পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুরের স্বরলিপি

পণ্ডিত বিষ্ণুদিগম্বর পলুস্কর
-এর সুযোগ্য শিষ্য পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুর  এই স্বরলিপি তৈরি করেন। নিচে এই স্বরলিপিতে ব্যবহৃত চিহ্নসমূহ দেখানো হলো। ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে পণ্ডিত বিষ্ণুদিগম্বর পলুস্কর-এর গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ের লাহোর শাখার অধ্যক্ষ ছিলেন। এই সময় তিনি  বিষ্ণুদিগম্বর পলুস্কর প্রণীত বিষ্ণুদিগম্বর স্বরলিপি'র অনুসরণ করতেন।

১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারুচে ফিরে এসে নিজেই একটি সঙ্গীত-বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল গন্ধর্ব নিকেতন। সম্ভবত এই সময়ে তিনি তাঁর শিষ্যদের জন্য এই স্বরলিপি প্রণয়ন করেছিলেন। উল্লেখ্য । এই স্বরলিপি অপেক্ষাকৃত জটিল এবং তৎকালীন মুদ্রণ ব্যবস্থায় যথাযথভাবে
বিষ্ণুদিগম্বর স্বরলিপি ছাপানো মুশকিল ছিল। এই অসুবিধা দূর করার জন্য পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুর এই স্বরলিপি প্রণয়ন করেছিলেন। নিচে এই স্বরলিপি পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।

১. স্বর-চিহ্ন : স্বরের জন্য সাধারণভাবে যে সকল সঙ্কেত ব্যবহৃত হয়, তা হলো

      

শাস্ত্রীয় নাম

স্বরসঙ্কেত

ষড়্‌জ

সা

কোমল ঋষভ

রি্

ঋষভ

রি

কোমল গান্ধার

গ্

গান্ধার

মধ্যম

কড়ি মধ্যম বা তীব্র মধ্যম

ম্

পঞ্চম

কোমল ধৈবত

ধ্

ধৈবত

কোমল নিষাদ

নি্

নিষাদ

নি


. স্বর-সপ্তকে ব্যবহৃত স্বরচিহ্ন : স্বরসপ্তক উদারা, মুদারা ও তারা অনুসারে স্বরচিহ্ন নির্ধারিত হয়। উদারা সপ্তকের জন্য স্বরচিহ্নের নিচে বিন্দু চিহ্ন বসে। মুদারা সপ্তকে কোনো বাড়তি চিহ্ন বসে না। তারা সপ্তকে স্বরের উপরে বিন্দু চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন

  উদারা সপ্তক  :
         


মুদারা  সপ্তক :
        সা রি্ রি গ্ গ ম ম্ প ধ্ ধ নি্ নি

তারা সপ্তক :  
          

. শ্রুতি প্রকাশক স্বরচিহ্ন : এই স্বরলিপিতে শ্রুতি প্রকাশক কোনো চিহ্ন নেই।

৪. স্পর্শস্বর : এই স্বরলিপিতে স্পর্শস্বরের জন্য মূল স্বরের পাশে  ঊর্ধ-স্বরসঙ্কেত ব্যবহার করা হয়। যেমন-
                    গ

৪. রেশস্বর : এই স্বরলিপিতে রেশস্বরকেও একই পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়, তবে রেশস্বরকে মূল স্বরের পরে ব্যবহার করা হয়
                    প

৫. মীড় চিহ্ন : গানের সুর যখন এক স্বর থেকে গড়িয়ে অন্য স্বরে যায়, তখন তা মীড় হিসাবে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে যতমাত্রা এবং যে স্বর পর্যন্ত গড়িয়ে যাওয়ার বিষয় ঘটে, ঠিক সেই পর্যন্ত স্বরের উপরে মীড় চিহ্ণ বসে। যেমন
                                               

৬. স্বরচিহ্নে মাত্রা প্রকাশক সঙ্কেত : সাধারণ স্বরজ্ঞাপক চিহ্নের সাথে তালের ১ মাত্রার জন্য কোনো পৃথক চিহ্ন নেই।

৭. তাল চিহ্ন :

    × সম
    ০ ফাঁক
এছাড়া যত মাত্রায় তালি থাকবে, তার মান লেখা হবে। এক্ষেত্রে কত সংখ্যক তালি তা উল্লেখ করা হয় না। ‌এছাড়া প্রতি মাত্রার পর থাকবে মাত্রা বিভাজক উলম্ব রেখা। ছন্দোবিভাজনের পর এই উলম্ব রেখা মোটা হবে। নিচে ত্রিতালে এর নমুনা দেখানো হলো।

ধা | ধিন | ধিন | ধা | ধা | ধিন | ধিন | ধা |  না | তিন | তিন | না | তেটে | ধিন ধিন | ধা
×         ৫           ০          ১৩