শচীন
দেববর্মণ
১৯০৬-১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ
প্রখ্যাত গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত-পরিচলক। এস.ডি.বর্মণ নামেই
পরিচিত।
১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১লা
অক্টোবর
ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মাণিক্য রাজপরিবারের সন্তান। পিতার নাম
নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণ। মায়ের নাম নিরুপমা দেবী।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে
কুমিল্লা
জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে, ভিক্টোরিয়া কলেজে
ভর্তি হন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে এই স্কুল থেকে আইএ পাশ করেন। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে বিএ
পাশ করার পর কিছুদিন
ত্রিপুরার
রাজদরবারে উচ্চপদে চাকরি করেন।
শচীনদেবের পিতা ছিলেন সেতার শিল্পী। তাঁর কাছেই শচীনদেবের সঙ্গীতের হাতে খড়ি
হয়েছিল। কলকাতায় এসে তিনি ওস্তাদ বাদল খাঁ, ভীষ্মদেব ও কৃষ্ণ দের কাছে শাস্ত্রীয়
সঙ্গীতের তালিম নেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ওস্তাদ
আফতাবউদ্দিন খানের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখেন।
এছাড়া তিনি
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান,
ওস্তাদ ফৈয়াজ খান, ওস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ,
মোহাম্মদ হোসেন খসরু-র
সাহচর্যে এসে সঙ্গীতের পাঠ নেন।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে
আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্রে গান গাওয়ার ভিতর দিয়ে তাঁর শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয়।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। এই সময়
ত্রিপুরায় থেকে তিনি তাঁর প্রাপ্ত
সম্পত্তি দেখভাল করে কাটাতে পারতেন। কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি তীব্র অনুরাগের জন্য
তিনি
ত্রিপুরার থেকে
কলকাতায় চলে আসেন।
১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে
এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানিতে গানের পরীক্ষা দিয়ে নাকি গলার জন্য
অকৃতকার্য হন। তবে এই বছরেই হিন্দুস্থান রেকর্ড কোম্পানি থেকে তাঁর দুটি গানের একটি
রেকর্ড প্রকাশিত হয়। এই গান দুটি হলো- 'ডাকিলে কোকিল বিহানে' এবং '
এ
পথে আজ এসো প্রিয়'।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে ল ইন্ডিয়ান মিউজিক কনফারেন্সে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বেঙ্গল মিউজিক কনফারেন্সে ঠুমরি গেয়ে ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁর প্রশংসা
লাভ করেন।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মীরা ধরকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাঁর নাম
হয় মীরা দেববর্মণ। শচীনদেবের বেশ কিছু গান লিখেছিলেন মীরা। এই বছরেই তিনি রাজগী
নামক চলচ্চিত্রে প্রথম সঙ্গীত পরিচালনা করেন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে অক্টোবর মৃত্যুবরণ
করেন।
তাঁর পুত্র রাহুলদেব বর্মণ ছিলেন পিতার মতই প্রখ্যাত গায়ক, সুরকার ও
সঙ্গীত-পরিচালক।