মিথেন
Methane, marsh gas

এক প্রকার জৈব রাসায়নিক যৌগ। এতে একটি কার্বন পরমাণু ও চারটি হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে। এর রাসায়নিক সঙ্কেত CH4। জৈব রসায়নে মিথেনকে বলা হয় সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন-এর প্রথম এবং সরলতম যৌগ। সরলবন্ধনীর বিচারে এই যৌগটি এ্যালিফেটিক ১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দে এই গ্যাসটি প্রথম শনাক্ত করেন ভোল্টা।
 

এটি একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন ও স্বাদহীন গ্যাস। প্রাণীদেহে এই গ্যাস বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে না। পানিতে এই গ্যাস সামান্য দ্রবীভূত হয়। এ্যালকোহল ও ইথারে প্রচুর পরিমাণে দ্রবীভূত হয়। এর গলানাঙ্ক : -১৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্ফূটনাঙ্ক : -১৬৪-১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মিথেনের  কার্বন-এর সাথে চারটি হাইড্রোজেনপরমাণু যুক্ত হয়ে যে কাঠামো তৈরি করে। কার্বনের পরমাণু কাঠামো ত্রিমাত্রিক, তাই  মিথেনের কাঠামো ত্রিমাত্রিক হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে H-C-H এর বিন্যাস হয় ১০৯ ডিগ্রি ২৮ মিনিট, মতান্তর ১০৯ ডিগ্রি ৫০ মিনিটে বন্ধন দূরত্ব থেকে ১০৮,৭০ পিএম।

প্রাকৃতিক গ্যাস হিসাবে মিথেন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। পৃথিবীর ভূগর্ভে এই গ্যাসের বিপুল পরিমাণ জমা আছে। বাংলাদেশ -সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই গ্যাস উত্তোলন করা হয়। জলাভূমিতে নানারকম জৈব পদার্থ পচে এই গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই কারণে একে marsh gas (জলাভূমির গ্যাস) বলা হয়। অনেক সময় এই গ্যাস জলাভূমির উপরে উঠে আসার পর বাতাসের সংস্পর্শে এসে জ্বলে ওঠে। রাতের বেলায় জলাভূমিতে এই জ্বলে উঠা মিথেনের আলো ছোটছুটি করতে দেখা যায়। এই আলো-কে বলা হয় আলেয়া। এক সময় একে লোকেরা ভুতের আলো বলতো।

এই গ্যাসটি গৃহস্থালীতে এবং শিল্পকল-কারখানায় জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এই গ্যাসকে তাপ বিযোজনে কার্বন গুঁড়া বা কার্বন ব্ল্যাক উৎপন্ন করা হয়। শিল্পক্ষেত্রে মিথেন মিথাইল এ্যালকোহল, ফরম্যালডিহাইড, মিথাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন করা হয়।