- হ্রস্ব = ১ মাত্রা
- দীর্ঘ= ২ মাত্রা
- প্লুত=৩ মাত্রা।
ভরতের নাট্যশাস্ত্রে চঞ্চৎপুট তালের বিবরণে বলা হয়েছে- দুটি দীর্ঘ অক্ষর, একটি হ্রস্ব অক্ষর এবং শেষ অক্ষরটি হবে প্লুতো। অন্যদিকে চাচপুটে থাকবে একটি দীর্ঘ অক্ষর, দুটি হ্রস্ব অক্ষর ও অন্তে একটি প্লুত। এই সকল বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রাচীন ভারতে সুরের প্রবাহের বিচারের তালের বিচারের পরিবর্তে- গানের শব্দের অক্ষরভিত্তিক বিন্যাস উপস্থাপন করা হয়েছে। একালের বিচারে তাল বলতে যা বুঝায়, প্রাচীন ভারতের তাল গুলো সেরূপ না। এই বিচারে প্রাচীন যেগুলো তাল হিসেবে উল্লেখ করা হতো, তা ছিল মূলত ছন্দবিন্যাস। যে সকল কাব্যপদ আবৃত্তি করা হতো- সেগুলো ছন্দ নামে অভিহত হতো। পক্ষান্তরে গানে ব্যবহৃত ছন্দগুলোকে তাল বলা হতো।
এই ধারার সূত্রপাত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দের দিকে বৈদিক ঋকমন্ত্রের ছন্দের মাধ্যমে। গান্ধর্ব গানের মার্গীয় সঙ্গীত তথা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রবন্ধগীতের অনিবদ্ধ চর্যপাদ রচনার শেষলগ্নে অর্থাৎ ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সংস্কৃত ছন্দের দৃঢ় বন্ধনে ছিল। প্রবন্ধ গান থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আদি ধ্রুপদের অধ্যায় শুরু হয়েছিল প্রাক্ সুলতানি আমলে। এই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল আদি ধ্রুপদীয় তাল। ভারতের নানা প্রান্তে ধ্রুপদের নানা রকম তৈরি হলেও সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি দিল্লীর রাজত্বকালে (১২৯৬-১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দ) ধ্রুপদের একটি আদর্শরূপ লাভ করেছিল। আলাউদ্দীন খিলজির রাজসভার সঙ্গীত নায়ক আমির খসরু ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে পারশ্যের সঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটিয়ে- ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটি নবতর অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন। এই সময় ঐতিহ্যগত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধারাকে সুলতানের দরবারে উপস্থাপন করে সুলতানের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছিলেন বৈজু বাওরা ও গোপাল নায়ক। এঁদের রচিত ধ্রুপদের সূত্রে যে সকল তালের পরিচয় পাওয়া যায়, সেগুলো হলো-
আড়াচৌতাল, চৌতাল, ঝাঁপতাল, ঢিমা তেতালা, তেওরা, ধামার, রূপক, বিষ্ণুতাল, ব্রহ্মতাল, সওয়ারী, সুরফাঁকতাল
এজু নাদ দরিয়াবা তাপৈ তন জহাজ কিনে। হাম্বীর। ঝাঁপতাল [সূত্র: সঙ্গীতচন্দ্রিকা। গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়]
৭৫৭