বিষয়: নজরুল সঙ্গীত। 
শিরোনাম:
								পাষাণী মেয়ে! আয়, আয় বুকে আয়্
	
		
								পাষাণী মেয়ে! আয়, আয় বুকে আয়্
								জগত জননী হয়ে কি মাগো জননীরে কাঁদায়॥
								রাজার দুলালী কোন অভিমানে
								ভিখারিনী হয়ে বেড়াস শ্মশানে
								ত্রিলোকের যত পতিত অধমে ঠাঁই দিয়েছিস পায়॥
								তোর সোনার বরণ হইয়াছে কালি বলে এসে কত লোকে,
								কুস্বপন দেখে জেগে উঠি প্রাতে ধারা বহে মাগো চোখে 
								– 
								ক্ষীর নবনীর থালা কাছে রাখি
								কাঁদি আর তোর নাম ধরে ডাকি
								তোরে যে মাগো খোঁজে মোর আঁখি প্রতি-রূপ-প্রতিমায়॥
	
	
	- 
	ভাবসন্ধান: মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী 
	' নাটকে বৈতালিকের গান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও- এই গানে পাওয়া যায়- সতীর মায়ের 
	অভিব্যক্তি। দীর্ঘদিন পরে কন্যা শ্বশুর বাড়িতে থাকার পর, কন্যাকে দেখার জন্য 
	মায়ের প্রাণের আকুতি জেগে ওঠে, এই গানে তারই অভিব্যক্তি  পাওয়া যায়। 
	অপত্যস্নেহে মায়ের আকুতিতে পাওয়া যায় চিরন্তন মাতৃরূপে প্রতিচ্ছবি।
 
 দীর্ঘ দিন মাকে  না দেখে থাকার মনোবেদনায়- মায়ের স্নেহধন্য কপট গঞ্জনায় সতী 
	সম্বোধিতা হয়েছেন 'পাষাণী মেয়ে' বিশেষণে। পরক্ষণেই দুহাত বাড়িয়ে কন্যাকে সাদরে 
	কাছে টেনে নিতে নিতে বলছেন- আয়, আয় বুকে আয়্। আদ্যশক্তি জগজ্জননী রূপী সতীকে 
	ভর্ৎসনা করে তাঁর মা যেন অভিমানিনীর সুরে বলছেন- 
								জগত-জননী হয়ে কিভাবে তাঁর জন্মদায়িনী জননীকে ভুলে 
	থেকে কাঁদায় সে।
 
 পিতা দক্ষের ঘরে সতী ছিলেন
								রাজার দুলালীর আদর-সোহাগে। মায়ের আক্ষেপ তাঁর এই 
	মেয়ে এখন মহাদেবের সাথে ভিখারিনী হয়ে শ্মশানে শ্মশানে ঘুরে বেড়ায়। আর ত্রিলোকের 
	যত পাপী পতিত জনের আশ্রয়স্থাল হয়েছে তার পদতল। লোকমুখে শুনে তাঁর মা কাতর কণ্ঠে 
	অনুযোগ করে বলছেন-  কালীরূপিণী সতীর কালো রূপের কথা। যেন  শ্মশানে 
	শ্মশানে ঘুরে বেড়ানোর জন্যই সতীর সোনার-বরণ দেহ কালো হয়েছে। নানা রকম দুঃস্বপ্ন 
	দেখেন তাঁর মা। অপত্য-অন্ধস্নেহে তিনি কন্যার আগমনের প্রতীক্ষা থাকেন 
	উৎকন্ঠ-চিত্তে। তিনি কন্যার জন্য সাজিয়ে রাখেন
								ক্ষীর নবনীর থালা। তিনি কন্যার অমঙ্গল ভাবনায়
								কাঁদেন আর তাঁর নাম ধরে ডাকেন। তাঁর আঁখি চারিদিক 
	খুঁজে ফেরে কন্যার প্রতি-রূপ সকল প্রতিমায়।
 
- 
	রচনাকাল ও স্থান: গানটির 
		রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪),
		মন্মথ রায়ের রচিত 'সতী'  নাটক  
নাট্যনিকেতন 
	নামক রঙ্গালয়ে মঞ্চস্থ হয়।  এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৭ বৎসর 
	১১ মাস। 
 
- মঞ্চ নাটক: সতী (নাটক)। রচয়িতা 
মন্মথ 
রায় । 
[নাট্যনিকেতন।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪)। চরিত্র: বৈতালিক। শিল্পী: রাধাচরণ ভট্টাচার্য। সুর: নজরুল ইসলাম]
 
- গ্রন্থ: 
	
		- 'সতী 
		' । নাটক। তৃতীয় অঙ্ক। দ্বিতীয় দৃশ্য। বৈতালিক দলের গান। মন্মথ রায়  নাট্য 
		গ্রন্থাবলী। ষষ্ঠ খণ্ড। মনমথন প্রকাশন। ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ (১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ)। 
		পৃষ্ঠা: ২৫৩
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইন্সটিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১১। গান সংখ্যা 
		১৯৯২। 
 
- সুরকার: 
	
	নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দধর্ম। শাক্ত। সতীর প্রতি 
		মাতৃস্নেহ।