গ্রিক বর্ণমালা |
||
১ | Α α | Alpha (আলাফা) |
২ | Β β | Beta (বেটা, বিটা) |
৩ | Γ γ | Gamma (গামা) |
৪ | Δ δ | Delta (ডেল্টা) |
৫ | Ε ε | Epsilon (এপসিলোন) |
৬ | Ζ ζ | Zeta (জেটা, জিটা) |
৭ | Η η | Eta (এটা, ইটা) |
৮ | Θ θ | Theta (থেটা, থিটা) |
৯ | Ι ι | Iota (ইয়োটা, আইয়োটা) |
১০ | Κ κ | Kappa (কাপ্পা) |
১১ | Λ λ | Lambda (লাম্বাডা) |
১২ | Μ μ | Mu (মু) |
১৩ | Ξ ξ | Xi (ক্সি, জাই, শাই) |
১৪ | Ο ο | Omicron (ওমিক্রোন) |
১৫ | Π π | Pi (পাই, পি) |
১৬ | Ρ ρ | Rho (হ্রো, রো) |
১৭ | Σ σ ς | Sigma (সিগ্মা) |
১৮ | Τ τ | Tau (টাউ) |
১৯ | Υ υ | Upsilon (উপসিলোন) |
২০ | Φ φ | Phi (ফাই, ফি) |
২১ | Χ χ | Chi (চাই, চি) |
২২ | Ψ ψ | Psi (শাই, প্সাই) |
২৩ | Ω ω | Omega (ওমেগা) |
অর্থ:
ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষা পরিবারের
অন্তর্গত একটি ভাষা বিশেষ। বর্তমানে এই ভাষার লোকসংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি। বর্তমানে এই
ভাষার প্রচলন রয়েছে গ্রিস ও বলকান অঞ্চলের দক্ষিণাংশে।
ধারণা করা হয় দক্ষিণ বলকান অঞ্চল এবং গ্রিস-ভূখণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রিক ভাষার
নানা আঞ্চলিক রূপ তৈরি হয়েছিল। এই ভাষার ক্রমবিবর্তনের ধারাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা
হয়। এই ভাগগুলো হলো-
প্রাক গ্রিক ভাষা
(Proto-Greek language):
আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বৎসর আগে প্রাক ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা থেকে প্রাক
ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবার এবং প্রাক আর্মেনিয়ান ভাষা পৃথক হয়ে গিয়েছিল।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দের দিকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী মানুষ মধ্য এশিয়া অঞ্চলে
বসবাস করা শুরু করেছিল। এদের একটি শাখা ইউরোপের দিকে চলে আসে খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০
অব্দের দিকে। এদের একটি অংশ গ্রিস এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। এদের ভাষা
ক্রমবিবর্তনের ধারায় প্রাক্-গ্রিক ভাষার সৃষ্টি করেছিল। এই ভাষা থেকেই উৎপত্তি
ঘটেছিল মাইসেনীয় গ্রিক এবং অন্যান্য উপভাষাসমূহ। এই সব উপভাষার ভিতরে ছিল অট্টিক,
আয়োনিক, ঈয়োলিক, ডোরিক, প্রাচীন মেসেডোনিয়ান, এ্যার্কোডোসাইপ্রিয়োট।
এর ভিতরে এথেন্সে খ্রিষ্টীয় ৪র্থ শতাব্দীর ভিতরে- ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার একটি শাখা
বিবর্তনের ধারায় প্রাক্-গ্রিক ভাষার উৎপত্তি ঘটেছিল। এরপর গ্রিসের এথেন্স অর্থনৈতিক
দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠার সূত্রে- এখানে একটি বিশেষ আঞ্চলিক ভাষা অধিকতর প্রচলিত
ভাষায় পরিণত হয়ে উঠেছিল। এই রূপ থেকে সাধারণ গ্রিক ভাষা কোইনি
(Koine)-র বিকাশ ঘটেছিল। এই কোইনি
থেকে উৎপত্তি ঘটেছিল প্রাক্-গ্রিক ভাষা। এই ভাষার লেখ্যরূপ তৈরি হয়েছিল
খ্রিষ্টপূর্ব ৩,৫০০ অব্দের দিকে। এই রূপ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ বৎসরের দিকে
প্রাচীন গ্রিক ভাষার বিকাশ ঘটেছিল। আর এই প্রাচীন গ্রিকে ধারা অব্যাহত ছিল
খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ বৎসর পর্যন্ত।
প্রাচীন গ্রিক (খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০-৩০০ অব্দ):
প্রাচীন গ্রিকের ভাষা গ্রিসের মাইসেনীয় অঞ্চলে একটি আঞ্চলিক ভাষারীতি গড়ে উঠেছিল।
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ১২০০ অব্দের ভিতরে বিকশিত এই প্রাচীন গ্রিক ভাষাকে বলা হয়
মাইসেনীয় গ্রিক। ১৯৫০-এর দশকে মাইকেল ভেনট্রিস ও জন চ্যাডউইক এই ভাষার নমুনা
আবিষ্কার করেন। ১৯শ শতকে ক্রেতে দ্বীপপুঞ্জ ও মূল গ্রিসদেশীয় ভূখণ্ডে মিনোয়ান ও
মিসেনীয় সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে উদ্ধার করেন কাদামাটির ফলকে লিখিত রৈখিক বি
(Linear B) লিপিতে লেখা প্রাচীন গ্রিক রচনা। তাঁরা এই লিপির পাঠোদ্ধার করে প্রমাণ
করেন যে, ওই লিখিত ভাষা ছিল মাইসেনীয় গ্রিক। এই ভাষা আধুনিক গ্রিকের উত্তরসূরী
কিনা, সে বিষয়ে অনেকে সন্দেহ করে থাকেন।
মাইসেনীয় গ্রিকের পরে পাওয়া যায় হোমারের ইলিয়াড ও অডিসি মহাকাব্য। ভাষা বিজ্ঞানীরা
একে বলে থাকেন হোমারীয় ভাষা। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দের দিকে রচিত এই
ভাষারীতি গড়ে উঠেছিল ইয়োনীয়, আয়েওলীয় এবং অন্যান্য উপভাষার সংমিশ্রণে।
হোমারীয় ভাষা রীতি নামে অভিহিত করা হয়। এই সূত্র ধরে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০-৩০০ অব্দের
ভিতরে সৃষ্টি হয়েছিল গ্রিক ধ্রুপদী ভাষা। প্লেটো, হেরোদোতুস, থুকিদিদেস,
আয়েস্কিলুস, এউরিপিদেস, সফোক্লেস, আরিস্তোফানেস-সহ বহু রচয়িতার রচনায় এবং
অ্যাথেন্সের বহু শিলালিপিতে এই ভাষার দেখা মেলে।
হেলেনীয় গ্রিক (খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০-৩০০ অব্দ):
এর ভাষারীতিকে সাধারণত কোইনি গ্রিক বলা হয়। এই ভাষায় লেখা ওল্ড টেস্টামেন্ট
সেপ্তুয়াগিন্ত ও নিউ টেস্টামেন্ট হেলেনীয় গ্রিক ভাষার অন্যতম নিদর্শন হিসেবে
বিবেচনা করা হয়। এছাড়া পলিবিয়ুস, দিয়োনিসিয়ুস থ্রাক্স, এপিকতেতুস, ও লুকিয়ানের
রচনা এই ভাষার নিদর্শন। সম্রাটা
আলেকজান্ডারের সময় হেলেনীয় গ্রিক ভাষার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিল। এই সময় পূর্ব
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যে কোইনি ভাষা হিসেবে প্রচলিত হয় এবং এই কোইনি
ভাষা থেকেই পরবর্তীকালে মধ্য ও আধুনিক গ্রিক ভাষার উদ্ভব ঘটে।
১৮২০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তুরস্কের ওসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিলাভ করে, আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গ্রিসের আবির্ভাব ঘটে। এই সময় গ্রিক নেতারা রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। এই সময় গ্রিকের দুটি প্রধান ধারা ছিল। ধারা দুটি হলো-
১৯শ ও ২০শ শতকের প্রায় পুরোটা জুড়েই এই
দ্বিভাষিকতা ব্যাপকভাবে সমগ্র গ্রিসে প্রচলিত ছিল। কোন ক্ষেত্রে কোন্ ভাষাটি
ব্যবহার করা হবে, তা ছিল গ্রিসের রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। ১৯৭৬
খ্রিষ্টাব্দে দেমোতিক ভাষাটিকে সরকারী মর্যাদা দেয়া হয়। বর্তমানে প্রচলিত মান্য
গ্রিক ভাষা মূলত দেমোতিক।