সিন্ধু-হিন্দোল
কাজী নজরুল ইসলাম


                    পথের স্মৃতি

পথিক ওগো চলতে পথে
          তোমায় আমায় পথের দেখা।
দেখাতে দুইটি হিয়ায়
           জাগল প্রেমের গভীর রেখা॥

       এই যে দেখা শরৎ-শেষে
        পথের মাঝে অচিন দেশে,
        কে জানে ভাই কখন কে সে
                চলব আবার পথটি একা॥

এই যে মোদের একটু চেনার আবছায়াতেই বেদন জাগে।
ফাগুন হাওয়ায় মদির ছোঁয়া পুবের হাওয়ার কাঁপন লাগে।

        হয়তো মোদের শেষ দেখা এই
        এমনি করে পথের বাঁকেই,
        রইল স্মৃতি চারটি আঁখেই
                    চেনার বেদন নিবিড় লেখা॥

বরিশাল
আশ্বিন ১৩২৭

৯২০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নবযুগ পত্রিকার অফিস ছুটি হয়ে যায়। এই ছুটি কাটানোর জন্য অক্টোবরের ১-২ তারিখে (রবি-সোম, ১৫-১৬ আশ্বিন)  নজরুল এবং মুজাফ্ফর আহমদ বরিশালে শের-এ-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ভাগ্নে ওয়াজির জালী ও ইউসুফ আলীর বাড়িতে যান এই সময় এই কবিতটি রচনা করেছিলেন। বিতাটিতে সুরারোপিত করে গানে পরিণত করা হয়েছিল।

এরপর নারায়ণ পত্রিকার [মাঘ ১৩২৭ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯২১) সংখ্যায় বাণী অংশ মুদ্রিত হয়েছিল। এরপর  নারায়ণ পত্রিকায় [চৈত্র ১৩২৭  (মার্চ-এপ্রিল ১৯২১) প্রকাশিত হয়েছিল। গানটির রচয়িতার নাম ছিল- হাবিলদার কাজী নজরুল ইসলাম। গানটির স্বরলিপিকার ছিলেন- মোহিনী সেনগুপ্তা [পৃষ্ঠা: ৫৩৮-৫৩৯]। এরপর যে সকল পত্রিকা ও গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো হলো- সিন্ধু-হিন্দোল  প্রথম সংস্করণ [শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ], নজরুল গীতিকা  প্রথম সংস্করণ [১৬ ভাদ্র ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩০]