![]() |
কাগজে অঙ্কিত, অস্বচ্ছ জলরঙ |
'বিপাশা নদীর তীরে গোবিন্দওয়ালে অর্জন নামে এক হিন্দু বাস করে। সে একজন আধ্যাত্মিক শিক্ষক হওয়ার ভাব দেখায়। এভাবেই সে অনেক সরল-মনস্ক ভারতীয় এবং কিছু অজ্ঞান মূর্খ মুসলমানকে নিজের ভক্ত হিসেবে পেয়েছে এবং নিজেকে সন্ত বলে দাবি করছে। তারা তাকে গুরু বলে। আশেপাশের অনেক মূর্খ তাকে সাহায্য করে এবং তাকেই পুরোপুরি মেনে চলে। তিন বা চার প্রজন্ম ধরে এরা একই ব্যবসা চালিয়ে আসছে। অনেক দিন ধরেই আমি ভাবছি হয় এই ভণ্ড ব্যবসা নির্মূল করা দরকার অথবা একে ইসলামের ছত্রছায়ায় আনা দরকার। ঘটনাচক্রে খুসরো যখন সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন, এই সামান্য ব্যক্তিটি তাঁকে সম্মান জানাতে চান। খুসরো যখন তার বাসভবনে যান, [অর্জন] বেরিয়ে আসে এবং [তাঁর সঙ্গে] সাক্ষাৎ করে। এখান ওখান থেকে সংগৃহীত কিছু মৌলিক ধর্মোপদেশ দেওয়ার পর, লোকটি তাঁর কপালে গেরুয়া রঙের তিলক পরিয়ে দেয়। এটিকে কাশকা বলে। হিন্দুরা এটিকে সৌভাগ্যদায়ক চিহ্ন মনে করে। এই কথা আমাকে জানানো হলে, আমি বুঝতে পারি, লোকটা কী পরিমাণে ভণ্ড। আমি আদেশ করি, তাকে যেন আমার কাছে আনা হয়। আমি তার এবং তার সন্তানদের বাড়ি ও বাসস্থানগুলি মুর্তাজা খানকে উপহার দি। আমি আদেশ করি, তার বিষয়সম্পত্তি যেন বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।' [সিয়াসাত ও ইয়াসা রাসানান্দ]।
১৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট জাহাঙ্গীরের আদেশে তাঁকে প্রথমে বন্দী করে লাহোর জেলে রাখা হয় এবং সেখানে ৩০ মে শেখ ফরিস বুখারি তাঁকে হত্যা করেন। কোনো কোনো মতে তাঁকে পাঞ্জাবের ইরাবতী নদীতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এই কারণে শিখরা তাঁকে শহিদ গুরু অর্জন দাশ নামে অভিহিত করে থাকে। কথিত আছে, তাঁকে গ্রেফতার করার পর, শিখরা প্রচুর অর্থের বিনিময়ে তাঁর মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সম্রাট তা প্রত্যাখ্যান করে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন।
অর্জন দাশের মৃত্যর পর গুরুপদ লাভ করেছিলেন তাঁর পুত্র হরগোবিন্দ।