বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম
:
খুশি লয়ে
খুশরোজের আয় খেয়ালি খুশ্-নসীব
খুশি লয়ে
খুশরোজের আয় খেয়ালি খুশ্-নসীব।
জ্বাল্ দেয়ালি শবেরাতের জ্বাল রে তাজা প্রাণ-প্রদীপ
॥
আন্ নয়া দীনী ফরমান
দরাজ দিলের দৃপ্ত গান,
প্রাণ পেয়ে আজ গোরস্থান তোর ডাকে জাগুক নকীব॥
আন্ মহিমা হজরতের শক্তি আন্ শেরে খোদার,
কুরবানী আন্ কারবালার আন্ রহম মা ফাতেমার,
আন্ উমরের শৌর্য বল সিদ্দিকের আন্ সাচ্চা মন,
হাসান হোসনের সে ত্যাগ শহীদানের মৃত্যুপণ,
রোজ হাসরে করবেন পার মেহেরবান খোদার হাবিব॥
খোৎবা পড়বি মসজিদে তুই খতিব নূতন ভাষায়,
শুষ্ক মালঞ্চের বুকে ফুল ফুটাবি ভোর হাওয়ায়,
এস্মে-আজম এনে মৃত মুসলিমে তুই কর সজীব॥
- ভাবসন্ধান: খুশরোজের (আনন্দের দিন) আনন্দ ও খুশ-নসীব (সৌভাগ্য)
মুসলিম সম্প্রদায়কে আহ্বান করা হয়েছে এই গানে। ইসলামের মহৎ আচারানুষ্ঠান এবং
মহান ব্যক্তিবর্গের মহত্তম গুণাবলির দ্বারা মুসলমানরা মহিয়ান হয়ে উঠুক কবি এই
কামনা ব্যক্ত করেছেন এই গানের মাধ্যমে। এই অর্থে গানটি মুসলিম জাগরণের গান।
কবি পুরাতনকে বিসর্জন দিয়ে নতুন ও উদার (দরাজ দিলের) ধর্মীয় বিধানের (দীনী
ফরমান) দৃপ্ত নবতর সঙ্গীত আনার কথা বলছেন। এর মাধ্যমে যেন গোরস্থানও (মৃতপ্রায়
বা নিষ্ক্রিয় সমাজ) কবির ডাকে সজীব হয়ে ওঠুক, জেগে উঠুক নবযুগের নব ঘোষক।
মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে কবির একান্ত অনুরোধ, যেন তা#দের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হোক হযরতের (মুহাম্মদ সাঃ) মহিমা ও শক্তি।
কবির কামনা জেগে উঠুক শেরে খোদার (হযরত আলী রাঃ)
বীরত্ব। কুরবানী আত্মত্যাগ, কারবালার ত্যাগ মনে জাগ্রত হোক, হজরত ফাতেমা
রাঃ রহম (দয়া) মহিমান্বিত করুক সবাইকে। তিনি চান মুসলমানরা উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠুক
উমরের (হযরত উমর রাঃ) শৌর্য ও বলের মহিমায়, সিদ্দিকের (হযরত আবু বকর রাঃ) সত্য
চরিত্র
ও সত্যবাদী মনের অনুপ্রেরণা। ধর্মের জন্য হাসান রাঃ ও হোসন রাঃ আত্মত্যাগ
করেছিলেন, সেই ত্যাগী শহিদানের মৃত্যুপণে মুসলমানরা আবার জেগে উঠুক। এ সকল
গুণাবলির কারণেই খোদার হাবিব (হজরত মুহম্মদ সাঃ) রোজ হাশরে (বিচার দিনে) তাঁর
উম্মতদেরকে রক্ষা
করবেন।
কবির প্রত্যাশা, ইসলামের নবতর যুগে মসজিদে খতিব নতুন ভাষায় খোৎবা (বক্তব্য) পাঠ
করবেন। তিনি সমাজের শুষ্ক মালঞ্চে (নির্জীব উদ্যানরূপী সমাজ) নবতর ভাবনার সুবাতাস ফুল ফোটাবে।
এরই মাধ্যমে এস্মে-আজম (আল্লাহর মহানাম, মহাশক্তি) মৃতপ্রায় মুসলিম
সমাজকে আবার সজীব করে তুলবে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
জয়তী পত্রিকার 'মাঘ ১৩৩৮' সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩২ বৎসর ৮ মাস।
- পত্রিকা: জয়তী [মাঘ-চৈত্র ১৩৩৮ (জানুয়ারি- মে ১৯৩১)
- রেকর্ড:
এইচএমভি
[সেপ্টেম্বর ১৯৩২ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৩৯)। এন
৭০২৭। শিল্পী:
কাশেম মল্লিক]
- গ্রন্থ:
-
জুলফিকার
- প্রথম সংস্করণ। ১৫ অক্টোবর ১৯৩২
(শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯)। জুলফিকার-২। কাফি-কার্ফা
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৪, মে ২০০৭, জুলফিকার।
৩ সংখ্যক গান। কাফি-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ২৯১।]
- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট।
তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান সংখ্যা ৬০৪]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
আহসান মুর্শেদ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, সাতাশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক, ১৪১২/অক্টোবর
২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] ১৩ সংখ্যক গান
[নমুনা]
- সুরকার:
কমল
দাশগুপ্ত
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম। জাগরণ
- সুরাঙ্গ: গজল
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: সা