বিপরীতকরণী মুদ্রা
যোগশাস্ত্রে বর্ণিত এক প্রকার
মুদ্রা। দেহকে
বিপরীতমুখী অবস্থানে এনে এই মুদ্রার চর্চা করা
হয়। এই কারণে একে বিপরীতকরণী মুদ্রা বলা হয়।
পদ্ধতি
১. প্রথমে সর্বাঙ্গসন
করে দেহকে স্থির করুন।
২. ৩০ সেকেণ্ড এই আসনে থাকা অবস্থায় মলদ্বারকে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত করুন। এক্ষেত্রে
মলদ্বার সংকোচন ও প্রসারণ ৬ বার করে বিরতী দিন। এইভাবে ৩০ সেকেণ্ডে যে কয় বার
সম্ভব করুন।
৩. এবার আসন ত্যাগ করে,
৩০ সেকেণ্ড শবাসনে
বিশ্রাম নিন। এই ভাবে আরও দুইবার এই আসনের সাথে এই মুদ্রার চর্চা করুন।
বিশেষ সতর্কতা
১. যোগাসনে অভিজ্ঞ
কারও পরামর্শ ব্যাতীত এই আসন করাটা উচিত্ হবে না।
২. ৪০ বৎসর বয়সের পর এই
আসন করতে হলে,
কতকগুলো বিষয়ের দিকে নজর দিতে
হবে। যেমন—
ক।
উচ্চ-রক্তচাপের রোগীরা এই আসন করবেন না।
খ।
দুর্বল হৃদপিণ্ডের অধিকারী বা হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই আসন নিষিদ্ধ।
গ।
গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান প্রসবের ৩ মাস পর্যন্ত এই আসন নিষিদ্ধ।
৩. ৪৫ বৎসরের পর থেকে অভ্যাস না করাই বাঞ্ছনীয়।
উপকারিতা
১. এই আসনে
রক্তবাহী ধমনী, উপশিরা বিপরীতমুখী হয়
বলে গলদেশ ও মস্তিষ্ক রক্তে প্লাবিত হয়। ফলে রক্তবাহী নালীকে সতেজ করে এবং
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং
মস্তিষ্কের অবসাদ দূর হয়,
মনের একাগ্রতা ও চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি পায়।
২. থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড, টনসিল, স্যালিভারী প্রভৃতি গ্রন্থিগুলো সতেজ ও সক্রিয়
করে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিসৃত রস যৌবনকে দীর্ঘদিন ধরে রাখতে সহায়তা করে ।
৩.
সর্দি-কাশি,
হাঁপানি,
ব্রঙ্কাইটিস,
টনসিল ইত্যাদি রোগের
উপশম হয়।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য,
অজীর্ণ রোগের উপশম হয়।
৫. মহিলাদের তলপেট ঝুলে
পড়া,
জরায়ুর স্থানচু্যতি,
অনিয়মিত ঋতুস্রাব,
শ্বেতপ্রদর রোগের উপশম
করে।
৬. কাঁধের ও হাতের বাত
নিরাময় হয়।
৭. অর্শ,
হার্নিয়া,
মৃগী রোগের উপশম হয়।
৮. মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা
বৃদ্ধির জন্য সর্বাঙ্গাসন অত্যন্ত উপকারী ।
সূত্র :
যোগাসনে রোগ আরোগ্য। ডঃ রমেন মজুমদার
রোগারোগ্যে যোগব্যায়াম। কানাইলাল সাহা
যোগ সন্দর্শন। ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
যোগ ব্যায়াম। সবিতা মল্লিক
http://horoppayoga.wordpress.com/