হেমেন্দ্রকুমার রায়
১৮৮৮-১৯৬৩
বাঙালি গল্পকার, গীতিকার, সাংবাদিক
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর
কলকাতার
পাথুরিয়াঘাটা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম রাধিকাপ্রসাদ রায়।
১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বসুধা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প 'আমার কাহিনী' প্রকাশিত হয়। মূলত এর ভিতর দিয়ে সাহিত্যিক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল।
১৯১৫ বঙ্গাব্দের [১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ] বৈশাখ মাস থেকে
স্বর্ণকুমারী দেবীর সম্পাদনায় পুনরায়
ভারতী পত্রিকা
পত্রিকা। এই সময় তিনি প্রসাদদাস রায় ছদ্মনামে লিখতেন। ১৩২২ বঙ্গাব্দ [১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দ]
থেকে ১৩৩০ বঙ্গাব্দ [১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দ]
ভারতী পত্রিকা
মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় ও সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত হয়।
এই সময় হেমেন্দ্রকুমার এই পত্রিকার লেখকগোষ্ঠীতে যোগদান করেন।
১৩২৯ বঙ্গাব্দে(১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি মৌচাক পত্রিকায় লেখক হিসেবে যুক্ত হন।
১৩৩১
বঙ্গাব্দের ২৬শে বৈশাখ (শুক্রবার ৯ মে ১৯২৪)
হেমেন্দ্রকুমার রায় ও
প্রেমাঙ্কুর আতর্থী-র
যৌথ সম্পাদনায়প্রকাশিত
হয়েছিল সাপ্তাহিক 'নাচঘর' পত্রিকা। এই সময় 'ছন্দা' নামের অপর একটি পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন।
চলচ্চিত্রের সমালোচক
হিসেবে হেমেন্দ্রকুমার রায়ের বেশ খ্যাতি ছিল। চলচ্চিত্র সমালোচনা লিখতে
লিখতে চলচ্চিত্র জগতেও প্রবেশ করেন কাহিনীকার হিসেবে।
১৩৩৪ বঙ্গাব্দে নাচঘর পত্রিকাটির সম্পাদনা পদ থেকে অব্যহতি নিলে
তিনি এবং নলিনীমোহন রায়চৌধুরী সাথে পত্রিকাটি প্রকাশনা অব্যাহত রাখেন।
১৯৩৫
খ্রিষ্টাব্দে জ্যোতিষ মুখার্জী পরিচালিত 'পায়ের
ধুলো' ছবির কাহিনীকার ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার।
গীতিকার হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। তিনি প্রায় এক হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন।
গানগুলোতে সুর দিয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম, শচীনদেব বর্মন, কৃষ্ণচন্দ্র দে, হিমাংশু
দত্ত, গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া কিছু গানে তিনি নিজেই সুরারোপ করেছিলেন। গান নিয়ে তার ‘সুর লেখা’ বইটি পাঠকপ্রিয়
হয়েছিল। শিশির কুমার ভাদুড়ীর বিখ্যাত ‘সীতা’ নাট্যাভিনয়ের জন্যে রচিত জনপ্রিয় গানগুলো
বইটিতে রয়েছে। উল্লেখ্য,‘সীতা’র নৃত্য পরিচালক ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়।
১৩৪৩ বঙ্গাব্দে [১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দ] প্রকাশিত মাসিক 'রংমশাল' পত্রিকাটি তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল।
এছাড়া তিনি তৎকালীন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রতিবেদন ইত্যাদি লিখেছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৮০টি। তাঁর সৃষ্ট দুঃসাহসী জুটি বিমল-কুমার, জয়ন্ত (গোয়েন্দা) ও সহকারী মানিক, পুলিশ ইন্সপেক্টর সুন্দরবাবু, ডিটেকটিভ হেমন্ত, বাংলা কিশোর সাহিত্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য চরিত্র হিসেবে সমাদৃত হয়েছিল। তাঁর বেশকিছু গল্প চলচ্চিত্রায়িত হয়েছিল। এর ভিতরে ছিল- যকের ধন (১৯৩৯), জিঘাংশা (১৯৫১, নিশিথিনী বিভীষিকা গল্প অবলম্বনে), দেড়শো খোকার কাণ্ড (১৯৫৯) ইত্যাদি।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।