হাইড্রোজেন
বানান বিশ্লেষণ: হ্+আ+ই+ড্+র্+ও+জ্+এ+ন্+অ
উচ্চারণ:
ɦai. ɖro.ɟen (হাই.ড্রো.জেন)
শব্দ-উৎস: গ্রিক
hudôr (পানি) + gennan উৎপন্ন করা> ইংরেজি Hydrogen> বাংলা হাইড্রোজেন
পদ: বিশেষ্য

প্রতীক H
পারমাণবিক ওজন ১.০০৮
পারমণবিক সংখ্যা ১
ইলেক্ট্রোন সংখ্যা ১
প্রোটোন ১
ইলেক্টোন কক্ষ: ১
ইলেক্ট্রোন শক্তিবিন্যাস:
1s1
গলনাঙ্ক :  -২৫৯.১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্ফুটনাঙ্ক : -২৫২.৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আপেক্ষিক গুরুত্ব ০.০০০০৮৯৯ গ্রাম/ঘন সেমি

অর্থ: এটি একটি বর্ণহীন, স্বাদহীন মৌলিক পদার্থকক্ষতাপমাত্রায় এটি বায়বীয় এবং অধাতব। তবে ২০ লক্ষ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ধাতব পদার্থে পরিণত হয়। ধাতব হাইড্রোজনে বিদ্যুৎ পরিবাহিতা গুণ লক্ষ্য করা যায়। এই পর্যায়ে হাইড্রোজেনকে ক্ষারধাতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধারণা করা হয় বৃহস্পতি গ্রহের কেন্দ্রে ধাতব হাইড্রোজেন রয়েছে।

বিস্তারিত: খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে প্যারেসলাস (Paracelsus) বলেছিলেন যে, ধাতুর সাথে এ্যাসিডেরবিক্রিয়ার ফলে একটি গ্যাস উৎপন্ন হয়। তবে তিনি এই গ্যাসের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানান নি। ১৭৫৩ খ্রিষ্টাব্দে হেনরী ক্যাভেণ্ডিস (Henry Cavendish) সর্বপ্রথম পরীক্ষা করে দেখেন যে, আগুনের সংস্পর্শে গ্যাসটি জ্বলে ওঠে। তাই তিনি গ্যাসটির নাম দেন— দাহ্য বায়ু (Inflammable Air) । ১৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ল্যাভয়সিয়ে (Lavoisier) প্রমাণ করেন যে, হাইড্রোজেন একটি মৌলিক পদার্থ। এই গ্যাসটি বাতাসে জ্বলার কারণে পানি উৎপন্ন করে। এই কারণে তিনি এর নাম দেন পানি উৎপাদক বা হাইড্রোজেন। এর তিনটি সমাণু (Isotope) রয়েছে। এই তিনটি সমাণু হলো- H-1, H-2 এবং H-3

বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাস মৌলিক ও যৌগিক উভয় রূপেই পাওয়া যায়। সাধারণভাবে বায়ুমণ্ডলের ওজনের শতকরা ১ ভাগ হাইড্রোজেন আছে। সৌরমণ্ডলে, আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত গ্যাসে, অন্যান্য প্রাকৃতিক গ্যাসের খনিতে আবদ্ধ অবস্থায় এবং বায়ুতে মৌলিক হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব দেখা যায়। প্রকৃতিতে যৌগাবস্থায় পানি, এ্যাসিড, ক্ষার, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য জৈব পদার্থে পাওয়া যায়। সাধারণ হাইড্রোজেন, দুই ধরনের হাইড্রোজেনের সংমিশ্রণে গঠিত হয়। এদের একটি অর্থো- হাইড্রোজেন, অপরটি প্যারা- হাইড্রোজেন। উল্লেখ্য, কোনো হাইড্রোজেনের অণুতে অবস্থিত প্রোটনদ্বয়ের ঘূর্ণন যদি একই দিকে হয়, তবে তখন তাকে অর্থো-হাইড্রোজেন বলে। আর যখন দুটি প্রোটনের  ঘূর্ণন পরস্পরের বিপরীত দিকে হয়, তখন তাকে প্যারা- হাইড্রোজেন বলে। এই হাইড্রোজেন দুইটির রাসানিক ধর্ম একই। তবে ভৌত ধর্মে কিছু কিছু পার্থক্য দেখা যায়। তূলনামূলকভাবে অর্থো-হাইড্রোজেনের আণবিক শক্তি বেশি। যে কারণে ২৫% তাপমাত্রার বৃদ্ধির ফলে প্যারা-হাইড্রোজেন ভেঙে যায়। কিন্তু অর্থো-হাইড্রোজেন ভাঙার জন্য ৭৫% তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়।

হাইড্রোজেনের আইসোটোপ : হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ আছে। এগুলি হলো


১. হাইড্রোজেন : এর প্রতীক
H, এতে একটি প্রোটন ও একটি ইলেক্ট্রন আছে, কোনো নিউট্রন থাকে না।
২. ডিউটেরিয়াম : এর প্রতীক
D, এতে একটি প্রোটন, একটি ইলেক্ট্রন  ও একটি নিউট্রন থাকে। এটি বর্ণহীন, স্বাদহীন ও গন্ধহীন গ্যাস। এটি সাধারণত সাধারণ হাইড্রোজেন অপেক্ষা দ্বিগুণ ভারী হয়।
৩. ট্রিটিয়াম : এর প্রতীক
T, এতে একটি প্রোটন, একটি ইলেক্ট্রন ও দুটি নিউট্রন থাকে। এটি সাধারণ হাইড্রোজেন অপেক্ষা তিনগুণ ভারী।


সূত্র :