প্রথা
বানান বিশ্লেষণ :
প্+র্+অ+থ্+আ।
উচ্চারণ:
pro.t̪ʰa
(প্রো.থা)
প্রো.থা [শব্দের আদ্য প্র ধ্বনিটি প্রো -হিসেব উচ্চারিত হবে। অবশিষ্ট থা ধ্বনিটি একাক্ষর হিসেবে উচ্চারিত হবে।]
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
প্রথা>বাংলা
প্রথা।
রূপতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণ:
√প্রথ্
(ভাগ করা) +
অ (অঙ)+আ
(টাপ্),
ভাববাচ্য
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { |
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত সত্তা
|
সত্তা
|}
অর্থ: যা দীর্ঘকাল ধরে চর্চিত হয়ে আসছে।
সমার্থক শব্দাবলি: ধারা, পদ্ধতি, রীতি।
ইংরেজি:
Custom
সমাজবিজ্ঞানের বিচারে প্রথা
সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত কিছু আচরণ বিধি হলো প্রথা। এর ভিতরে রয়েছে কিছু প্রাত্যহিক কাজ
এবং তার প্রণালী এবং সমাজের অন্যান্য সদস্যরা অনুমোদন করে এমন আচরণ। প্রথার সাথে
সমাজের স্বীকৃতির বিষয়টি জড়িত, এই কারণে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এক্ষেত্রে সমাজের
সদস্যদের ভিতরে কিছু অলিখিত বিধি থাকে। এবং তা কারো ব্যক্তিগত অভ্যাসের দ্বারা
বিকৃত হয় না বা তা স্বীকৃত হয় না। যেমন ধূমপান একটি অভ্যাস। এটি কোনো প্রথা নয়।
কিন্তু প্রথাগতভাবে বাঙালি সমাজে গুরুজনদের সামনে ধূমপান করা হয় না। এটা প্রথা।
আবার জীবনধারণের জন্য অত্যবশ্যকীয় কার্যক্রম প্রথা হয় না। যেমন তিন বেলা মানুষ খাবার গ্রহণ করে। এটা প্রথা নয়। কিন্তু কোনো সমাজে যদি পরিবারের পরিবারের প্রধানকে আগে খাবার দেওয়ার রীতি প্রচলিত থাকে, তবে তা প্রথা হবে। অনেকক্ষেত্রে এই জাতীয় প্রথা ঐতিহ্যগত হয়ে যায়। কোনো বিশেষ প্রথা যদি বংশানুক্রমে নিষ্ঠার সাথে এবং শ্রদ্ধার অবশ্যই মান্য করে আসার প্রক্রিয়া পালিত হয়, তখন তা ঐতিহ্যে পরিণত হয়। অনেক সময় প্রথা এবং ঐতিহ্যের পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
প্রথার ভিতরে কিছু নিয়মতান্ত্রিক রীতি রয়েছে, যা পালন করলে ভালো। না মেনেও যদি কাজটি ভালোভাবে করা যায়, বা সমাজের সদস্যরা তা অশিষ্ট মনে না করেন, তাহলে প্রথাকে অগ্রাহ্য করলে ততটা দোষের ধরা হয় না। যেমন- বিবাহে গায়ে হলুদ, ফিরানি, বিয়ের আসরে কন্যাপক্ষের গেট আটকানো ইত্যাদি সাধারণ প্রথা। কিন্তু ঘটনাক্রমে যদি এ সব না মানা হয়, তাহলেও অবস্থা সাপেক্ষে এই প্রথাভঙ্গ দোষণীয় মনে করা হয় না।
সমাজে প্রচলিত প্রথাকে অকল্যাণকর মনে করে অনেক সময় বাতিল করা হয়। এক্ষেত্রে অনেক সময় ধর্মীয় রীতিকে আইন করে প্রথাকে বাতিল করা হয়। যেমন সতীদাহ প্রথা, পণ প্রথা। স্বাস্থ্যগতকারণে অনেক প্রথা বাতিল হয়ে যায়। শিশুর চোখে কাজল পড়ানো। আধুনিক চিকিৎসকদের মতে এটা শিশুর চোখের জন্য ক্ষতিকারক। বর্তমানে এই প্রথা অনেকাংশে মায়েরা বাতিল করে দিয়েছেন। কোনো কোনো ক্ষতিকারক প্রথা পুরানো সংস্কার অনুসরণ করে মান্য করা হয় বা মানতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। এই জাতীয় ক্ষতিকারক প্রথাকে অন্ধের মতো অনুসরণ করার প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে জন্ম নেয় কুসংস্কার।