বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: কাঁদবো না আর শচীদুলাল তোমায় ডেকে ডেকে 
	
		
কাঁদবো না আর শচীদুলাল তোমায় ডেকে ডেকে
                                        
	মোরা কাঁদবো না ─
(প্রিয়) তুমি গেছ চলে তোমার প্রেম গিয়েছ রেখে
                                        
	তাই কাঁদব না॥
            ত্যাগ যেখানে 
	প্রেম যেখানে
            তোমার মধু-রূপ 
	সেখানে
ওগো জগন্নাথের দেউল তোমায় রাখবে কোথায় ঢেকে॥
হল বৈরাগিনী ধরা তোমার চরণ ধূলি মেখে
তোমার মন্ত্র নিল অসীম আকাশ চাঁদের তিলক এঁকে।
            সুন্দর যা কিছু 
	হেরি
            ওগো রূপ সে 
	শচী-নন্দনেরি
তোমার ডাক শুনি যে আজো হৃদয়পুরীর সাগর থেকে।
তোমার ডাক শুনি যে ওহে প্রিয়
ডাক শুনি যে আজো হৃদয়পুরীর সাগর থেকে॥
		
	
	- ভাবসন্ধান: বৈষ্ণবদের মতে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীচৈতন্য রূপে আবির্ভূত 
	হয়েছিলেন নদীয়ায়। তিনি জন্মেছিলেন শচী দেবীর গর্ভে। তাঁর আদুরে সন্তান বলে তাঁকে শচীদুলাল 
	নামে অভিহিত করা হয়েছে। 
	তাঁর চলে যাওয়ার পর ভক্তদের মধ্যে যে হাহাকার উঠছিল, তা প্রশমিত করার জন্য আত্ম-প্রবোধের 
	আঙ্গিকে কবি এই গানটি উপস্থাপন করেছেন। কবি মনে করেন- শ্রীচৈতন্য চলে গেছেন, কিন্তু 
	তিনি তাঁর প্রেম 
	রেখে গেছেন ভক্তদের মনে।  সেই প্রেমের মহিমা স্মরণ করে- তাঁরা আর কাঁদবেন না। তাঁর তাঁর চলে যাওয়ায় 
	ব্যথিত কবি তাঁর আত্ম-সান্ত্বনা হিসেবে ত্যাগের মহিমা তুলে ধরে বলছেন- ত্যাগ 
	যেখানে, প্রেমও সেখানে। আর প্রেম যেখানে  শ্রীচৈতন্যও সেখানে। তিনি মনে 
	করেন- জগন্নাথ তথা বিষ্ণুর মন্দিরে কোথায় তাঁর এই প্রেম-মহিমা ঢেকে রাখা সম্ভব  
	নয়।
 
 তাঁর অবর্তমানে কবি প্রকৃতির নানা উপকরণে মধ্যে তাঁর উপস্থিতি অনুভব করেছেন। 
	রূপকল্পের মধ্যে তিনি অনুভব করেছেন- যেন পৃথিবী তাঁর অবর্তমানে তাঁরই পায়ের ধূলি 
	মেখে বৈরাগিণী হয়ে গেছে। অসীম আকাশ তাঁরই মন্ত্র গ্রহণ করে, তার কপালে এঁকেছে 
	চাঁদের তিলক। যা কিছু সুন্দর, কবি তার সব কিছুর ভিতরে শ্রীচৈতন্যকে অনুভব 
	করেছেন। তাই কবি তাঁর হৃদসাগর থেকে শ্রীচৈতন্যের প্রেমের আহ্বান শুনতে পান।
 
- রচনাকাল ও স্থান:
		গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
	১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৩) মাসে, এইচএমভি
	রেকর্ড কোম্পানি গানটি প্রথম রেকর্ড করে। 
	এই সময়
	নজরুল ইসলামের 
		বয়স ছিল 
	 ৩৭ বৎসর 
		১ মাস।
 
- 
গ্রন্থ: 
	
		- নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। 
		তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ১৯৭০। গান ৭৮৯] 
 
- 
রেকর্ড: এইচএমভি। [জুন ১৯৩৬
 (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ১৩৪৩)
				এন ৯৭৩৬। শিল্পী: মৃণালকান্তি ঘোষ। সুর: নজরুল ইসলাম]
- বেতার:  শ্রীশ্রী চৈতন্য-লীলা কীর্তন। [৫ মার্চ ১৯৩৯ (রবিবার ২১ ফাল্গুন 
	১৩৪৫)] 
	- সূত্র
	- বেতার জগৎ। ১০ম বর্ষ ৫ম সংখ্যা পৃষ্ঠা: ১৭৯
- The Indian-listener  Vol 
		IV, No.5.  p. 357
 
 
 
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: নিখিলরঞ্জন নাথ 
	[নজরুল 
	সঙ্গীত স্বরলিপি, তেইশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক ১৪০৯ 
নভেম্বর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দ] পঞ্চম গান। 
	[নমুনা]
- পর্যায়: 
	
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম, বৈষ্ণব। শ্রীচৈতন্য। 
		ভক্তি ও প্রেম
- সুরাঙ্গ: ভজন
- তাল: 
		দাদরা
- গ্রহস্বর: গা