কীলকলিপি
ইংরেজি : Cuneiform

কীলক বা খোঁটার মতো করে অঙ্কিত লিপিগুলোকে সাধারণভাবে কীলকলিপি বলা হয়। চিত্রলিপি বিবর্তিত হয়ে কীলকলিপিতে পরিণত হয়েছিল।

 
প্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতায় ব্যবহৃত  চিত্রলিপি। এই লিপির যথার্থ রূপ দেখা যায়
সুমেরীয় লিপি-তে। খ্রিষ্টপূর্ব  ৩০০০- ২৮০০ অব্দ পর্যন্ত  চিত্রলিপি প্রচলিত ছিল। এই লিখন পদ্ধতিতে প্রত্যক্ষভাবে বিষয়াবলীর ছবির ছাপ দেওয়া হতো, কিন্তু কালক্রমে এই চিত্রলিপি প্রতীকধর্মী লিপিতে পরিণত হয়। গোড়ার দিকে এই প্রতীকধর্মী চিহ্নগুলিতে বক্র এবং সরল উভয় ধরনের রেখাই দেখা যায়। কিন্তু সুমের অঞ্চলর কাদার ফলকের উপর নলখাগড়া কাঠি দিয়ে এই চিত্রলিপিগুলিকে প্রতীকাকারে আঁকার ফলে প্রতীকী এই চিহ্নগুলো কীলক বা খোঁটার মতো সরল রূপলাভ করেছিল। এই সকল লিপির বাম বা উপরের দিকে ত্রিভুজাকার চিহ্ন লক্ষ্য করা যায়। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে আক্কাদিয়ানদের হাতে এই লিপি কীলকলিপিতে পরিণত হয়েছিল। ফলে আক্কাদিয়ান (Akkadian) ভাষা মেসোপটেমিয়ার প্রধান ভাষায় পরিণত হয়েছিল। প্রাচীন সিরিয়ার ইবলা (আধুনিক সিরিয়ার টাল মারদিখ) নগর আবিষ্কারের পর, এবলাইতে কীলকলিপির সন্ধান পাওয়া যায়।

 

আক্কাদিয়ান (Akkadian), এলামাইট (Elamite), হুরিয়ান (Hurrian) ভাষার লিপি হিসাবে গৃহীত হয়েছিল। এই লিপির অনুপ্রেরণায় সৃষ্টি হয়েছিল প্রাচীন পারস্য লিপি এবং উগারিটিক জাতীয় বর্ণমালা। নিচে উদাহরণ হিসাবে স্যাগ (sag) চিহ্নের (এর অর্থ মাথা)  ক্রমবিবর্তন দেখানো হলো।
 

 

খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ অব্দের দিকে প্রাচীন ফার্সিভাষা লেখা হতো কীলক লিপিতে। উল্লেখ্য, খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ অব্দে প্রথম পারশ্য সাম্রাজ্য স্থাপিত হয়। ইতিহাসে এটি অকিমনিদ সাম্রাজ্য নামে পরিচিত। এই সাম্রাজ্যের সময়ের কীলকলিপিতে লেখা প্রাচীন নমুনা পাওয়া গেছে।