রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে প্রাপ্ত ২৯টি নারী মূর্তিকে সাধারণভাবে মাল্টা ভেনাস নামে
অভিহিত করা হয়।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে বৈকাল হ্রদের
কাছে আঙ্গারা নদীর তীরবর্তী মাল্টা প্রত্নক্ষেত্রে এই মূর্তিগুলো পাওয়া গেছে।
প্রাপ্তিস্থানের নামানুসারে এগুলোর নাম রাখা হয়েছে
মাল্টা ভেনাস।
ক্রো-ম্যাগনানদের দ্বিতীয়
স্তরের
গ্রাভিটিয়ান
সভ্যতায়
প্রায়
২৩ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে তৈরি হয়েছিল। এই ভেনাসগুলো ম্যামোথের দাঁত এবং
হরিণের শিং খোদাই করে তৈরি করা হয়েছিল। দৈহিক আকারে বিচারে মাল্টা ভেনাসকে দুটি ভাগে
ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটি হলো-
মোটা ভেনাস:
মোটা ভেনাস তৈরি করা হয়েছিল ম্যামোথের দাঁত খোদাই করে। এই ভেনাসগুলোর রয়েছে
বিশাল স্তন, ভারি নিতম্ব ও উরু। পেট বেশ স্ফীত। মোট কথা মাল্টা ভেনাসগুলো
ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে প্রাপ্ত স্থূল ভেনাসের মত করেই তৈরি করা হয়েছিল। এই
মূর্তিগুলো হয়তো মাতৃদেবী হিসেবে বা উর্বরতা ও যৌনতার অধিকর্তী দেবী হিসেবে
মান্য করা হতো।
মূলত, আদিতে হোমো নিয়ানডার্থালেনসিস
এবং
হোমো ইরেক্টাসদের
সৃজনশীল ক্ষমতার সূত্রে
আদিম মাতৃদেবীর মূর্তি সৃষ্টির সূত্রপাত হয়েছিল, সেই ধারারই উত্তরসূরী হিসেবে
ক্রো-ম্যাগনানরাহয়
তৈরি করেছিল মাতৃদেবীর মূর্তি। মূল ধারার মাতৃদেবী হিসেবে স্থূল মূর্তীগুলোকেই
বিবেচনা করা হয়।
সরু
ভেনাস: এগুলো হরিণের শিং খোদাই
করে তৈরি করা হয়েছিল। ফলে স্থূল ভেনাস তৈরির সুযোগ তৈরি হয় নি। উচ্চতার বিচারে
সরু ভেনাসগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সব চেয়ে দীর্ঘ ভেনাসের দৈর্ঘ্য হলো ১৩৬
মিমি। আর ক্ষদ্রতম ভেনাসের দৈর্ঘ্য হলো ৩১মিমি। এর ভিতরে কিছু ভেনাস রয়েছে
৪০-৪৫ মিমি।
এ্ই ভেনাসগুলোর মুখমণ্ডলে নাক, চোখ, ভ্রূ ফুটি তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল। মাথার
চুল জ্যামিতিক ব্লক দিয়ে সাজানো। সম্ভবত কোঁকড়ানো চুল বুঝাতে, এরূপ ব্লক করা
হয়েছিল। শিং-এর গড়ন অনুসারে দেহকাণ্ড সরল বা বাঁকা রূপ লাভ করেছিল। দেহকাণ্ড সরু
হওয়ায় শিল্পী গলার নিচ থেকে যা কাজ করেছেন, তা থেকে নারী মূর্তি বুঝা যায়।
মূর্তিগুলোর কাঁধ নেই। মাথা সরাসরি দেহকাণ্ডের উপর বাসানো। পাশের সরু ভেনাসের
দৈর্ঘ্য ৯৬মিমি।