অর্ধ-চন্দ্রাসনে আলো |
অর্ধ-চন্দ্রাসন
যোগশাস্ত্রে বর্ণিত
আসন বিশেষ।
অর্ধেক চাঁদের আকৃতি থেকে এই আসনের নামকরণ করা হয়েছে। যোগীরা একে শক্তি
প্রেরণাদায়ক আসন হিসাবে বিবেচনা করেছেন।
পদ্ধতি
১. প্রথমে দুই পা জোড়া করে দাঁড়ান। এরপর দুই হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে
সোজাভাবে উঠিয়ে, নমস্কারের মতো করে দুই হাতের তালু একত্রিত করুন। এবার এক হাতের
বুড়ো আঙুল দিয়ে, অন্য হাতের বুড়ো আঙুল জড়িয়ে ধরুন। এরপর মাথা এমনভাবে উঁচু করে
রাখুন, যাতে চিবুকের অবস্থান বুক থেকে অন্তত তিন ইঞ্চি দূরে থাকে।
২. এবার সোজা সামনের দিকে দৃষ্টি দিন। পুরো নিঃশ্বাস আটকে রেখে, শরীরের উপরের অংশ
পিছনের দিকে বাঁকাতে থাকুন। এরপর যতটা পারবেন, ততটা পরিমাণ পিছনের দিকে বাঁকিয়ে
শরীরকে অর্ধচাঁদের আকারে আনার চেষ্টা করুন। এই সময় মাথাটাকে যতটা সম্ভব পিঠের ও
নিতম্ব বরাবর আনার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, এইভাবে শরীর বাকানোর সময় যেন হাঁটু ও
কনুই সোজা থাকে।
৩. এবার ১০ সেকেন্ড নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে
চালাতে থাকুন। সেকেন্ডের মাপে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুণে, ধীরে ধীরে সোজা হন।
৪. ১০ সেকেন্ড
শবাসনে বিশ্রাম নিন।
একইভাবে আসনটি পরপর তিনবার করার পর চূড়ান্ত বিশ্রাম নিন।
পার্শ্ব অর্ধ-চন্দ্রাসনে আলো |
বিকল্প অর্ধচন্দ্রাসন
(পাশ্ব-অর্ধচন্দ্রাসন)
পদ্ধতি
১. প্রথমে দুই পা জোড়া করে দাঁড়ান। এরপর দুই হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে
সোজাভাবে উঠিয়ে, নমস্কারের মতো করে দুই হাতের তালু একত্রিত করুন। এবার এক হাতের
বুড়ো আঙুল দিয়ে, অন্য হাতের বুড়ো আঙুল জড়িয়ে ধরুন। এরপর মাথা এমনভাবে উঁচু করে
রাখুন, যাতে চিবুকের অবস্থান বুক থেকে অন্তত তিন ইঞ্চি দূরে থাকে।
২. এবার সোজা সামনের দিকে দৃষ্টি দিন। পুরো নিঃশ্বাস আটকে রেখে, শরীরের উপরের অংশ
ডান দিকে বাঁকাতে থাকুন। দেহটা অর্ধ-চন্দ্রের আকারে আনার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন,
এইভাবে শরীর বাকানোর সময় যেন হাঁটু ও কনুই সোজা থাকে।
৩. এবার ১০ সেকেন্ড নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে
চালাতে থাকুন। সেকেন্ডের মাপে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুণে, ধীরে ধীরে সোজা হন।
৪. এবার শরীরকে বাম দিকে বাঁকিয়ে অর্ধচন্দ্রের ভঙ্গিমাতে আসুন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : শরীর অর্ধচন্দ্রের রূপ নিচ্ছে কিনা, তা বুঝার জন্য
আয়নার সামনে এই আসনটি করতে পারেন।
৫. ১০ সেকেন্ড
শবাসনে বিশ্রাম নিন।
একইভাবে আসনটি পরপর তিনবার করার পর চূড়ান্ত বিশ্রাম নিন।
অনেকে শরীরকে পিছনের দিকে না বাঁকিয়ে ডান বা বাম পার্শ্ব বরাবর বাঁকিয়ে থাকেন। এর
ফলে শরীরের পার্শ্ব বরাবর অর্ধচন্দ্রের আকার ধারণ করে থাকে। এই আসনটিকে অনেক
ক্ষেত্রে পার্শ্ব-অর্ধচন্দ্রাসন বলা হয়ে থাকে।
উপকারিতা
১. শরীরের আলস্য দূরকরণে এই আসন করা হয়।
২. মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়।
৩. লিভার, কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৪. অজীর্ণ ও কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর হয়।
৫. কোমরের ব্যাথা, পিঠের পেশীর ব্যাথা দূর হয়
৬. পেটের চর্বি দূর হয়।
৭. মেয়েদের স্তনের শৈথিল্য রোধ হয়।
সূত্র :
যোগাসনে রোগ আরোগ্য। ডঃ রমেন মজুমদার
রোগারোগ্যে যোগব্যায়াম। কানাইলাল সাহা
যোগ সন্দর্শন। ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
যোগ ব্যায়াম। সবিতা মল্লিক