শক্তিচালনী মুদ্রা
যোগশাস্ত্রে বর্ণিত এক প্রকার মুদ্রা
শরীরের শক্তি সঞ্চালনের উপযোগিতার বিচারে এই মুদ্রার এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।

দেহের রসস্রাবী গ্রন্থিসমূহ এবং স্নায়ুকে দেহের মূল উপকরণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
মানুষের স্নায়ুরজ্জুর প্রধান ধারক হিসেবে মেরুদণ্ড মস্তিষ্কের নিম্নাংশ থেকে বের হয়ে গুহ্যদেশে এসে শেষ হয়েছে। এর সাথে নাভিপ্রদেশের কিছু অতি প্রয়োজনীয় গ্রন্থি ও স্নায়ুতন্ত্র যুক্ত আছে। যোগশাস্ত্র মতে, দেহের এই অংশেই মূলাধার চক্র অবস্থিত। এই চক্রে রয়েছে সকল নাড়ির মূলবিন্দু। জননেন্দ্রিয় ও গুহ্যদেশের মাঝখানে অবস্থিত স্থানকে বলা হয় কুন্দস্থান। এই কুন্দস্থান থেকে ইড়া, পিঙ্গলা, সুষুম্না, কুহূ, শঙ্খিনী প্রভৃতি প্রধান প্রধান নাড়িগুলো উৎপন্ন হয়েছে। এই চক্রে সকল শক্তির আধার বিদ্যমান থাকে। এই শক্তিকে বলা হয় কুলকুণ্ডলিনী। কুন্দস্থানে এই কুলকুণ্ডলিনী নিদ্রিত সাপের আকারে বিরাজ করে। হিন্দু তন্ত্রমতে শরীরের পদ্মসূত্রের মতো সূক্ষ্ম আদ্যাশক্তি ও প্রাণশক্তির মূল কুলকুণ্ডলিনী শক্তি কুন্দস্থানে ঘুমিয়ে আছেন। সেই মত অনুসরণ করে যোগীরা এই কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগরিত করে ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য এই মূদ্রার চর্চা করা হয়। এই কারণে এই মুদ্রাটি অনেকটা ধ্যানস্থ দশায় করতে হয়।

পদ্ধতি
১. পদ্মাসন, বজ্রাসন বা এমনি কোন সহজ আসনে বসুন।
২. এবার দুই হাত হাঁটুর উপর স্থাপন করুন বা ধরুন।
৩. এবার শ্বাস নিতে নিতে মলদ্বার সংকুচিত করুন এবং তলপেট উপরের দিকে টেনে তুলুন। এর ফলে নাভিদেশ মেরুদণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানে চলে আসবে। এই  অবস্থায় দম বন্ধ করে রাখতে হবে।
৪. এরপর শ্বাসত্যাগের সাথে সাথে তলপেট শিথিল করে দিতে হবে। এই মুদ্রাটি মোট  ২০ থেকে ২৫ বার হবে।

উপকারিতা
১। যৌনগ্রন্থিসমূহ সতেজ ও সবল হবে। এর ফলে যৌনক্ষমতা ও যৌনসংযম বৃদ্ধি পাবে।
২। জীবনীশক্তি, স্মৃতিশক্তি, চিন্তাশক্তি, ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি পায়।


নিষেধ :

১.  ১২ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের জন্যও মুদ্রাটি অভ্যাস করা বারণ।
২. ঋতুমতী না হওয়ার আগে মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ।


সূত্র :
যোগাসনে রোগ আরোগ্য
। ডঃ রমেন মজুমদার
রোগারোগ্যে যোগব্যায়াম। কানাইলাল সাহা
যোগ সন্দর্শন। ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
যোগ ব্যায়াম। সবিতা মল্লিক
http://horoppayoga.wordpress.com/