ভাইকিং
বানান বিশ্লেষণ: ভ্+আ+ই+ক্+ই+ং
উচ্চারণ:
vai.kiŋ (ভাই.কিং)
শব্দ-উৎস: প্রাচীন নর্স (vīkingr স্ত্রীবাচক শব্দ)>ইংরেজি Viking>বাংলা ভাইকিং।
পদ:
বিশেষ্য

ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা  {| স্ক্যান্ডিনেভিয়ান | ইউরোপীয় | অধিবাসী | ব্যক্তিসত্তা | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
সমার্থ্ক শব্দাবলি: ভাইকিং, নর্স।
ইংরেজি:
Viking, Norse, Northman

খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে একাদশ শতাব্দীর ভিতরে স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের যে কোনো জলদস্যুদের দলকে এই শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা হয়। মূলত খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দী থেকে দশম শতাব্দী পর্যন্ত এরা বংশ পরম্পরায়
ইউরোপের বিরাট এলাকা জুড়ে লুটতরাজ, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ড ঘটাতো। এই সময়ে এরা ইউরোপের বিভিন্ন এলাকা জবর দখল করে বসতি স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। উত্তরমেরুর নিকটবর্তী অঞ্চলের জাতি হিসেবে এদেরকে এক সময় নর্থম্যান (Northman) নামেও অভিহিত করা হতো। এদের আদি বাসস্থান ছিল নরওয়ে, ডেনমার্ক এবং সুইডেন।

এদের অধিকাংশ যোদ্ধারা ছিল লম্বা এবং চওড়া। শারীরিক শক্তিতে ইউরোপীয় অন্যান্য জাতির লোকদের চেয়ে শক্তিশালী ছিল। গোড়ার দিকে এদের প্রধান অস্ত্র ছিল কুড়াল। পরে দীর্ঘ এবং ভারি তরবারি ব্যবহার শুরু করে।

ইংল্যাণ্ডের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জুন ভাইকিংরা উত্তর-পূর্ব সমুদ্র উপকূলীয় দ্বীপ লিন্ডিসফারন (Lindisfarne) আক্রমণ করে। এরা এখানকার ধর্মীয় মঠ আক্রমণ করে- নির্বিচারে বহু সাধুসন্তদের হত্যা করে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। এছাড়া মঠের সমুদয় সম্পদ লুট করে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের ধরে নিয়ে গিয়ে যায়। এদেরকে পরে এরা দাস বানায়। পরবর্তী সময় এরা ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ, ফ্রান্সে আক্রমণ চালায়। সমুদ্রপথে এরা আক্রমণ করতো। এক্ষেত্রে এরা লম্বা দ্রুতগতির নৌকা ব্যবহার করতো। স্থলপথে এরা উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। এরা পূর্বদিকে রাশিয়া ও কনষ্ট্যান্টিনোপল পর্যন্ত এদের আক্রমণের বিস্তার ঘটেছিল। অন্যদিকে পশ্চিম দিকের গ্রীনল্যান্ডে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয়েছিল। স্কান্ডিনেভিয়ার স্থানীয় মানুষ খ্রিষ্টর্ধমে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করলে ভাইকিংরা ধীরে ধীরে খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হয়। এক সময় এরা যুদ্ধ পরিত্যাগ করে ইউরোপের অন্যান্য জাতির সাথে মিশে যায়।