পিঠা
বানান বিশ্লেষণ: প্+ই+ঠ্+আ
উচ্চারণ:
pi.ʈʰa (পি.ঠা)
শব্দ-উৎস:
১.সংস্কৃত পিষ্টক> প্রাকৃতপিট্‌ঠঅ> বাংলাপিঠা
অর্থ: মুখোরোচক চাউল, গম বা অন্যকোন শষ্যের গুড়া দিয়ে এই জাতীয় খাবার তৈরি করা হয়। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধানের চাল থেকে গুঁড়া তৈরি করে হয়। বিশেষ করে শীতকালে বাংলার ঘরে ঘরে পিঠা তৈরি করা হয়।

এরপর এই চালের গুঁড়ো ব্যবহার করে পিঠা তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে গুঁড়োকে চারভাবে ব্যবহার করা হয়।

গুঁড়োর ব্যবহার:

১. লেই জাত: গুঁড়োর সাথে পানি মিশেয়ে লেই তৈরি করা হয়। যেমন- চিতোই পিঠা, পাকান পিঠা, পাটি সাপ্টা।
২. মণ্ড জাত: এক্ষেত্রে শষ্য গুঁড়োকে পানি মিশিয়ে ছোটো ছোটো মণ্ড তৈরি করা হয়। যেমন: মুঠো পিঠা। অনেক পিঠাতে এই মণ্ডকে ছোট ছোট পাতলা রুটির মতো করা হয়, এরপর এই রুটির ভিতরে অন্য কোনো মুখোরোচক উপাদান যুক্ত করে পুলিজাতীয় পিঠা তৈরি করা হয়।
৩. দানাদার: শষ্যগুঁড়োতে অল্প পানি মিশিয়ে দানাদার গুঁড়োতে পরিণত করা হয়। পরে এই গুঁড়ো পিঠাতে ব্যবহার করা হয়। ভাপা পিঠাতে এরূপ দানাদার গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়।

তৈরি প্রক্রিয়ার উপকরণ: সাধারণত শষ্যগুঁড়াকে পানি মিশিয়ে গাঢ় তরল উপকরণ তৈরি করা হয়, কিম্বা অল্প পানি দিয়ে মণ্ড বা দানাদার গুঁড়োতে পরিণত করা হয়। এরপর পিঠার প্রকৃতি অনুসারে তৈরির উপরকরণ ব্যবহার করা হয়। যেমন-

অল্প তেলের ব্যবহারে তাওয়ায় ভাজা হয়। যেমন: পাটি সাপ্টা
উত্তপ্ত তেলে ভাজা হয়। যেমন: পাকান পিঠা।
ভাপে সিদ্ধ করে তৈরি করা হয়। যেমন: ভাপা পিঠা
গরম পানিতে ডুবিয়ে তৈরি করা হয়। যেমন: মুঠো পিঠা
তেল, পানি ছাড়াই সরাসরি তাওয়াতে ভাজা হয়। যেমন: চিতোই পিঠা।
 

স্বাদন উপকরণ: পিঠা সাধারণত মিষ্টিযুক্ত হয়। তবে ঝাল, টক ইত্যাদি স্বাদের পিঠাও তৈরি করা হয়। এছাড়া বাড়তি কোনো আস্বাদন উপকরণ যুক্ত না করেও পিঠা তৈরি করা হয়। যেমন চিতোই পিঠা, মুঠো পিঠা।

মিষ্টি স্বাদের জন্য  আখের গুড়, খেজুরের গুড়, খেজুরের রস, চিনি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কোনো পিঠা তেলে ভাজার জন্য বিশেষ স্বাদের হয়ে থাকে। তেলেভাজা বা পাকান পিঠা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কোনো কোনো পিঠায় বিশেষ স্বাদ তৈরি করার জন্য রসে বা দুধে ডুবিয়ে রাখা হয়। একে রস পিঠা বা দুধ-ভিজানো পিঠা বলা হয়। পুলি জাতীয় পিঠায় ক্ষীর, নারকেল, মংসের কিমা, ঝালযুক্ত সব্জি  ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।  

অন্য কোনও শষ্যজাত গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয়। এলাকা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন এবং আলাদা রকম পিঠা তৈরি হয়ে থাকে।  মিষ্টি, ঝাল, টক বা অন্য যে কোনও স্বাদ হতে পারে। এছাড়া কিছু পিঠা তৈরি করা হয়, যেগুলোতে বাড়তি কোনো স্বাদ যুক্ত করা হয় না।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পিঠার নাম: 
কুলশি, চিতোই, পাকান, পাটি সাপ্টা, ভাপা, রস, মালপোয়া


শব্দ-উৎস: ২. সংস্কৃত পীঠ>প্রাকৃত পীঢ>বাংলা পিঠ, পিঠাপিঠা
অর্থ:

১. বেদী, পীঠ। 
২. পিঁড়ি।