ত্রৈলোক্যচন্দ্র
(রাজত্বকাল ৯০০-৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ)
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা তথা
হরিকেলের চন্দ্রবংশীয় প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা। তাঁর পিতামহ
পূর্ণচন্দ্র ছিলেন রোহিতাগিরির (সম্ভবত কুমিল্লার লালমাই অঞ্চল)
ক্ষুদ্র জমিদার। চন্দ্রবংশীয় বিখ্যাত রাজা
শ্রীচন্দ্রের
বেশ কয়েকটি তাম্রশাসনে তাঁর পূর্বপুরুষদের আদিবাসস্থান হিসাবে উল্লেখিত স্থানের
নাম পাওয়া যায়। তাঁর পুত্র সুবর্ণচন্দ্র
ছিলেন এই জমিদারিকে বর্ধিত সামন্ত রাজ্যে রূপ দেন।
আর সুবর্ণচন্দ্রের পুত্র
ত্রৈলোক্যচন্দ্র এই সামন্তরাজ্য বিশাল রাজত্বে পরিণত করেন।
ত্রৈলোক্যচন্দ্রের রাজত্বকালের কোনো লিপি প্রমাণ পাওয়া যায় নি। ধারণা করা হয় তিনি রোহিতাগিরির সামন্তরাজা
হিসেবেই রাজত্ব শুরু করেন। আনুমানিক
৯০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে পাল রাজত্বের [নারায়ণ
পাল (৮৫৪-৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ)] আমলে পূর্ব-দক্ষিণ বাংলা অধিকার করেছিলেন গিয়েছিল।
ত্রৈলোক্যচন্দ্রের তাঁর রাজত্বের শুরুর
দিকে,
চন্দ্রদ্বীপ (বাখরগঞ্জ জেলার দক্ষিণ ও
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য) অধিকার করেন।
শ্রীচন্দ্রের রামপাল তাম্রশাসন চন্দ্রদ্বীপের উল্লেখ পাওয়া যায়। এ
তাম্রশাসনে দেখা যায়, দশ শতকের সূচনায় ওই বংশের ত্রৈলোক্যচন্দ্র চন্দ্রদ্বীপের
রাজা হন।
শ্রীচন্দ্রের পশ্চিমভাগ তাম্রশাসনে ত্রৈলোক্যচন্দ্রের সমতট জয়ের উল্লেখ রয়েছে। তিনি সমতট
জয় করার পর 'মহারাজাধিরাজ’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। সে সময়ে সমতটের রাজধানী ছিল
দেবপর্বত। কালক্রমে তিনি
দেবপর্বত এবং তৎসংলগ্ন এলাকার উন্নয়ন এবং সুশাসনের দ্বারা জনগণের মন জয় করতে
সক্ষম হয়েছিলেন। লড়হচন্দ্রের ময়নামতী তাম্রশাসনে উল্লিখিত হয়েছে যে, ত্রৈলোক্যচন্দ্রের শাসনকালে বঙ্গ অত্যুন্নতিশালী ছিল। কল্যাণচন্দ্রের ঢাকা তাম্রশাসনে ত্রৈলোক্য কর্তৃক গৌড়দের পরাস্ত করার উল্লেখ রয়েছে।
সম্ভবত একজন সামন্ত থেকে নিজের উত্তরণ ঘটিয়ে ত্রৈলোক্যচন্দ্র চন্দ্রবংশের প্রতিষ্ঠা করেন।
ফলে তিনি
হরিকেল এবং
সমতট সার্বভৌম ক্ষমতালাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ত্রৈলোক্যচন্দ্রের পরে তাঁর পুত্র
শ্রীচন্দ্র
রাজত্ব লাভ করেছিলেন ৯৩০
খ্রিষ্টাব্দে।
সূত্র:
https://en.wikipedia.org/wiki/Traillokyachandra
http://bn.banglapedia.org/