বিনায়ক রাও পটবর্ধন-এর স্বরলিপি

পণ্ডিত বিষ্ণুদিগম্বর পলুস্কর -এর শিষ্য ছিলেন পণ্ডিত বিনায়ক রাও পটবর্ধন পণ্ডিত বিষ্ণুদিগম্বর পলুস্কর -কর্তৃক প্রবর্তিত বিষ্ণুদিগম্বর স্বরলিপি বেশ জটিল ছিল। তাছাড়া তৎকালীন মুদ্রণ ব্যবস্থায় এই স্বরলিপি যথাযথভাবে ছাপানো মুশকিল ছিল। এই অসুবিধা দূর করার জন্য পণ্ডিত বিবায়ক রাও পটবর্ধনএই স্বরলিপি প্রণয়ন করেছিলেন। তবে বিষ্ণুদিগম্বর স্বরলিপি
'র সাথে এই স্বরলিপির খুব বেশি পার্থক্য নেই। নিচে এই স্বরলিপি পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।


১. স্বর-চিহ্ন : স্বরের জন্য সাধারণভাবে যে সকল সঙ্কেত ব্যবহৃত হয়, তা হলো

       সাধারণ শুদ্ধ স্বরচিহ্ন : সা রে গ ম প ধ নি
       কোমল স্বরের নিচে হসন্ত বসে। যেমন কোমল ঋষভ হবে

       কড়ি মধ্যমে ম-এর নিচে উল্টো হসন্ত বসে। কেউ কেউ শুধু ম ব্যবহার করেন।  যেমন- বা ম।

২. স্পর্শস্বর : কোনো স্বরের পূর্বে যখন অন্য স্বর নিমেষকালস্থায়ী হয়, তবে তা মূল স্বরের বামপ্রান্তে ঊর্ধ্বলিপিতে যুক্ত থাকবে।  যেমন

                 গ          মূল স্বর
                 র           স্পর্শ স্বর
            স্বরলিপিতে তা প্রকাশিত হবে
 রেগ।

৩. রেশস্বর : কোনো স্বরের পরে যখন অন্য স্বর নিমেষকালস্থায়ী হয়ে, একটি রেশ সৃষ্টি করে মাত্র, তখন তা মূল স্বরের ডানপ্রান্তে ঊর্ধ্বলিপিতে যুক্ত থাকবে। 
যেমন

                 গ          মূল স্বর
                 ম           রেশ স্বর
            স্বরলিপিতে তা প্রকাশিত হবে- গ

. মীড় চিহ্ন : গানের সুর যখন এক স্বর থেকে গড়িয়ে অন্য স্বরে যায়, তখন তা মীড় হিসাবে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে যতমাত্রা এবং যে স্বর পর্যন্ত গড়িয়ে যাওয়ার বিষয় ঘটে, ঠিক সেই পর্যন্ত স্বরের নিচে মীড় চিহ্ণ বসে। যেমন
                                               

৫. মাত্রা প্রকাশক চিহ্ন : মাত্রা বিচারে এর মান হবে লঘু, দ্রুত, অণুদ্রুত, অণু-অণুদ্রুত।

৬. স্বরের প্রলম্বিত অংশে বাণীরা সাথে সুরের সমন্বয়
কোনো স্বর একাধিক মাত্রা নিয়ে রেশ রেখে চলতে থাকলে, তাহলে উক্ত স্বরের পরবর্তী মাত্রাগুলো সেখানে ইংরেজি
s বর্ণ দিয়ে প্রকাশ করা হয়। আর বাণী অংশে ওই প্রলম্বিত অংশে ০ বসে। যেমন

                           

৭. কোন স্বর যদি বক্র বন্ধনীতে আবদ্ধ থাকে, তাহলে ওই স্বর দুইভাবে গীত বা বাদিত হতে পারে। যেমন

৮. তাল চিহ্ন :

সম চিহ্ন ১, ফাঁক চিহ্ন + অন্যান্য তালি সংখ্যা অঙ্কবাচক হয়, তবে তা নির্ধারিত হয় মাত্রার বিচারে। যেমন-


 | ধা ধিন িন ধা | ধা ধিন িন ধা  | না তিন তিন তা | তেটে ধিন ধিন ধা |
   ১                    ৫                   +           
         ১৩


সূত্র :
সংগীত পরিচিতি (উত্তর ভাগ)। শ্রীনীলরতন বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ এপ্রিল, ১৯৭৯।
রাগাঙ্কুর। প্রফুল্লকুমার দাস।