বস্তু
বানান বিশ্লেষণ: ব্+অ+স্+ত্+উ
উচ্চারণ: bos.t̪u
(বোস্,তু)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত বস্তু>
বাংলা বস্তু
রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
√
বস্ (হত্যা করা) +
তু (তুন্),
কর্তৃবাচ্য
পদ :
বিশেষ্য
substance, matter
সমার্থক শব্দাবলি: পদার্থ, বস্তু।
ব্যাখ্যা:
দৈহিক সত্তার অধিকারী সত্তার এমন কিছু বস্তু, যার ভর আছে এবং যা জায়গা দখল করে।
বিজ্ঞানীরা নানাভাবে বস্তুকে শ্রেণিকরণ করেছেন।
যেমন-
- গঠন প্রকৃতি অনুসারে: বস্তুর আদি উপাদান হিসেবে মৌলিক পদার্থকে বিবেচনা
করা হয়। একাধিক মৌলিক পদার্থে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হয় যৌগিক পদার্থ।
বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় রাসায়নিক যৌগ্। আবার একাধিক মৌলিক পদার্থ বা যৌগিক
পদার্থের মিশ্রণে তৈরি হয় মিশ্র পদার্থ। ফলে গাঠনিক দিক থেকে বস্তুর তিনটি
সদস্য পাওয়া যায়।
chemical element, element
): যে বস্তুকে ক্ষুদ্রতম অংশে বিভাজিত করার পরও ওই ছাড়া
অন্যবস্তু পাওয়া যায় না।
- রাসায়নিক যৌগ
(
compound, chemical compound
):
ওজন ও সুনির্দিষ্ট সমানুপাত অনুসারে, দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ বা
উপাদানসমূহের সমন্বয়ে সৃষ্ট পদার্থ।
- মিশ্র পদার্থ
(
(mixture):
একাধিক বস্তুর মিশ্রণে যে পদার্থ তৈরি হয়
দশা প্রকৃতি: যে কোনো বস্তু তিনটি দশায় পাওয়া যায়। এই দশা তিনটি হলো- কঠিন, তরল ও বায়বীয়।
এর ভিতরে কঠিন পদার্থ যখন সমতলে খণ্ড খণ্ড অবস্থায় থাকে, এবং বহিরাগত কোনো শক্তির দ্বারা প্রভাবিত না হয়,
তখন একটি খণ্ডকে টানলে অপর খণ্ডগুলো চলে আসে না।
কিন্তু তরল বা বায়বীয় পদার্থের তেমনটি হয় না। কোনো পাত্রের তরল বা বায়বীয় পদার্থে কিছু টেনে নিতে গেলে,
পুরো পাত্রের বস্তুতে টান পড়ে। তরল ও
বায়বীয় পদার্থের ভিতরের বিশেষ গুণকে প্রবাহ বলা হয়। এই বিশেষ গুণের বিচারে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো-
- কঠিন পদার্থ
(solid
):
একটি আদর্শ তাপামাত্রা এবং চাপে যার আকার আয়তন ও ভর সুনির্দিষ্ট থাকে।
- প্রবাহী পদার্থ
(fluid):
অবচ্ছিন্ন সুনির্দিষ্ট আকারবিহীন
বস্তু, যা প্রবাহিত হওয়ার যোগ্য এবং ধারণকৃত পাত্রের আকার ধারণ করে।
প্রবাহী পদার্থকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো-
liquid
):
একটি আদর্শ তাপামাত্রায় এবং চাপে যার আয়তন ও ভর সুনির্দিষ্ট থাকে, কিন্তু
সুনির্দিষ্ট আকার থাকে না।
- গ্যাসীয় পদার্থ: একটি
আদর্শ তাপামাত্রায় ভর সুনির্দিষ্ট থাকে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট আকার থাকে না। আয়তন
স্থানের পরিসরে কমবেশি হয়।
ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যের বিচারে বস্তুকে
শনাক্ত করা হয়। এই বিচারে বস্তু স্পর্শনীয় কিনা তা বিচার করার প্রয়োজন পরে।
- স্পর্শনীয় বস্তু
(material, stuff
): যা দৈহিক
লক্ষ্যবস্তুর রূপ দেওয়া যায় কিন্তু স্পর্শ করা যায়।
ব্যবহারিক প্রকৃতি: বিশেষ একটি শ্রেণিতে ফেলা হয়।
যেমন-
- আহার্যবস্তু
(food, nutrient
): যা মূলত দেহের শক্তি, পুষ্টি
ও বৃদ্ধির জন্য গ্রহণ করা হয়।
- জ্বালানি
(fuel
): শক্তি উৎপাদক বস্তু।
- ব্যবহার্য বস্তু
(material, stuff
): স্পর্শনযোগ্যবস্তু,
যা দৈহিক লক্ষ্যবস্তুর রূপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যায়।
- দেহগত বস্তু
(body substance):
দেহে উৎপন্ন বা দেহে স্থিত বস্তু।