রাজ্যবর্ধন
(রাজত্বকাল: ৬০২-৬০৬ খ্রিষ্টাব্দ)
উত্তর ভারতের পুষ্যভূতি রাজবংশের রাজা।

পূর্ব-পাঞ্জাবের থানেশ্বরের রাজা ছিলেনতাঁর পিতার নাম পিতা প্রভাকরবর্মণ
তাঁর বড় বোন রাজ্যশ্রী ছিলেন ছিলেন মৌখরী-রাজ্ গ্রহ বর্মণের স্ত্রী। কনিষ্ঠ ভাই ছিলেন হর্ষবর্ধন

৬০২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পিতা
প্রভাকরবর্মণ হুনদের আক্রমণ প্রতিহত করার সময় যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তিনি থানেশ্বরের সিংহাসন লাভ করেন। সিংহাসন লাভের পর তিনি হুনদের প্রতিহত করেন। এই সময় মালবের গুপ্ত-রাজা শশাঙ্ক মৌখরীর রাজ্য আক্রমণ করে। এই আক্রমণে মৌখরী-রাজ গ্রহ বর্মণ নিহত হন এবং তাঁর স্ত্রী রাজ্যশ্রীকে বন্দী করেন। রাজ্যবর্ধন এই সংবাদ পাওয়ার পর, ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজ্যবর্ধন
 তাঁর ছোটো ভাই হর্ষবর্ধনের হাতে রাজ্যভার অর্পণ করে, দশ হাজার অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে দেবগুপ্তে বিরুদ্ধে যুদ্ধ অগ্রসর হন। এই সময় দেবগুপ্তকে সাহায্যের জন্য শশাঙ্কও অগ্রসর হন। কিন্তু শশাঙ্কের পৌছানোর আগেই রাজ্যবর্ধন দেবগুপ্তকে পরাজিত করে হত্যা করেন। এরপর তিনি রাজ্যশ্রীকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়। এই হত্যা নিয়ে নানা রকম গল্প প্রচলিত আছে। বাণভট্টের হর্ষচরিত থেকে জানা যায় যে, 'মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করে রাজ্যবর্ধন একাকী এবং নিরস্ত্র অবস্থায় রাজ্যশ্রীকে উদ্ধার করতে গেলে, শশাঙ্ক তাঁকে হত্যা করে। চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন সাং-এর মতে মন্ত্রীদের দোষেই রাজ্যবর্ধন শত্রুভবনে নিহত হন। হর্ষবর্ধনের শিলালিপি অনুসারে, সত্যানুরোধে রাজ্যবর্ধন শত্রুভবনে প্রাণত্যাগ করেন।

রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর তাঁর কনিষ্ঠ ভাই হর্ষবর্ধন বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে রাজশ্রীকে উদ্ধার ও শশাঙ্ককে শাস্তি দিতে অগ্রসর হন। এই সময় এর সাথে যোগ দেন কামরূপ রাজ ভাস্করবর্মন। বাণভট্টের হর্ষচরিত সূত্রে জানা যায়, হর্ষবর্ধন বিন্ধ্যা পর্বতের জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে রাজ্যশ্রীকে উদ্ধার করেন। এরপর
শশাঙ্ক ভাস্করবর্মণ ও হর্ষবর্ধনের সেনাবহিনী দ্বারা আক্রমণ এড়িয়ে, কৌশলের সাথে তিনি কনৌজ ত্যাগ করেন। এই কারণে হর্ষবর্ধন শশাঙ্ককে শাস্তি দিতে না পেরে রাজধানীতে ফিরে আসেন এবং তিনি বোন রাজ্যশ্রীর অনুমতি নিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করেন।