গুরু  হরগোবিন্দ
(১৫৯৫-১৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ) 
ষষ্ঠ শিখ গুরু।  সাচ্চা বাদশা বা 'প্রকৃত সম্রাট' নামে পরিচিত।
গুরু হরগোবিন্দ ১৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন 
অমৃতসরের
৭ কিলোমিটার পশ্চিমে ভাদালি নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর 
পিতা ছিলেন পঞ্চম শিখ গুরু 
অর্জন দাশ। 
মায়ের নাম গঙ্গা।
১৬০৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ মে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নির্দেশে, 
অর্জন দাশকে গ্রেফতার 
ও হত্যা করা হয়।  
অর্জন দাশ 
মৃত্যুর আগেই ২৫শে মে ষষ্ঠ গুরু হিসেবে মনোনীত করে যান। 
অর্জন দাশের 
মৃত্যুর পরে ২৪ জুন, আনুষ্ঠানিকভাবে হরগোবিন্দকে ষষ্ঠ গুরু হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
তিনি পিতার রীতি অনুসারে,
 শিখদের সুরক্ষার জন্য একটি সামরিক পদ্ধতির ব্যবস্থা করেন। এই পদ্ধতির ঐতিহ্য হিসেবে 
গুরু পদ লাভের সময় দুটি তলোয়ার রাখেন। এর একটি ছিল আধ্যাত্মিক (পিরি), অন্যটি ছিল 
পার্থিব কর্তৃত্ব (মিরি)। 
তিনি রামদাসপুরে সুরক্ষার জন্য একটি দুর্গ এবং একটি আনুষ্ঠানিক আদালত, অকাল তখত তৈরী করেন। 
 তিনি সামরিক বাহিনী তৈরির 
প্রক্রিয়া শিখদের উদ্বুদ্ধ করেন। এই কারণে 
 
সম্রাট
	জাহাঙ্গীরের 
আদেশে তাঁকে 
গ্রেফতার করা হয়। ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে হরগোবিন্দকে গোয়ালিয়র দুর্গে বন্দী করে রাখা হয়। 
১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মুক্তি পান। এই সময় শিখদের ৫২ জন সামন্ত রাজা বন্দী 
হয়েছিলেন। হরগোবিন্দের অনুরোধে এঁদের সবাইকে  
  
	জাহাঙ্গীর 
মুক্ত করে দেন।
সম্রাট 
শাহজাহানের
রাজত্বকালে শিখদের সাথে সম্পর্ক আবার তিক্ততায় পৌছায়। 
তিনি লাহোরের শিখ বাওলি ধ্বংস করেন।
 
প্রথমদিকে 
স্থানীয় মোঘলদের সঙ্গে শিখদের 
সাথে 
বাজ (ঈগল) ও ঘোড়া নিয়ে ঝগড়া হত,
পরে তা বড় আকার নেয়। গৃহযুদ্ধের মতো 
এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের  হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
এই যুদ্ধগুলো হয়েছিল মূলত-অমৃতসর, কার্তারপুর 
অঞ্চলে। ১৬৩৪ 
খ্রিষ্টাব্দে গুরু হরগোবিন্দ অমৃতসরের কাছে দাঙ্গাবাজ
মোগল দলকে পরাজিত করেন। 
গুরু হরগোবিন্দের শৈশবের এক বন্ধু পাইন্দে খান তার শত্রু হয়ে যান। গুরুর একটি দামী বাজ, খানেরা নিয়ে যান।
আবার কেউ বলেন শত্রুতার কারণ 
ছিক খানের অহঙ্কারার। উভয়ের শত্রুতার এই সুযোগ নিয়ে 
মোগল সম্রাট, খানকে আঞ্চলিক শাসনকর্তা বানিয়ে দেয়।  
পরে  গুরু হরগোবিন্দের 
সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে পাইক খান নিহত হন।
তিনি  ১৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ 
মার্চ  রূপনগরের কিরাটপুরে মারা যান। 
 তাঁর মৃত্যুর পর গুরুপদ লাভ করেন হর রাই।