অর্থ:
ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষা পরিবারের
অন্তর্গত জার্মানিক ভাষাগোষ্ঠীর একটি ভাষা বিশেষ।
এ্যাংল্স, স্যাক্সন ও জুটদের
ভাষার সমন্বয়ে এই ভাষার উৎপত্তি ঘটেছিল বর্তমান ইংল্যান্ডে। ধারণা করা হয়, ৪৫০
খ্রিষ্টাব্দের দিকে কেল্টীয় ভাষাভাষীর ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ ও
পূর্বাঞ্চলে বসবাস করতো। এই সময় জার্মান ভাষাগোষ্ঠীর এ্যাংল্স ও স্যাক্সনরা এদের
পরাজিত করে এই দ্বীপপুঞ্জ বসতি স্থাপন করে। এদের ভাষার সংমিশ্রণে ইংরেজি ভাষার
আদিরূপ তৈরি হয়েছিল। এই অঞ্চলের এই ভাষা কালক্রমে মূল জার্মান ভাষা থেকে পৃথক হয়ে
যায়। খ্রিষ্টীয় ৮ম ও ৯ম শতকে নরওয়েজিয়া অঞ্চল থেকে ভাইকিংরা এই অঞ্চলের উপর
আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে আদি ইংরেজি ভাষায় ভাইকিংদের প্রাচীন নর্স ভাষার শব্দের
অনুপ্রবেশ ঘটে। ফলে এই ভাষাটি অন্যান্য ভাষা থেকে আরও বেশি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে
প্রতিষ্ঠা পাওয়ার দিকে এগিয়ে যায়।
১০৬৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর ফ্রান্সের নরমঁদি অঞ্চলে বসবাসকারী নর্মান জাতি, ইংলিশ
চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড দখল করে নেয়। এর পরে প্রায় ৩০০ বছর ধরে নর্মান
বংশোদ্ভূত রাজপুরুষরা ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ শাসন করে। এই সময় রাজকীয় ও প্রশাসনিক
কাজকর্ম নর্মানদের প্রাচীন ফরাসি ভাষায় সম্পন্ন হত। এই সময়ে বিপুল পরিমাণ ফরাসি
শব্দ প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় প্রবেশ করে। এই নব্য মিশ্রভাষা প্রাচীন ও মধ্য যুগীয়
ইংরেজি ভাষার সৃষ্টি করে। এই সময়ের ইংরেজির সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্মের মধ্যে
আছে বেওউল্ফ এবং চসারের দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস। ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে আধুনিক
ইংরেজি ভাষার উদ্ভব ঘটে। এই সময়ের বিখ্যাত কবি শেক্সপিয়ারের রচনাসহ বহু সাহিত্য
রচিত হয়েছিল।
বর্তমানে ইংরেজি মাতৃভাষা বা রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রচলিত রয়েছে, যুক্তরাজ্য,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও বেশ
কিছু ক্যারিবীয় দেশে। এছাড়া ব্রিটিশ শাসিত উপনিবেশগুলোতে এই ভাষা দ্বিতীয় সরকারি
ভাষা হিসেবে প্রচলিত আছে।