আহত নাদ
ভারতীয় শব্দ-দর্শন ও সঙ্গীতশাস্ত্রের বিচারে, নাদের একটি প্রকরণ। অপর প্রকরণের নাম অনাহত নাদ

ভারতীয় শব্দ-দর্শনে ধ্বনি বা শব্দের অপর নাম নাদ। আহত নাদ বস্তু জগতের শব্দ এবং যান্ত্রিক প্রপঞ্চের একটি বিশেষ প্রকরণ। বস্তুর কম্পনে পার্শবর্তী মাধ্যমে যে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং ওই মাধ্যমে তরঙ্গাকারের ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এক ধরনের যান্ত্রিক প্রপঞ্চের সৃষ্টি হয়। এই যান্ত্রিক প্রপঞ্চ মূলত নাদ শক্তি রূপে বিরাজ করে। যান্ত্রিক প্রক্রিয়া কম্পিত বস্তু থেকে উৎপন্ন কম্পনের সূত্রে যে শক্তি তৈরি হয় এবং তা কোনো মাধ্যম্যের মধ্য দিয়ে সঞ্চালিত হলে, ওই মাধ্যমে তরঙ্গাকারে ছড়িয়ে পড়ে। তরঙ্গাকারে সঞ্চালিত এই শক্তিই হলো আহত নাদ। ঘটমান ক্রিয়া হিসেবে শব্দ জগতের অন্যান্য প্রপঞ্চের মতই একটি প্রপঞ্চ।

মানুষের শ্রবণক্ষমতার সীমাবদ্ধতার বিচারে, সকল আহত নাদ শুনতে পায় না। মানুষের শ্রবণ ক্ষমতার বিচারে এই নাদ বা শব্দকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ তিনটি হলো-
সঙ্গীতের আহত নাদ হলো- শ্রবণযোগ্য সঙ্গীতোপযোগী শব্দ। শ্রবণযোগ্য অন্যান্য নাদগুলোকে কোলাহল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সঙ্গীতশাস্ত্রে আহতনাদের ভিত্তি হিসেবে বিরাজ করে অনাহত নাদ। মানুষের মনের গভীরে যে সঙ্গীতোপযোগী শব্দ-ভিত্তিক অনাহত নাদের জন্ম হয়। বা সঙ্গীত শিল্পী প্রথমে এই অনাহত নাদকে অনুভব করেন এবং তা কণ্ঠের স্বরতন্ত্রী দ্বারা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। মনের গভীরে উৎপন্ন অনাহত সঙ্গীতোপযোগী শব্দই আহতনাদ রূপে প্রকাশিত হয়।