মিশরের তুরিন যাদুঘরে রক্ষিত পিতাহ-এর মূর্তি

পিতাহ
ইংরেজি: Ptah
প্রাচীন মিশরে এর উচ্চারণ ছিল পিতাহ্ (
Pitaḥ)।
হাইরোগ্লিফ:

মিশরীর পৌরাণিক কাহিনি মতে সৃষ্টিকর্তা। এছাড়া তাঁকে শিল্পকলা, স্থাপত্যকলা, উর্বতার দেবতা হিসেবেও মান্য করা হতো। মেমফিস নগরের তিনি ছিলেন প্রধান দেবতা।

বিশ্বজগতের সবকিছু তৈরির আগে এই দেবতা ছিলেন। তিনি স্বয়ম্ভূ ছিলেন, তাই তার কোনো পিতা মাতার নাম মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনিতে পাওয়া যায় না। তাঁর ভাবনা এবং বিশ্বজগৎ সৃষ্টির কল্পনা থেকে মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছিল। তাই প্রাচীন মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনি মতে ধারণা করা হতো
পৃথিবীর সকল জীবজন্তু, উদ্ভিদ, প্রাকৃতিক উপাদান তাঁর ইচ্ছায় বা নির্দেশে তৈরি হয়েছিল।

এই দেবতা, পরবর্তী সময়ে মানুষকে শিখিয়েছিলেন স্থাপত্যকর্ম, ধাতুর ব্যবহার, কাঠের কাজ, নৌকা তৈরির কৌশল এবং ভাস্কর্য। পৌরাণিক মধ্যযুগে পাঁচজন প্রধান দেবদেবীর একজন ছিলেন। অপর চারজন ছিলেন রা, আইসিস, ওসিরিস এবং আমুন। মেমফিস নগরীতে তিনি বিশেষভাবে পূজিত হতেন।

মিশরের পৌরাণিক যুগের ইতিহাসে, তাঁকে প্রথম শাসক হিসেবে অনেকে বিবেচনা করে থাকেন। তিনি সেখমেত এবং বাস্টকে বিবাহ করেছিলেন। এদের সন্তান ছিলেন মাহেজ ও নেফার্তেম।

মিশরের  প্রাচীন হের্মোপোলিস (Hermopolis)। এই শহরের প্রাচীন নাম ছিল খ্‌মুন। হের্মোপোলিস-এ ৮জন দেব-দেবীর পূজা করা হতো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। এই ৮জন দেবদেবী এবং এঁদের পূজাকে বলা হতো ওগ্‌দোয়াদ্ (Ogdoad)। খ্রিষ্টপূর্ব ২৬৮৬ থেকে ২১৩৪ অব্দ প্রর্যন্ত মিশরের প্রাচীন রাজ্যে ওগ্‌দোয়াদ প্রচলিত ছিল। এই ৮জনের তালিকা থেকে পিতাহ বাদ পড়েছিল।

এই ৮জন দেব-দেবী ভিতরে ছিলেন চারজন দেবতা এবং তাঁদের স্ত্রী ছিলেন চারজন দেবী। এঁরা ছিলেন

    দেবতা নাউনেৎ
দেবী নুন
    দেবতা আমুনেৎ
দেবী আমুন
    দেবতা কাউকেট
দেবী কুক
    দেবতা হাউহেৎ
দেবী হুহ

ঊনবিংশতম ফারাও রাজবংশের দ্বিতীয় রামেসেস-এর শাসনামলে মুসা (আঃ) যে একেশ্বরবাদ প্রচার করেছিলেন, তা প্রাচীন মিশরীয় এই পিতাহ্-এর সাথে মিল পাওয়া যায়। তবে পিতাহ্-এর মূর্তি ছিল এবং তার পূজা করা হতো। কিন্তু মুসা (আঃ) যে ঈশ্বরের কথা বলেছিলেন তার কোনো মূর্তি ছিল না। ধারণা করা হয়, মুসা (আঃ)-এর সময় মিশর পৌত্তালিক ধর্মের প্রাধান্যের কারণে, পিতাহ অবহেলিত হয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। এই অর্থে ইহুদী, খ্রিষ্টান এবং ইসলাম এই ধর্মমতে উল্লেখ পাওয়া যায় 'সৃষ্টিকর্তা'কে ভুলে যাওয়া।


সূত্র :