মূর্ছনা
ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রে নানা অর্থে মূর্ছনা শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন- গ্রাম-মূর্ছনা, স্বর-মূর্ছনা, বাদ্য-মূর্চ্ছনা, রাগ-মূর্ছনা ও তান-মূর্ছনা। ভরতের নাট্যশাস্ত্রে প্রথম মূর্ছনা'র একটি সংজ্ঞা পাওয়া যায়। এই সংজ্ঞা অনুসারে- ক্রমযুক্ত স্বরসপ্তককে মূর্চ্ছনা বলে। পরবর্তী সময়ে মতঙ্গ তাঁর বৃহদ্দেশী গ্রন্থে- এর একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। বৃহদ্দেশীতে প্রথম বলা হয়েছে- এই মূর্ছা থেকে মূর্ছনা হয়েছে। যে ক্রিয়াতে রাগ মোহগ্রস্থ হয়, তাই হলো মূর্ছনা। এর পরেই বলা হয়েছে- সপ্তস্বরের আরোহ ও অবরোহ ক্রম-প্রযুক্ত হলে, বিচক্ষণ ব্যক্তিরা তাঁকে মূরচ্ছনা বলে থাকেন। কিন্তু নান্যদেব বা নান্যভূপাল তাঁর ভরত-ভাষ্যম গ্রন্থে লিখেছেন- যে স্বর থেকে আরোহণ শুরু হয়ে, সেই স্বরেই যখন শেষ হবে তখন তাকে মূর্ছনা বলা হবে। এই স থেকে র্সা যদি আরোহণের শুরু হয়, তবে তা হবে স্বরাষ্টক।

বৃহদ্দেশীতে ১২টি স্বরের দ্বাদশস্বর মূর্চ্ছনার কথা উল্লেখ করেছেন। স্বর সংখ্যার বিচারে মূরচ্ছনাকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। ভাগ দুটি হলো- সপ্তস্বর মূর্চ্ছনা ও দ্বাদশদ্বর মূর্ছনা।

ষড়্‌জ গ্রামের মূর্ছনা

সঙ্গীতরত্নাকর নারদমত আরোহণ অবরোহণ
উত্তরমন্দ্রা উত্তরবর্ণা

স র গ ম প ধ ন

ন ধ প ম গ র স

রজনী অভিরুদ্‌গতা ন্ স র গ ম প ধ ধ প ম গ র স ন্
উত্তরায়তা অশ্বক্রান্তা ধ্‌ ন্ স র গ ম প প ম গ র স ন্ ধ্
শুদ্ধষড়্‌জা সৌবিরী প্ ধ্‌ ন্ স র গ ম ম গ র স ন্ ধ্ প্
মৎসরীকৃৎ হৃষ্যকা ম্ প্ ধ্‌ ন্ স র গ গ র স ন্ ধ্ প্ ম্
অশ্বক্রান্তা উত্তরায়তা গ্ ম্ প্ ধ্‌ ন্ স র র স ন্ ধ্ প্ ম্ গ্
অভিরুদ্‌গতা রজনী র্ গ্ ম্ প্ ধ্‌ ন্ স স ন্ ধ্ প্ ম্ গ্ র্

মধ্যম গ্রামের মূর্ছনা

সঙ্গীতরত্নাকর নারদমত আরোহণ অবরোহণ
সৌবিরী আপ্যায়নী

 ম প ধ ন র্স র্র র্গ

র্গ র্র র্স ন ধ প ম

হরিনাশ্বা বিশ্বহৃতা গ ম প ধ ন র্স র্র র্র র্স ন ধ প ম গ
কলোপনতা চন্দ্রা র গ ম প ধ ন র্স র্স ন ধ প ম গ র
শুদ্ধমধ্যা হেমা স র গ ম প ধ ন ন ধ প ম গ র স
মার্গী কপর্দ্দিণী ন্ স র গ ম প ধ ধ প ম গ র স ন্
পৌরবী মৈত্রী ধ্ ন্ স র গ ম প প ম গ র স্ ন্ ধ্
হৃষ্যকা চন্দ্রাবতী প্ ধ্ ন্ স র গ ম ম গ র স্ ন্ ধ্ প্

স্বরের সংখ্যার উপরে মূর্ছনা ৪ প্রকার হতে পারে। এই প্রকার চারটি হলো―
     ১. সম্পূর্ণ (সাত স্বরের সবগুলো নিয়ে গঠিত)
     ২. ষাড়ব (৬টি স্বর নিয়ে গঠিত)
     ৩. ঔড়ব (৫টি স্বর নিয়ে গঠিত)
     ৪. সাধারণা (অন্তর গান্ধার এবং কাকলি নিষাদযুক্ত)

 


তথ্যসূত্র: