Kingdom: Animalia |
রাজ বামোশ
ইংরেজি :
Giant Motlled Eel, Indian Longfin Eel
বৈজ্ঞানিক নাম :
Anguilla
bengalensis
(Gray,
1831)
বাংলা : দানব বাইন, রাজ বাম, রাজ বামোশ।
Anguilla গণের একটি প্রজাতি বিশেষ।
এর দুটি উপ-প্রজাতি আছে। এই উপপ্রজাতি দুটি হলো
–
-
Anguilla bengalensis bengalensis
ইংরেজি : Indian mottled eel।
এই উপ-প্রজাতিটি ভারত উপমহাদেশ এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই মাছের দেহ প্রসারিত। দেহের সম্মুখভাগ অনেকটা চোঙ্গাকৃতির। দেহে ত্বকের মধ্যে ক্ষুদ্র, লম্বা ও ডিম্বাকৃতির আঁইশ আছে। কশেরুকা ১০০ থেকে ১১০টি পর্যন্ত হয়ে থাকে। দেহের রং হলুদাভ জলপাই অথবা গাঢ় বাদামি রঙের হয়। মাথার উপর বাদামি বর্ণের ছাপ থাকে। তবে অল্প বয়সী মাছের মাথায় এই ছোপ দেখা যায় না। দৈর্ঘ্যে প্রায় ২০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
মাথা গোলাকার এবং থুতনী পৃষ্ঠীয় দিকে চ্যাপ্টা। নাসারন্ধ্র থুতনীর উপরে সম্মুখভাগে অবস্থিত। এর পশ্চাৎ নাসারন্ধ্র চোখের সম্মুখে গর্তের মতো দেখায়। এদের উর্ধ্ব ও নিম্ন ঠোঁট সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়। ঊর্ধ্বচোয়াল অপেক্ষা নিম্ন চোয়াল দীর্ঘতর এবং বহির্গত। ঊর্ধ্ব চোয়ালের দাঁত উপরের চোয়াল অপেক্ষা ৩টি কম বা তার বেশি সংখ্যক অনুদৈর্ঘ্য সারিতে বিন্যস্ত থাকে। মধ্য সারির দাঁতগুলি অধিকতর বড়। বাইরের দুটি সারি একটি দাঁতবিহীন খাঁজ দ্বারা মধ্য সারি থেকে পৃথক। এই খাঁজ পিছন থেকে ডোরার শেষ পর্যন্ত প্রসারিত। পৃষ্ঠীয় পাখনা পায়ু অপেক্ষা ফুলকা রন্ধ্রের অনেক নিকটে থাকে। বক্ষপাখনা গোলাকার। শ্রোণী পাখনা নেই।
জলাশয়ের তলদেশ এরা থাকে, এই কারণে তলদেশের জলজ প্রাণীই এদের প্রধান খাদ্য। খাদ্য হিসেবে এরা কাঁকড়া, ব্যাঙ, পোনা মাছ আহার করে থাকে।
অন্যান্য Anguilla গণের প্রজাতির মতোই এদের জন্ম হয় সমুদ্রে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর, পোনাগুলো সমুদ্রের উপকূলের কাছে চলে আসে। সমুদ্রের যে স্থানে নদীর পানি পতিত হয়, সেখানকার অল্প লবণাক্ত পানিতে কাটায়। পরে এরে নদীপথ ধরে নদীর স্বাদু পানি এলাকায় চলে আসে। স্বাদু পনিতে পোনাগুলো প্রাপ্তবয়স্ক মাছে পরিণত হয়। স্বাদু পানিতে এদের যৌনগ্রন্থি বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় না। সেকারণে এরা প্রজননের জন্য সমুদ্রে চলে আসে। প্রজননের জন্য এরা সমুদ্রে যায় শীতকালে। সমুদ্রের পানিতে ডিম ছাড়ার পর প্রাপ্তবয়স্ক মাছগুলো নদীর স্বাদু পানিতে চলে আসে। শেষ বয়সে এরা আবার সমুদ্রে চলে যায় এবং মত্যুকাল পর্যন্ত সমুদ্রেই কাটায়।
সকল দেশের মানুষই এই মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এই কারণে খাদ্য হিসেবে এই মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রধানত বিভিন্ন ধরনের জাল, ফাঁদ, অাঁকড়ি এবং সারির মাধ্যমে এই মাছ ধরা হয়। পদ্মা, মেঘনা যমুনা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীততে অল্পবিস্তর এই মাছ রয়েছে। তবে অন্যান্য নদী থেকে এই মাছ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে IUCN Bangladesh (2000) এর লাল তালিকায় এটি সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবেই চিহ্নিত।
-
আফ্রিকান রাজ বামোশ
বৈজ্ঞানিক নাম : Anguilla bengalensis labiata (W. K. H. Peters, 1852)
ইংরেজি : African mottled eel।
এই উপ-প্রজাতিটি আফ্রিকার। এই মাছ পূর্ব আফ্রিকার কারিবা হ্রদ, মধ্য জাম্বেজি, পুঙ্গোওয়ে অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই মাছগুলো প্রায় ১.৭৫ মিটার লম্বা হয় এবং ওজনে সর্বোচ্চ ২০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা কাঁকড়া, ব্যাঙ, ছোটো মাছ, জলজ কীট খেয়ে থাকে। অন্যান্য আচরণ Anguilla bengalensis bengalensis -এর মতোই।