সুদর্শনচক্র
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে—
পৌরাণিক অস্ত্র
বিশেষ।
এই অস্ত্রের অধিকারী ছিলেন একমাত্র
বিষ্ণু।
এই অস্ত্র ছিল অগ্নিময় চক্রাকার। এই অস্ত্র নিক্ষেপ করলে, তা শত্রুদের বিনাশ করে,
বিষ্ণু
কাছেই ফিরে আসতো। এই শত্রু দমনে
বিষ্ণু
এই চক্র বহুবার ব্যবহার করেছেন। যেমন-
সমুদ্রমন্থন শেষে উত্থিত অমৃত
দানবদের বঞ্চিত করে দেবতারা পান করেছিল।
রাহু
ছদ্মবেশে
অমৃত পান করার সময়,
চন্দ্র
ও
সূর্য
তা
দেখে ফেলেন এবং দেবতাদের তা জানিয়ে দেন। এরপর
বিষ্ণু
সুদর্শন চক্র দিয়ে রাহুর মস্তক
কেটে ফেলেন। অমৃতলাভের ফলে তার মস্তকাংশ অমরত্ব লাভ করেছি। রাহুর মস্তক আকাশে উঠে
গর্জন করতে থাকে, কিন্তু দেহাংশ ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়।
সমুদ্র মন্থনের পর অমৃতলাভ করতে না পেরে দানবরা দেবতাদের আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে
দেবতারা অসহায় বোধ করলে, বিষ্ণু যুদ্ধক্ষেত্রে আসেন, এবং দানবদের উপরে পুনরায়
সুদর্শনচক্র নিক্ষেপ করেন।
মহাভারতে এই অস্ত্রের ভয়ঙ্কর রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, 'নারায়ণ-বিক্ষিপ্ত
ভীষণ সুদর্শনাস্ত্র মহাবেগে ধাবমান হইয়া সহস্র সহস্র দানবদলের প্রাণসংহার করিল।
কোন স্থলে সমুজ্জ্বল হুতাসনের ন্যায় প্রজ্বলিত হইয়া দৈত্যকুল নিপাত করিল, কোথাও
বা আকাশমণ্ডলে ও ধরাতলে পরিভ্রমণপূর্ব্বক পিশাচের ন্যায় তাহাদিগের রুধির পান
করিতে লাগিল।'
এই অস্ত্রের আঘাতে দানবদের মূল অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
শেষপর্যন্ত অবশিষ্ট দানবরা পালিয়ে যায় এবং দেবতারা জয়লাভ করে।
পরে দেবতারা অমৃতভাণ্ড
বিষ্ণুর কাছে গচ্ছিত রেখে আনন্দোৎসবে মেতে উঠে।
[সূত্র: মহাভারত। আদি পর্ব।
অষ্টাদশ-ঊনবিংশ অধ্যায়]