দ্বিতীয় গোপাল
পাল রাজবংশের
অষ্টম
রাজা। ৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে
পাল রাজবংশের
তাঁর রাজত্বলাভের শুরুতে সমস্ত বিহার তাঁর অধিকারে ছিল। নালন্দা লিপি থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। উত্তর বাংলা তাঁর শাসনাধীন ছিল এর প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু ৯০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে নারায়ণ পাল (৮৫৪-৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ) আমলে পূর্ব-দক্ষিণ বাংলা চন্দ্র রাজাদের অধিকারে চলে গিয়েছিল। তবে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার মন্দকে প্রাপ্ত তাম্রলিপি থেকে জানা যায় যে, পূর্ব বাংলাও তখন দ্বিতীয় গোপালের শাসনাধীন ছিল।
পাল ও প্রতীহার সাম্রাজ্যের বিপর্যয়ের সূত্রে আর্যাবর্তে নতুন নতুন রাজশক্তির উদয় হয়েছিল। এদের অনেকই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় পাল, প্রতীহার ও অন্যান্য রাজ্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এভাবে সর্বপ্রথমে মধ্যভারতের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলে চন্দ্রাত্রেয় বা চন্দেল্ল রাজ্য প্রবল হয়ে উঠে। চন্দেল্লরাজ যশোবর্মণ প্রসিদ্ধ কালঞ্জর গিরিদুর্গ অধিকার করে আর্যাবর্তে প্রাধান্য লাভ করেন এবং তাঁর বিজয়বাহিনী কাশ্মীর হতে বাংলাদেশ পর্যন্ত যুদ্ধাভিযান করে। পালরাজগণ চন্দেল্লরাজ কর্তৃক পরাজিত হয়েছিলেন বলেই মেন হয়। চন্দেল্লগণের মতো কলচুরিরাজগণও দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে আর্যাবর্তের নানা দেশ আক্রমণ করেন। কলচুরিরাজ প্রথম যুবরাজ ও তাঁর পুত্র লক্ষ্মণরাজ যথাক্রমে গৌড় ও বঙ্গাল দেশ জয় করেন বলে তাঁদের সভাকবি বর্ণণা করেছেন। এসব আক্রমণের ফলে পালরাজাগণ ক্রমেই শক্তিহীন হয়ে পড়লেন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে স্বাধীন খণ্ডরাজ্যের উদ্ভব হলো।
৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে গোপাল মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তাঁর পুত্র বিগ্রহপাল সিংহাসন লাভ করেন। ইতিহাসে ইনি বিগ্রহপাল দ্বিতীয় নামে অভিহিত হয়ে থাকেন।
সূত্র :
বাংলাদেশের
ইতিহাস /রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।