বিরূপা
অন্যতম প্রাচীন বাঙালি
কবি।
সংস্কৃত নাম বিরূপ পাদ। বজ্রযোগিনী মতে, তাঁর আদিগুরু
লুইপা,
তাঁর শিষ্য ছিলেন
কুক্কুরীপা, তাঁর শিষ্য ছিলেন ইন্দ্রভূতি, তাঁর শিষ্য ছিলেন ছিলেন
লক্ষ্মীঙ্করা। লক্ষ্মীঙ্করা ছিলেন ইন্দ্রভূতের বোন। এই লক্ষ্মীঙ্করার শিষ্য
ছিলেন বিরূপা। বিরূপার শিষ্য ছিলেন
ডোম্বীপা।
ড. মুহম্মদ
শহীদুল্লাহর
মতে এই বিরূপ পাদ নামে দুই জন ছিলেন। এঁরা হলেন-
নালন্দার জয়দেব পণ্ডিতের শিষ্য। তিনি খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর লোক ছিলেন।
জালন্ধরী পার শিষ্য। তিনি রাজা দেবপালের রাজ্য ত্রিপুরায় জন্মেছিলেন। তিনি সোমপুর বৌদ্ধবিহার ভিক্ষু হিসেবে বসবাস করতেন। মদ-মংস খাওয়ার অপরাধে তিনি এই বিহার থেকে বিতাড়িত হন। এরপর তিনি সাধনার দ্বারা সিদ্ধি লাভ করেন। তিনি অলৌকিক ক্ষমতায় গঙ্গা পার হয়ে উড়িষ্যার কনসতি নগরে আসেন। সেখানে তিনি নানা ধরনের অলৌকিক কর্ম প্রদর্শন করে ত্রিলিঙ্গের বিশ্বনাথক্ষেত্রে যান। এই ক্ষেত্র থেকে তিনি একে একে ডাকিনী পট, সৌরাষ্ট্রের সোমনাথ, জুনাগড়, দেবীকোট যান। এরপর দীর্ঘদিন বিরূপার কোনো কার্যকলাপ সম্পর্কে জানা যায় না। তারানাথের বিবরণ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিরূপার আবির্ভাব ঘটে অলৌকিকভাবে। তাঁর মতে, রাজা দেবপালের সময়ে গৌড় দেশীয় এক মুসলমান রাজার ঘরে তিনি রাত্রিকালে দর্শন দেন। এরপর তিনি চারমাস বঙ্গদেশে কাটিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান।
তাঁর রচিত চর্চাগীতিকে ১টি পদ পাওয়া যায়। এই পদটি হলো-
এক
সে
শুন্ডিনী
দুই
ঘরে
সান্ধই। পদ সংখ্যা ৩। [তথ্য]
এই পদটির ভণিতায় নাম পাওয়া যায়-বিরুআ।
রচনাবলী
১.
কর্মচণ্ডালিকানামগীতি। তিব্বতী অনুবাদ।
২. দোহাকোষ । তিব্বতী অনুবাদ।
৩. বিরূপপদচতুরশীতি।
৪. অমৃতকোষ।
তথ্যসূত্র :
চর্যাগীতিকা/মুহম্মদ আবদুল হাই ও আনোয়ার পাশা সম্পাদিত। ষ্টুডেন্ট ওয়েজ।
অগ্রহায়ণ ১৪০২।
চর্যাগীতি কোষ/নীলরতন সেন। সাহিত্যলোক। জানুয়ারি ১৯৭৮।
চর্যাগীতি পরিক্রমা/ড. নির্মল সেন। দে'জ পাবলিশিং, জানুয়ারি ২০০৫।
চর্যাগীতি প্রসঙ্গ/সৈয়দ আলী আহসান। মৌলি প্রকাশনা, জুন ২০০৩।
বাংলাভাষার ইতিবৃত্ত/ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। মাওলা ব্রাদ্রার্স, মার্চ ২০০০।
হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা/হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
(বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, ১৩২৩)
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী রচনা-সংগ্রহ (দ্বিতীয় খণ্ড)। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক
পর্ষৎ, নভেম্বর ২০০০