বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: উদার প্রাতে কে উদাসী এলে।
রাগ: টোড়ি, তাল: আদ্ধা-কাওয়ালি
উদার প্রাতে কে উদাসী এলে।
প্রশান্ত দীঘল নয়ন মেলে' ॥
স্নিগ্ধ সকরুণ তোমার হাসি
আঘাত করে যেন আমারে আসি',
পাষাণ সম তব মৌন মূরতি মোর বুকে বিষাদের ছায়া কেন ফেলে॥
উন্মন ভিখারি গো বল মোর কাছে
শূন্য হৃদয় তব কোন মন যাচে,
অশ্রু তুষার ঘন বিগ্রহ তব গলিয়া পড়িবে প্রেমে কার মালা পেলে॥
-
ভাবসন্ধান: গানটি টোড়ি রাগে নিবব্ধ। 'যাম-যোজনায়
কড়ি মধ্যম' গীতিআলেখ্যে- এই গানের শুরুতে যাম যোজনায়
টোড়ি
রাগের রাগের ভূমিকা এবং কড়ি মধ্যমের প্রকৃতি
সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। নিচের নজরুলের পাণ্ডুলিপি থেকে এই বিষয়ক পাঠ তুলে ধরা
হলো।
টোড়ি
রাগিণী দ্বিতীয় প্রহরে গীত হয়।
ভৈরবী আশাবরী গান্ধারী প্রভৃতি রাগিনীর পর এই রাগের তীব্র মধ্যম তীব্র সুরে
জানিয়ে দেয় যে, দিনের দ্বিতীয় প্রহর এল। দু' একটী টোড়িতে দুই মধ্যম লাগে।
শুদ্ধ টোড়ির এক 'মা'। আরোহণের সময় এর পা পড়ে বক্র গতিতে। আরোহণের সময় ঋষভ
বা রেখাবে চড়তে এ একটু ইতস্ততঃ করে। অবরোহণের বেলায় কিন্তু ঋষভের গা ঘেঁসে
খেলা করে। টোড়ির খেয়াল শুনুন।
এই গানে টোড়ি রাগের প্রকৃতিকে রূপকতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। দিবা দ্বিতীয়
প্রহরের শুরুর দিকে প্রভাতের যে উদার রূপ প্রকৃতিতে ফুটে উঠে, তারই প্রশান্ত
পরিবেশে রাগটি যেন উদাসী বেশে আত্মপ্রকাশ করে। অবারিত স্নিগ্ধ ছায়া যেন ছড়িয়ে পড়ে।
উদাসী টোড়ির আবির্ভাবে যে স্নিগ্ধ অথচ করুণ রসের সৃষ্টি করে, তা কবিকে গভীরভাবে
স্পর্শ করে। তার পাষাণসম অকরুণ মৌন মূর্তি, কবির হৃদয়ে কেন বিষাদে আচ্ছন্ন করে, কবি
বুঝে উঠতে পারেন না।
টোড়ি যেন ভিখারির বেশে কিছু প্রত্যাশা নিয়ে কবির কাছে আসে। কিসের প্রত্যাশায়,
কবি তা জানেন না।
তুষারের মতো জমাট বেদনা অশ্রু গলে পড়বে কার মালার মতো প্রেমের অর্ঘ পেলে, কবি তা
জানেন না।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে জুন (শনিবার ৮ আষাঢ় ১৩৪৭), সন্ধ্যা
৬.৫৫টায় কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে ''যাম যোজনায় কড়ি মধ্যম '
নামক গীতি-আলেখ্য প্রচারিত হয়। এই গীতি-আলেখ্যে গানটি প্রথম প্রচারিত হয়েছিল।
এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ১ মাস।
- পাণ্ডুলিপির নমুনা
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট । ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ১৫৮৬ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৪৭৫।
- বেতার:
-
যাম যোজনায় কড়ি মধ্যম।
গীতি-আলেখ্য। কলকাতা বেতার কেন্দ্র। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে জুন (শনিবার ৮ আষাঢ় ১৩৪৭),
সান্ধ্য অধিবেশন। ৬.৫৫-৭.৪৪।
সূত্র: বেতার জগৎ। ১১শ বর্ষ ১২শ সংখ্যা। ১৬ জুন, ১৯৪০। পৃষ্ঠা:
৬৫০-৬৫১
-
প্রহর
পরিচারিকা
গীত্ চিত্র। কলকাতা বেতার কেন্দ্র। ১১ অক্টোবর, ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ (শনিবার ২৫ আশ্বিন। ১৩৪৮)। সময়: রাত ৭.৪৫-৮.২৯
সূত্র: বেতার জগৎ। ১২শ বর্ষ ১৯শ সংখ্যা। ১ অক্টোবর, ১৯৪১। পৃষ্ঠা:
১০৫৮
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি ও সঙ্গীত
- সুরাঙ্গ:
খেয়ালাঙ্গ
- রাগ:
টোড়ি
- তাল:
আদ্ধা-কাওয়ালি