পিয়ারিক
ইংরেজি :
Pearic।
অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবার-এর
ভাষা উপ-পরিবারে মোট ১৪৮টি ভাষা নিয়ে গঠিত ভাষা-উপরিবারের নাম হলো
মোন্-খ্মের।
পূর্বাঞ্চলীয় মোন্-খ্মের।
একসময় এই উপ-শাখার ভাষাগুলো কম্বোডিয়াতে
ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। বস্তুত ত্রয়োদশ শতাব্দীর চীনা উৎস থেকে জানা যায়,
সে সময় কম্বোডিয়াতে প্রত্যেক বাড়িতে দাস রাখার প্রচলন ছিল। এই দাসরা ছিল চোউয়াং
(Tchouang)
ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর। উল্লেখ্য, পিয়ারিক 'চোউয়াং' শব্দের অর্থ হলো‒'জনগণ'।
আবার অনেকে মনে করেন, এই ভাষাগুলো মূল
মোন-খ্মের
ভাষা উপ-পরিবার
অপভ্রংশ। উল্লেখ্য পিয়ার শব্দের অর্থ হলো- দাস। দাসশ্রেণীর লোকেদের ভিতরে এই সকল
ভাষার প্রচলন থাকার কারণে, এই ভাষাগুলোর সাধারণ নাম হয়েছে পিয়ারিক বা 'দাসগোষ্ঠীর
ভাষা'। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতাসীন শাসক বা লুণ্ঠনকারীরা এই দাসদের উপর নির্যাতন
চালানোর ফলে, এদের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। তা ছাড়া ধীরে ধীরে এই ভাষাভাষী লোকেরা
প্রভাবশালী
মোন-খ্মের-এর
অন্যান্য ভাষাকে গ্রহণ করেছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে এই ভাষাভাষীর জনসংখ্যা
আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। বর্তমানে কম্বোডিয়া বিভিন্ন অংশ এবং থাইল্যাণ্ডের সামান্য
কিছু মানুষ পিয়ারিক ভাষা উপশাখার বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে থাকে। খ্রিষ্টীয় ১৮০০ অব্দের দিকে এই ভাষার
কিছু নমুনা রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই ভাষাগুলোর সাথে তার সমাঞ্জস্য
খুঁজে পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয়, এই ভাষাগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আঞ্চলিক ব্যাপ্তির বিচারে পিয়ারিক উপ-শাখা দুটি গোত্রে ভাগ করা হয়ে থাকে। এই ভাগ
দুটি হলো‒
- পূর্বাঞ্চলীয় পিয়ারিক
(Eastern Pearic) :
এই ভাষাগোত্রের একমাত্র ভাষা পিয়ার
(Pear)
নামে পরিচিত।
পিয়ার
(Pear)
: এই ভাষাটি কম্বোডিয়ার দক্ষিণ-পশ্চমাঞ্চলের কম্পোং থোম
(Kompong Thom)
অঞ্চলে সামান্য প্রচলিত রয়েছ। এর অন্যান্য নাম‒
পোর
(Por),
কম্পোং থোম Kompong Thom।
১৯৮৮ সালের সরকারি হিসাব মতে- এই ভাষার মোট জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ১,৩০০।
আন্তর্জাতিক ভাষা সঙ্কেত :
ISO/DIS 639-3: pcb ।
- পশ্চিমাঞ্চলীয় পিয়ারিক
(Western Pearic)
: এই ভাষাগোত্রের মোট ৩টি উপগোত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এই উপগোত্র
তিনটি হলো,
চঙ, সাম্রে ও সুঙ।
- চঙ
(chong) :
চঙ নামক ভাষার নামানুসারে এই
উপগোত্রের নামকরণ করা হয়েছে। এই উপগোত্রের মধ্যে দুটি ভাষার নাম পাওয়া যায়।
এই দুটু ভাষা হলো চঙ এবং সা'ওচ।
- চঙ
(chong) : এই ভাষার লোকেদের অধিকাংশ বসবাস করে কম্বোডিয়াতে। এছাড়া
থাইল্যাণ্ডে এই ভাষার কিছুলোক বসবাস করে। এই ভাষার অন্যান্য নাম : চাউং
(Chawng), শোং
(Shong), জোং
(Xong)। এর কাছাকাছি ভাষা সোমরে
(Somray)।
আন্তর্জাতিক ভাষা সঙ্কেত : ISO/DIS 639-3: cog । ১৯৮৮ সালের সরকারি হিসাব মতে‒
এই ভাষার মোট জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ৫,০০০। ধারণা করা হয়, এই ভাষার মোট
জনসংখ্যা ৫,৫০০-এর বেশি হবে না।
- সা'ওচ
(Sa'och) : এই ভাষার লোকেদের অধিকাংশ বসবাস করে দক্ষিণ-পশ্চিম কম্পোং সোম
(Kompong Som) -এ। এর অন্যান্য নাম‒
সাউচ (Sauch), সাওচ
(Saotch)। আন্তর্জাতিক
ভাষা সঙ্কেত : ISO/DIS 639-3: scq । ১৯৮১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে এই ভাষার
জনসংখ্যা মাত্র ৫০০ জন। এই ভাষার সাথে সাম্রে, সোউই, পিয়ার ভাষার শব্দের মিল
আছে।
- সাম্রে
(samre) :
সাম্রে নামক ভাষার নামানুসারে এই উপগোত্রের নামকরণ করা হয়েছে। এই উপগোত্রের
মধ্যে ২টি ভাষার নাম পাওয়া যায়। এর একটি সাম্রে, অপরটি সোমরে।
- সাম্রে
(samre) : এই ভাষার লোকেদের অধিকাংশ বসবাস করে কম্বোডিয়ার সিয়েমরিপ
অঞ্চলে। এই ভাষার সাথে সা'ওচ, সোউই, পিয়ার ভাষার শব্দের মিল আছে। এর
আন্তর্জাতিক ভাষা সঙ্কেত ISO/DIS 639-3: sum। ২০০০ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে এই
ভাষার জন সংখ্যা ৫০-২০০ এর মধ্যে।
- সোম্রে
(Somray)
: এই ভাষার লোকেদের অধিকাংশ বসবাস করে কম্বোডিয়ার পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব ফুম
টাসানহ (Phum Tasanh),
এবং টানিয়ং নদী তীরবর্তী অঞ্চলে। এই ভাষার সাথে চঙ
(chong)
ভাষার বেশ মিল পাওয়া যায়। এর আন্তর্জাতিক ভাষা সঙ্কেত
ISO/DIS 639-3: smu।
১৯৮১ সালের হিসাব অনুসারে এর লোকসংখ্যা ২০০০ জন।
- সুঙ বা
সোউই (suung
বা souy)
: এই উপগোত্রের একমাত্র ভাষা সুঙ
বা সোউই। এই ভাষার নামানুসারে এই উপগোত্রের নামকরণ করা হয়েছে। এই ভাষার সাথে সা'ওচ,
সাম্রে ও পিয়ার ভাষার মিল পাওয়া যায়। এর আন্তর্জাতিক ভাষা সঙ্কেত
ISO/DIS 639-3: syo।
১৯৮১ সালের হিসাব অনুসারে এর জনসংখ্যা মাত্র ২০০ জন।
সূত্র :
http://en.wikipedia.org/wiki/Austroasiatic_languages
http://www.ethnologue.com/subgroups/eastern-mon-khmer