাকৃত হস বা হাস্ (অ লোপ পায় অসম্ভ্রম অর্থে)